ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

আসছে সর্বোচ্চ চার কেজি ওজনের আম

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৭ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৬
আসছে সর্বোচ্চ চার কেজি ওজনের আম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশে প্রচলিত চাষ করা একটি আমের ওজন সর্বোচ্চ প্রায় ৫০০ গ্রাম হয়ে থাকে। আর রাজফজলি জাতের আমের ওজন সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় কেজি হয়।

দেশে চাষ করা একটি আমের সর্বোচ্চ ওজন কতো- এমন প্রশ্নের উত্তরে দুই বছর আগে এ তথ্যগুলোই মিলতো। তবে এ পরিসংখ্যান ভেঙে যোগ হয়েছে, দেশে এখন চাষ করা একটি আমের সর্বোচ্চ ওজন চার থেকে সোয়া চার কেজি।

নতুন এ পরিসংখ্যান বা তথ্যে অনেকেই অবাক বনে যেতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে চার থেকে সোয়া চার কেজি ওজনের আম চাষে সফলতা মিলেছে। সর্ব্বোচ্চ পাঁচ কেজি পর্যন্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।

ব্রুনাইকিং জাতের বিশাল আকৃতির এ আম চাষের সফলতার ইতিহাসটা একটু ভিন্ন। কোনো গবেষক বা কৃষি বিজ্ঞানীর মাধ্যমে নয়, একজন সাধারণ মানুষের মাধ্যমে দেশে এ জাতের আম চাষে সফলতা মিলেছে। অবশ্য পরে কৃষিবিজ্ঞানীদের মাধ্যমে জাতটি সম্পসারণসহ আরও অন্যান্য কাজ শুরু হয়।

প্রাক্তন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শতখালি গ্রামের ইব্রাহিম নামের একজন ব্রুনাই দেশের সুলতানের বাসায় কাজ করতেন। সেই বাসায় পাঁচ থেকে ছয় কেজি ওজনের আম চাষ হতে দেখেন তিনি।

এরপর দেশে এসে আত্মীয়-স্বজনের কাছে গল্প করেন। তার গল্প শুনে আতিয়ার রহমান নামের একজন কয়েকটি ডাল নিয়ে আসতে বলেন। পরবর্তীতে দেশে আসার সময়ে তিনি আত্মীয়ের কথা মতো কয়েকটি ডাল নিয়ে আসেন। সেই ডাল কলম তৈরি করে আমের জাতটি চাষ শুরু করেন আতিয়ার রহমান। এতে সফলতাও মেলে।

দুই বছর আগে প্রথম সেই কলমের গাছে তিনটি আম ধরে। পরের বছরে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতে। আর এব‍ার চলতি বছরে ধরেছে প্রায় ১৫টি।

এদিকে মাগুরা জেলা হর্টিকালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে এ জাতের আমগাছ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। এতে সফলতা মিললে দেশব্যাপী এ জাতের আম চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

মাগুরা জেলা হর্টিকালচার কৃষিকর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, গত বছর একেকটি আমের ওজন চার কেজি পর্যন্ত হয়েছিল। এবার পাঁচ কেজির কাছাকাছি যাবে।

বাণিজ্যিকভাবে এর ভালো সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এ আম দিয়ে ম্যাংগো জুস তৈরি করলে ভালো সফলতা পাওয়া যাবে। এছাড়া মিষ্টতা কম থাকায় ডায়েবেটিস রোগীরাও খেতে পারেন।

কলমের চারা গাছে দুই বছর থেকে ফল ধরা শুরু হয়। এ পর্যন্ত তিন থেকে চারশ' চারা বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে। এ মৌসুমে আরও দুশ' চারা যাবে। গাছের পরিপূর্ণ বয়সে ৩০ থেকে ৩৫টি আম ধরবে। সাত থেকে আট ফুট উচ্চতার এ আম চাষেও তেমন কোনো সমস্যা হবে না।

ব্রুনাইকিং জাতের উৎস ব্রুনাই, বৈশিষ্ট্য- নাবী জাত, আকার লম্বাকৃতি, গড় ওজন পরিপক্ক অবস্থায় চার থেকে পাঁচ কেজি, মিষ্টতা ২১ শতাংশ, শাঁস হলুদ, বোটা শক্ত, আঁশবিহীন, পাকার সময়ে আগস্ট মাস, খোসা পাতলা ও আটি ছোট।

সাত থেকে আট ফুট উচ্চতার ব্রুনাই কিং জাতের আম চাষ আমাদের দেশে আবহাওয়ার উপযোগী। রোগ বালাইয়ের আক্রমণও কম।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৬
একে/এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।