এদিকে যেসব পাইকার বেশি লাভের আশায় ধান-চাল মজুদ করে রেখেছিলেন তারা এখন লোকশান এড়াতে বিক্রি শুরু করেছেন।
অথচ দুই সপ্তাহ আগে পাইকারি চাল ব্যবসায়ী ও মিলাররা লোকসান হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে বাজারে চাল কেনা-বেচা বন্ধ রেখেছিলেন।
ফলে সেই সময় নাটোরে পাইকারি বাজারে কোনো ধরনের চাল কেনা- বেচা হয়নি। শুধুমাত্র সাধারণ ক্রেতা বা ভোক্তাদের কাছে চাল বিক্রি করেছেন খুচরা ব্যবসায়ী বা মুদি দোকানীরা। তবে এবার সমান তালে বাজারে বিক্রি হচ্ছে চিকন ও মোটা চাল।
বুধবার (০৫ জুলাই) নাটোর শহর, সিংড়া ও নলডাঙ্গার বিভিন্ন হাট ও চাল বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহর আর হাট- বাজারের চালের মূল্য কেজিতে এক থেকে দুই টাকা কম-বেশি রয়েছে। তবে এসব স্থানে চিকন চাল কেজিতে দুই টাকা আর মোটা চালের দাম তিন টাকা কমেছে। কোনো কোনো চালের দাম অপরিবর্তিতও রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজিতে দুই টাকা কমিয়ে জিরাশাইল চাল শহরে ৪৬ টাকা আর গ্রামের হাট-বাজারে ৪৩, পাইজাম কেজিতে তিন টাকা কমিয়ে ৫২ টাকা আর গ্রামের হাট- বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৭ টাকা দরে।
সাটার মিনি আগের মূল্য ৪৬ থেকে কমে ৪৮ টাকা, সাম্পা কাটারি কেজিতে দুই টাকা কমে ৪৬, ব্রি-২৮ জাতের চাল কেজিতে তিন টাকা কমে ৪৩ টাকা, ব্রি-২৯ জাতের চাল ৪১ টাকা, খাটোদশ চাল অপরিবর্তিত মূল্য ৪১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাইকারি বাজার আর মুদি দোকানেও বাজার দর কিছুটা হের-ফের রয়েছে।
অপরদিকে চালের পাশাপাশি ধানের দাম প্রতি মণে কমেছে ৮০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে নলডাঙ্গার হাটে গিয়ে দেখা যায়, জিরাশাইল ধান এক হাজার ত্রিশ টাকা, ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান সাড়ে নয়শো টাকা আর মোটা ধান ৮০০ থেকে ৮৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হাটে আসা ব্রহ্মপুর গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম জানান, গত হাটে তিনি জিরার ধান ১১৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিন দিনের ব্যবধানে আজ মণে ১৪০ কমে বিক্রি করেছেন।
একই কথা জানালেন হাটে আসা কৃষক রফিকুল, সাহানুর, দুলালসহ আরো অনেকে।
ধান ব্যবসায়ী আলম হোসেন ও নজমুল করিম বাংলানিউজকে জানান, ধানের আমদানি কম, দামও কম। গত ১৫দিন ধরে ধানের দাম কমতে শুরু করেছে। আরো দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে নলডাঙ্গার খুচরা চাল ব্যবসায়ী অচেন্ত কুমার কুন্ডু, খোরশেদ আলম ও শহরের কানাইখালি মহল্লার চাল ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ জানান, গত দশ দিনের ব্যবধানে চিকন চাল কেজিতে দুই টাকা আর মোটাচাল তিন টাকা কমেছে। প্রতি মণে কমেছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
পাইকারি চাল ব্যবসায়ী রেকাত আলী বাংলানিউজকে জানান, সরকারে চাল আমদানির সিদ্ধান্তের কারণে আর ধানের দাম কমে যাওয়ায় এখন চালের বাজার নিম্নমুখী।
যারা বেশি দামের আশায় চাল মজুদ করেছিলেন, তারাও বাজারে চাল বিক্রি করছেন। ফলে তিনিও চাল কেনা-বেচা করতে পারছেন।
জেলা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রব খান আলেম চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত আর ধানের দাম কমতে শুরু করায় চালের বাজার কমতে শুরু করেছে।
তাই লোকসান এড়াতে চাল মজুদকারীরা বিক্রি শুরু করেছেন। এজন্য চালের দাম আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে চালের দাম কমতে শুরু করায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে খেটে খাওয়া মানুষেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৭
এসএইচ