ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

পটুয়াখালীতে লবণ সহিষ্ণু পাট চাষে সফলতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
পটুয়াখালীতে লবণ সহিষ্ণু পাট চাষে সফলতা পাঠ নিয়ে ব্যস্ত বৃষকরা

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলকায় চারটি নতুন দেশীয় পাট জাতের চাষে সফলতা পাওয়া গেছে।  এতে করে এ অঞ্চলের কৃষি ও অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন গবেষকরা।

তবে এক্ষেত্রে উপকূলের পতিত লবণাক্ত জমিকে চাষের আওতায় এনে কৃষককে পাটচাষে সম্পৃক্ত করা ও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত জেলাগুলো হল- সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ভোলা, বরগুনা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, চট্রগ্রাম, পটুয়াখালী এবং পিরোজপুর পটুয়াখালীতে প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমি খরিপ-১ মৌসুমে লবণাক্ততার কারনে পতিত পড়ে থাকে।

এসব পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাখিমারা গবেষণা ব্লকে দেশি পাটের লবন সহিষ্ণু চারটি জাতের ওপর পরীক্ষা চালায়।  পরীক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের পতিত জমিতে এ জাতের পাট চাষে পাওয়া গেছে শতভাগ সফলতা।

এ বিষয়ে লবণাক্ত সহিষ্ণু পাটের জাত উদ্ভাবক ড. মাহমুদ আল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাট ও পাট জাতীয় ফসলের কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কতৃক উদ্ভাবিত লবণাক্ত সহিষ্ণু দেশি পাট-৮ জাতের ১৪ডিএস/মিটার এবং ৯ডিএস/মিটার মাত্রার সহনশীল চারটি লাইন উদ্ভাবন করা হয়েছে। কৃষকের জমিতে মাঠ মূল্যায়নের মাধ্যমে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পশ্চিম খাজুরায় ১৩.৪৫ডিএস/মিটার, মম্বি পাড়ায় ১১.৬ ডিএস/মিটার, মিশ্রি পাড়ায় ৮.৩০ ডিএস/মিটার এর সফলতা পাওয়া গেছে।

লবণাক্ত সহিষ্ণু পাটের জাত উদ্ভাবক ড. মাহমুদ আল হোসেন আরো বলেন, কৃষি নির্ভরশীল দেশ হলেও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে প্রতিনিয়ত কমছে কৃষি জমি। আর তাই অর্থনীতির চাকা আরো গতিশীল করতে উপকূলীয় এলাকার সকল পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। ধারাবাহিকতায় লবন সহিষ্ণু পাটজাত এ কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে।

অপরদিকে উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ত জমিতে পাট চাষের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন বিজেআরআই মহা পরিচালক ড. মনজুরুল আলম। তিনি বলেন, স্থায়ীভাবে কৃষকদের লবণাক্ততা সমস্যার সমাধান এবং তাদের পাট চাষে সম্পৃক্ত করা গেলে কৃষি অর্থনীতিতে আসবে গতিশীলতা, কৃষক হবে অর্থিকভাবে স্বাবলম্বী।

এদিকে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে এ জাতের পাট চাষের আগ্রহ থাকলেও দীর্ঘদিন এ অঞ্চলে পাটের আবাদ না হওয়ায় এবং স্থানীয়ভাবে পাটের বাজার না থাকায় উৎপাদিত পাট বিক্রয় নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে।

কুয়াকাটার মিশ্রীপাড়ার কৃষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, বর্ষাকালে আমন চাষের জমি পতিত পড়ে থাকে আর শুকনো মৌসুমে লবণের পরিমান বেড়ে যায়। সেচের সমস্যা হলেও পাট গবেষনার কর্মকর্তাদের কথায় তিন বছর ধরে পাট চাষ করে বেশ ভাল ফলন পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয়ভাবে পাটের বাজার না থাকায় বিক্রি নিয়ে সমস্যা রয়েছে।

বাংলা‌দেশ সময় : ১২৫৮ ঘন্টা, আগষ্ট ১৮, ২০১৭
এমএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।