ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

‘চাঁদপুর গেণ্ডারি’ বেশি ফলায় চাষির মুখে হাসি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
‘চাঁদপুর গেণ্ডারি’ বেশি ফলায় চাষির মুখে হাসি চাঁদপুর গেণ্ডারির আবাদ বেশি, ফলনও বেশি। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলায় আঁখের আবাদ বেড়ে ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। ‘চাঁদপুর গেণ্ডারি’’ নামে সুপরিচিত লম্বা আঁখের আবাদই বেশি হয়েছে এবং এর খুচরা ও পাইকারি বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই।

সরেজমিনে জানা গেছে, ‘অমিতা’ নামে স্থানীয়ভাবে পরিচিত ঈশ্বরদী-১৪ জাতের আখেরও আবাদ করেছেন চাষিরা, তবে চাঁদপুর গেণ্ডারির ফলনই বেশি। ’ সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষকরা আঁখ চাষে বেশি লাভবান হচ্ছেন।

কারণ, তাদের জমিগুলোতে পানি না থাকায় বেশি সময় নিয়ে আঁখ বিক্রি করতে পারছেন।

তাই এ বছর আঁখের ভালো দাম পেতে আশাবাদী কৃষকরা।

ইতোমধ্যেই গ্রাম-গঞ্জের বাজারে খুচরা-পাইকারি বিক্রি হচ্ছে চাঁদপুর গেণ্ডারি। আকারভেদে প্রতিটি আঁখ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে,  জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৮ হেক্টর বেশি জমিতে আঁখের আবাদ হয়েছে। ৫৭৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৫৮৩ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যেই ২০ শতাংশ আঁখ কাটা হয়েছে, আগামী ৩ থেকে ৪ মাস চলবে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার সকদী রামপুর গ্রামের কৃষক আকবর হোসেন ও মদনের গাঁও গ্রামের মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে জানান,, আলু জমিতে থাকায় অবস্থায় আ‍ঁখ লাগিয়েছেন তারা। এ বছর ভালো ফলন পেয়েছেন। এর মধ্যে চাঁদপুর গেণ্ডারিই বেশি। তবে তাদের জমিতে এখনো আঁখ কাটা শুরু হয়নি।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ছোবহানপুর গ্রামের কৃষক কালু খান জানান,  তিনি এ বছর ২ একর জমিতে আঁখের আবাদ করেছেন। তার চাঁদপুর গেণ্ডারি জাতের আঁখও অনেক লম্বা হয়েছে। ঈদ-উল আযহার পরে কাটা শুরু করবেন। ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন বলেও আশাবাদী তিনি।

ফলন ভালো হওয়ায় আঁখের আবাদ আরও বাড়বে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগও।  ছবি: বাংলানিউজএকই এলাকার কৃষক গোফরান গাজী জানান,  তিনি এ বছর আলু আবাদ করে অনেক ক্ষয়-ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। এখনো সার ও বীজের দোকানে বকেয়া রয়েছে। ৬০ শতাংশ জমিতে আঁখের চাষ করেছেন, ফলন ভালো হয়েছে। তার জমিতে চাঁদপুর গেণ্ডারি ও অমিতা- দুই জাতেরই আঁখ রয়েছে। আঁখ বিক্রি করে আলুর আবাদে হওয়া ঋণ পরিশোধে আশাবাদী তিনি।

নানুপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম ও জালাল গাজী বলেন,  ‘চাঁদপুরের আঁখের অধিকাংশই নোয়খালী, লক্ষ্মীপুর ও ঢাকায় বিক্রি হয়। নদী ও সড়কপথে এসব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় কারণে বহু বছর ধরে ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই আমাদের আখ কিনে নিয়ে যান’।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী আহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন,  ‘এ জেলায় চাঁদপুর গেণ্ডারি’ ও ঈশ্বরদী-১৪ জাতের আঁখ দু’টির আবাদ হয়। চাঁদপুর গেণ্ডারির আবাদ বেশি,’ ঈশ্বরদী-১৪ এর আবাদও বাড়াতে কৃষি কর্মকর্তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের তথ্যানুসারে এখনো পুরোপুরি আঁখ কাটা শুরু হয়নি। জেলার মধ্যে আবার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বেশি আঁখের চাষ হয়। এ বছর এ উপজেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে আবাদ করেছেন কৃষকরা’।

‘আঁখের ভালো ফলন হওয়ায় আবাদ আরো বাড়বে বলে আশা করছি। আমরা সব সময় কৃষকদেরকে সব ধরনের আবাদে পরামর্শ দিচ্ছি’।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।