দু’দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির পরেও কৃষকের নিরলস পরিশ্রমে নীলফামারী জেলায় আমন চাষ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এবারও পূরণ হতে যাচ্ছে। বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন ঘুরে দেখা গেছে, আশ্বিন-কার্তিকের মঙ্গা মোকাবেলায় আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াই পুরোদমে শুরু করা কৃষকদের মনে স্বস্তি। কাজ পেয়েছেন কর্মহীন-বেকার কৃষিশ্রমিকেরাও।
কৃষকরা জানান, চারা রোপণের পর পরই জেলাজুড়ে দু’দফা বন্যায় তাদের আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নিজেরাই নতুন ধানের চারা সংগ্রহ করে ফের জমিতে লাগান। সরকারিভাবেও ৬০০ কৃষকের মাঝে চারা বিতরণ করা হয়। পরিচর্যায় এসব আমন ক্ষেতে থোড়, দুধ ধান ও শীষ বের হয়েছে।
কিন্তু সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেতে নেমে আমনের গাছ কেটে সাবাড় করছে ইঁদুর। আক্রমণ করছে নানা জাতের ক্ষতিকর পোকাও। বিশেষ করে নদী অববাহিকা ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় ইঁদুরের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ইঁদুরের হাত থেকে আমনের ক্ষেত বাঁচাতে পলিথিনের ঝাণ্ডা উড়িয়েছেন কৃষকেরা। পাতা মোড়ানো, কারেন্ট ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধ বালতিতে গুলিয়ে মেশিনের সাহায্যে জমিতে স্প্রে করছেন।
কৃষক আমিনুর রহমান জানান, পলিথিনের এসব ঝাণ্ডার পত পত শব্দে ইঁদুর পালিয়ে যায়। তখন কাটাকাটি বন্ধ থাকে।
কৃষি বিভাগ জানায়, আগামী রবি ও খরিপ মৌসুমে কৃষকদের প্রণোদনা দিতে মোট ২ কোটি ২ লাখ ৩৩ হাজার ৬২০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ অর্থে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরও পুনর্বাসন করা হবে।
নীলফামারী কৃষি উন্নয়ন অধিদফতরের উপ-পরিচালক ইদ্রিস আলী জানান, কৃষি বিভাগের সব আয়োজনই চলছে কৃষকদের বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে। বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে প্রায় ৬০০ কৃষককে আমনের চারা দেওয়া হয়েছে। ইঁদুর ও পোকা-মাকড় দমনসহ পরামর্শ ও সহযোগিতায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর