শহরের তুলনায় শিক্ষাগত দিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে গ্রামের নারীরা। তবে গ্রামে বসবাস করা নারীরাও এখন তেমন একটা পিছিয়ে নেই।
গ্রামের এসব নারীরা পরিবারের বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি অনেকেই এখন স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত সবজির ক্ষেতে কাজ করে যাচ্ছেন। সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার প্রত্যয়েই তারা ক্ষেত-খামারসহ পরিবারের যেকোনো কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সবজি চাষি মেহের আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম বাংলানিউজকে জানান, সংসার জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী তিনি। কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ ছাড়া বিকল্প তেমন কোনো উপায় নেই। পরিবারের প্রয়োজনীয় কাজ শেষে স্বামীর সঙ্গে সবজি চাষে নিয়মিতভাবে সহায়তা করেন তিনি। এতে তারা বেশ ভালো আছেন।
সবজি চাষি আরশেদ আলীর স্ত্রী সায়েদা বেগম জানান, সবজি চাষ বেশ লাভজনক। তবে এর উৎপাদন ব্যয়ও কম নয়। সবজি চাষের সময়ে শ্রমিকের বাজারদর চড়া থাকে। এজন্য স্বামীর সঙ্গে সমান তালে সবজি ক্ষেতে কাজ করেন তিনি। নিজেদের দুই বিঘা জমিতে সবজি চাষ করে পরিবারের ব্যয় মিটিয়েও এক ছেলে ও এক মেয়ের পড়াশোনার খরচ অনায়াসে মেটানো যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সবজি চাষি ফটিক মিয়ার স্ত্রী মাজেদা বেগম জানান, পরিবারের কাজ শেষে অনেক সময় অবসরে অপচয় হয়। কাজেই নিজেদের জমিতে সবজি চাষের সময় নিয়মিতভাবে স্বামীকে সহায়তা করেন তিনি। এতে করে সবিজ চাষের উৎপাদন ব্যয়ও কমে আসে। অর্জন হয় অধিক মুনাফা। এছাড়া নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে কোনো লজ্জা নেই। বাড়িতে বসে অলস সময় কাটানোর চেয়ে কাজ করে নিজের পরিবারকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়াটা বড় বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে জানান, অনুকূল আবহাওয়া আর উত্তম পরিচর্যা করায় সবজি চাষে লাভবান মানিকগঞ্জের চাষিরা। জেলার বিভিন্ন এলাকায় নারী-পুরুষ সমানতালে সবজি চাষাবাদে কাজ করে যাচ্ছেন। এতে করে আর্থিকভাবেও তারা লাভবান হচ্ছেন।
চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে সাত হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে। আগামী দিনে যা আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলাতেই সবজির চাষাবাদ হলেও জেলা সদর, সিংগাইর ও সাটুরিয়া উপজেলায় সবজির সবচেয়ে বেশি চাষ হয় বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯,২০১৭
জেডএস