ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

উত্তরে বোরো রোপণে কৃষকের ক্ষতিপূরণের চেষ্টা

মাহিদুল ইসলাম রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
উত্তরে বোরো রোপণে কৃষকের ক্ষতিপূরণের চেষ্টা ধানের চারা তুলছেন কৃষকরা। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: গত কয়েক মাস আগে দিনাজপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্মরণকালের ‘ভয়াবহ’ বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় কৃষক আইনুল ইসলামের। আমন ধান উঠার পর বাজারে বিক্রি করে ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় বন্যার ক্ষতি কিছুটা পূরণ হয় তার।

বর্তমানে চারপাশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বোরো বীজতলার চারা ফসলি জমিতে রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যান্য কৃষকের মতোই বন্যার ক্ষতিপূরণের লক্ষে চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষে চারা রোপণ করছেন কৃষক আইনুল।

 ধানের চারা তুলছেন কৃষকরা।  ছবি: বাংলানিউজরোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে চলতি বোরো মৌসুমের চারা রোপণকালে কথা হয় কৃষক আইনুলের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক মাস আগেই আমনের চারা রোপণ করার পর হঠাৎ ভয়াবহ বন্যা আঘাত করে। নষ্ট হয়ে যায় সদ্য রোপণকৃত আমনের চারা ও ফসলি জমি। বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর ঋণ-মহাজন করে নতুন করে চারা রোপণের মাধ্যমে আমন চাষ করেছি। ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে বন্যার ক্ষতি কিছুটা পূরণ হয়। আমন ধান বিক্রি করে ঋণের কিছু টাকা পরিশোধ করেছি। গত বছরের বন্যায় যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে এবার বোরো ধানের চারা রোপণ করেছি।

প্রতিবছর মতো এবারো আইনুল তার আট বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করছেন। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও কুয়াশায় চলতি মৌসুমের বীজতলার ক্ষতি হয়। বীজতলা রক্ষায় খরচ গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ধান উৎপাদনের মাধ্যমে বন্যার ক্ষতি থেকে কেটে উঠবে।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতার সূত্রে জানায়, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়েছে চলতি বোরো মৌসুমের চারা রোপণ কার্যক্রম। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে চলতি মৌসুমের বোরো চাষের চারা রোপণ কার্যক্রম শেষ হবে। কৃষকরা বোরো বীজতলার চারা ফসলি জমিতে রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।  ছবি: বাংলানিউজএবার জেলার ১৩ উপজেলার ১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার তিন ভাগ জমিতে বোরো চাষের চারা রোপণ করা হয়েছে। এবার বোরো চাষে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টর জমিতে ৪ দশমিক ৭৫ থেকে ৫ মেট্রিক টন ধান। যা জেলার মোট জমির উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৬ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতারের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে না উঠা পর্যন্ত কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাবে কৃষি বিভাগ। চলতি বোরো মৌসুমের চারা রোপণ কার্যক্রম চলছে মাঠজুড়ে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চারা রোপণ কাজ সম্পন্ন হবে। বীজতলা তৈরি, চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান ঘরে তুলা পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতা কৃষকদের করতে সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।

তিনি জানান, এবার জেলার ১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদে সেচ কার্যক্রমে ২ হাজার ৮৫৭টি বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপ, ১৩ হাজার ৪৬৬টি অগভীর নলকূপ, ৬২ হাজার ৬৬৯টি ডিজেল চালিত নলকূপ ও ৩৮৬টি ললিত পাম্প ব্যবহার করা শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।