ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

মুকুলে ছেয়ে গেছে লিচুর রাজ্য দিনাজপুর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৮
মুকুলে ছেয়ে গেছে লিচুর রাজ্য দিনাজপুর মুকুলে ছেয়ে গেছে লিচু গাছ-ছবি-বাংলানিউজ

দিনাজপুর: ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে গাছেরা নিজেদের নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত। প্রতিটি শাখায় বের হতে শুরু করেছে কচি ডগা। আর কচি ডগা ছেদ করে বের হচ্ছে নানা রঙের ফুল। মধু আহরণ করতে ছুটোছুটি শুরু করেছে মৌমাছিরা। 

এই বসন্তে অন্যদের নিজেকে সাজাতে থেমে নেই লিচু গাছও। দেশ জুড়ে লিচুর জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর।

জেলার লিচু গাছের শাখায় শাখায় বের হতে শুরু করেছে মুকুল। গাছের শাখায় শাখায় দুলছে থোকা থোকা মুকুল।

গাছে মুকুলের দেখা পাওয়ায় লিচু চাষি ও বাগানিরা পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গাছে মুকুল ধরে রাখতে গোড়ায় পানি সরবরাহ ও বালাইনাশক প্রয়োগ করছেন তারা।  

দিনাজপুরের লিচু রসে ভরা ও সুস্বাদু হওয়ায় এর কদর দেশসহ বিদেশেও রয়েছে। গত কয়েক মৌসুম থেকে দেশের অনেক এলাকায় কমবেশি লিচু চাষ হলেও মানুষের কাছে দিনাজপুরের লিচুর গ্রহণযোগ্যতাই আলাদা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবারও দিনাজপুরে রেকর্ড পরিমাণ লিচুর ফলন হবে বলে আশা করছেন চাষি ও বাগানিরা।  

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রমতে, ২০০৯ সালে দিনাজপুরে লিচু চাষের জমির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর। ২০১০ সালে তা এসে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৮০ হেক্টরে, ২০১১ সালে ১ হাজার ৯৫৬ হেক্টর, ২০১২ সালে ২ হাজার ৫০০ হেক্টর। এভাবে প্রতি বছর লিচু চাষ বেড়েই চলছে। গত বছর জেলার ২ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হলেও এবার তা বেড়ে ২ হাজার ৭শ’ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।  

দিনাজপুরে চাষ হওয়া লিচুর মধ্যে চায়না থ্রি, বেদেনা, বোম্বাই ও মাদ্রাজি উল্লেখযোগ্য। দিনাজপুরে যেসব স্থানে লিচু চাষ হয় তার মধ্যে বিরলের মাধববাটী ও সদরের মাসিমপুর উল্লেখযোগ্য। বিরল উপজেলার মাধববাটী দিনাজপুর সদর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং মাসিমপুর  সদর উপজেলা থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত।

দিনাজপুর সদর উপজেলার মাসিমপুর এলাকার লিচু চাষি মো. মোকলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, লিচুর বাগানগুলোতে ফুল আসা থেকে লিচু আহরণ পর্যন্ত চাষিদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। ফুল আসার ১৫ দিন আগে এবং ফুল আসার ১৫ দিন পরে সেচ দিতে হয়। সে অনুযায়ী গাছে মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গেই মুকুলকে টিকিয়ে রাখতে স্প্রে করতে শুরু করেছি। এছাড়া মুকুল গাছ থেকে যাতে ঝরে না পড়ে সেজন্য গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি ও সার ব্যবহার করছি। লিচু গাছে মুকুল আসতেই রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার লিচু ব্যবসায়ীরা দিনাজপুরে আসতে শুরু করেছেন। তারা আগাম লিচু বাগান কিনছেন অধিক লাভের আশায়।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদুল ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, মুকুল দেখা দেওয়ার আগ থেকে কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। কোন সময়ে কোন কীটনাশক, বালাইনাশক ব্যবহার করা উচিৎ সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এবছর যে পরিমাণে লিচুর মুকুল এসেছে অনুকূল আবহাওয়া থাকলে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আগামী তিন মাস লিচু চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রেখে তাদের সঠিক পরামর্শ দেবে কৃষি বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৮
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad