টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ কাঁচা-আধাপাকা বোরো ধান। হাজার হাজার বিঘা জমির ধান তলিয়ে যাওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এখন দিশেহারা।
বৃহস্পতিবার (১০ মে) জেলার কয়েকটি মাঠ সরেজমিন ঘুরে এমনই চিত্র দেখা যায়।
কৃষকরা জানান, ধান কাটার মজুরি হিসেবে প্রতি বিঘা ৭ হাজার টাকা আবার তিনবেলা খাবার দিয়েও মিলছে না ধান কাটার কৃষিশ্রমিক। শ্রমিক সংকটে মাঠে হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান পড়ে আছে।
জেলার আত্রাই উপজেলার আমরু কসবা গ্রামের কৃষক মাহাতাব উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ৬ বিঘা বোরো ধান আছে তার। ধান পানির নিচে থাকার কারণে মাত্র ২ বিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন। আধাপাকা ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু ধান পাওয়ার আশায় সেই কাঁচা ধানই কাটতে হচ্ছে।
পানির নিচে ধান তলিয়ে যাওয়ার ফলে খড় পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু ধানের শীষ টুকু কাটতে হচ্ছে। এতে করে এবছর গবাদিপশু পালনে অনেক সমস্যায় পরতে হবে বলেও জানান তিনি।
একই গ্রামের কৃষক মিন্টু মিয়া জানান, টানা বৃষ্টি সর্বনাশ করে দিয়েছে। মাঠে ২ বিঘা জমির কাঁচা ধান বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান কাটা শ্রমিক না পেয়ে নিজেরাই ধান কেটেছি। কিন্তু পানির নিচে ধান থাকায় বেশিরভাগ ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে। বীজ, সার, কীটনাশক এসব মিলে যে টাকা খরচ করে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এবার ধান থেকে তার অর্ধেক টাকাও পাওয়া যাবে না।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বাংলানিউজকে বলেন, থেমে থেমে বৃষ্টি আর ঝড়ের কারণে মাঠের বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব আধাপাকা কাঁচা ধান যদি ৭ দিনের বেশি পানির নিচে থাকে, তাহলে এসব ধান নষ্ট হয়ে যাবে। যা ধান পাওয়া যাবে, সেগুলো ধান থেকে যে চাল আসবে তার মান ভালো হবে না।
তিনি বলেন, জেলায় এবছর এ লাখ ৯১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে জেলার অধিকাংশ বোরো ধান এখন পানির নিচে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৮
জিপি