ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

‘ব্রাহমা’ পালনে আগ্রহ বাড়ছে খামারিদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
‘ব্রাহমা’ পালনে আগ্রহ বাড়ছে খামারিদের গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারি আব্দুর রাজ্জাক। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাটে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘ব্রাহমা’ জাতের গরু পালন। গত চার বছরে জেলার তিনটি উপজেলায় ছয় শতাধিক পারিবার ভিত্তিক গরুর খামার গড়ে উঠেছে। দেশীয় জাতের গরুর তুলনায় দ্রুত বর্ধনশীল ও স্বল্প পূঁজিতে লালন পালন করা যায় বলে ব্রাহমা জাতের গরুর পালনে ঝুঁকছেন চাষিরা।

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশে গো-মাংসের চাহিদা পূরণের লক্ষে ‘বিফ ক্যাটল ডেভলপমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৪ সালে সরকার বিনামূল্যে বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলায় ১২০টি গাভীতে ব্রাহমা জাতের গরুর সিমেন (বীজ) দিয়ে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদন শুরু হয়। এরপর থেকে ওই এলাকার খামারিরা ব্রাহমা জাতের গরু লালন-পালন করে অধিক মুনাফা অর্জন করছে।

মোল্লাহাটের খামারি নজরুল কাজী বাংলানিউজকে বলেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহায়তায় আমার একটি দেশীয় গাভীতে ব্রাহমা জাতের গরুর সিমেন (বীজ) দিয়ে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে একটি যাঁড়ের বাচ্চা জন্ম নেয়। বাচ্চাটি জন্মের সময়ই রিষ্টপুষ্ট হয়। পরে দুই বছর লালন পালনে ১৫ মণ ওজন হয়। আমি ষাঁড়টিকে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করি। এরপর থেকে আমি ব্রাহমা জাতের গরু পালন করি। আমার এখন আরও পাঁচটি ষাঁড় রয়েছে, এগুলো কোরবানিতে বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। যেগুলো ১২ থেকে ১৪ মণ ওজন হবে।

বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া গ্রামের খামারি আব্দুর রাজ্জাক মিঠুন বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমি গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গেল বছরের মার্চ মাসে প্রাণিসম্পদ অফিসের কৃত্রিম প্রজনন সহকারী মো. বাবর আলী আমার দুইটি গাভীতে ব্রাহমা জাতের গরুর সিমেন দেন। পরে দুটি গাভীই দুটি ষাঁড়ের বাচ্চা জন্ম দেয়। এই বাচ্চা দুটি ৪-৫ মাস বয়সে দেশীয় জাতের দুই বছর বয়সী গরুর সমান বড় হয়েছে। আমার বাড়ির পাশেও অনেকে এ জাতের গরু পালন শুরু করেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কৃত্রিম প্রজনন সহকারী মো. বাবর আলী বাংলানিউজকে জানান, ব্রাহমা জাতের গরু দ্রুত বর্ধনশীল ও ব্যবসা সফল একটি জাত। আমরা চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ জাতের গুনাগুন সম্পর্কে সচেতন করি। চাষিরা ব্রাহমা জাতের গরু পালনে সম্মত হলে আমরা বিনামূল্যে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে তাকে এ গরু পালনের ব্যবস্থা করে দেই। গরু পরিচর্যা করছেন এক নারী। ছবি: বাংলানিউজজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাইফুজ্জামান খান বাংলানিউজকে বলেন, গো-মাংসের চাহিদা পূরণের লক্ষে ‘বিফ ক্যাটল ডেভলপমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাটে ব্রাহমা জাতের গরুর পালন শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিমেন (বীজ) সংগ্রহ করে আমরা গাভীতে কৃত্রিম প্রজনের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদন করে এ জাতের সম্প্রসারণের জন্য কাজ করছি। এর প্রতিটি বীজের মূল্য প্রায় ৪০ ডলার, যা খামারিদের আমরা বিনামূল্যে দিয়ে থাকি। এ জাতের পূর্ণ বয়স্ক (দুই থেকে আড়াই বছর) একটি গরুর প্রায় ১২ থেকে ১৬ থেকে মণ ওজনের হয়ে থাকে। দ্রুত বর্ধনশীল ও স্বল্প পূঁজিতে একজন খামারি এ গরুর পালন করতে পারে। তাই খামারিরা ব্রাহমা জাতের গরু পালনে ঝুঁকছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।