ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

লক্ষ্মীপুরে পাকছে সুপারি, উঠছে হাটে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
লক্ষ্মীপুরে পাকছে সুপারি, উঠছে হাটে সুপারি গুনছেন বিক্রেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি উৎপাদনে উপযোগী। এ জনপদের এমন কোনো বাড়ি নেই যে বাড়িতে সুপারি গাছ নেই। এছাড়াও বিশাল-বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে সুপারি বাগান। ওইসব গাছের সুপারি পাকতে শুরু করছে। ক্রয়-বিক্রিয়ের জন্যও উঠছে হাটে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা এসে কিনছেন সুপারি।

শুক্রবার (১০ আগস্ট) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের সবচেয়ে বড় সুপারির হাট দালাল বাজার গিয়ে দেখা যায় সুপারির জমজমাট হাট। স্থানীয়রা বাজারে সুপারি উঠিয়েছেন।

বিক্রেতারা দর-দাম করে কিনছেন। শ্রমিকরা বস্তা ভরছেন। প্রতি পোন (৮০টি) সুপারি বিক্র হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। মৌসুমের শুরুতে সুপারির চাহিদা বেশি থাকায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সুপারি। সুপারি গুনছেন বিক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজখোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা, রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও রামগঞ্জের হাট-বাজারেও চলতি মৌসুমের সুপারি বিক্রি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অর্থকারী ফসল ও সৌন্দর্যের জন্য অনেক বাড়ির আশ-পাশে, প্রবেশ পথে, পুকুরপাড়ে, রাস্তার ধারে সারি-সারি সুপারি গাছ রয়েছে। সুপারি লক্ষ্মীপুরের অর্থকারী ফসলের মধ্যে একটি অন্যতম ফসল। সুপারি চাষ লাভজনক।

স্থানীয়রা জানান, সুপারি পাকতে শুরু করেছে। গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে বেশ দাম পাওয়া যায়। ওই বাজারের বিক্রেতারা জানান, তাজা সুপারির চাহিদা থাকায় দাম বেশি। লক্ষ্মীপুরের সুপারি দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে তারা বিক্রি করেন।

বাগান মালিকরা বাংলানিউজকে জানান, সুপারি উৎপাদনে খরচ কম। একবার গাছ লাগালেই হলো। গাছের তেমন পরিচর্যা করতে হয় না। অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভ। চাহিদা বেশি থাকায় প্রত্যাশিত দামও পাওয়ায় যায়। যে কারণে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সুপারি চাষ বেড়েছে। তবে নদী ভাঙনে রামগতি ও কমলনগরে সুপারির গাছ ও বাগান কমছে। সুপারি গুনছেন বিক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সঠিকভাবে চারা লাগালে ও যত্ন নিলে ছয় থেকে সাত বছরে সুপারির ফলন আসতে শুরু করে। তবে বেশি ফলন ধরে ১০ থেকে ১২ বছরের পর থেকে। সুপারি গাছ ২০ থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। একটি গাছে বছরে ৩ থেকে পাঁচটি ছড়া আসে। গাছে ফুল আসার পর ৯ থেকে ১০ মাস লেগে যায় ফলন পাকতে।   প্রতি ছড়াতে ৫০ থেকে ১৫০টি পর্যন্ত সুপারি থাকে। আগস্ট থেকে সুপারি পাকতে শুরু করে। মার্চ পর্যন্ত সুপারি সংগ্রহ চলে। এতে হেক্টর প্রতি ১ থেকে ৭ মেট্রিক টন পর্যন্ত শুকনো সুপারি পাওয়া যায়।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে চলতি বছর লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমির গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করবে স্থানীয়রা।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খাঁন বাংলানিউজকে বলেন, সুপারি একটি অন্যতম বাণিজ্যিক ফল-ফসল। জেলার প্রতিটি আবাসেই এর দেখা মেলে। অযত্ন অবহেলায় বেড়ে উঠলেও পরিবারের সচ্ছলতার পেছনে এর অবদান অনস্বীকার্য। সুপারি গাছ লাগিয়ে কেবল পারিবারিক চাহিদা পূরণ নয়। বাড়তি আয়ের জন্য করা হয়। সুপারি চাষ, পরিচর্যা, ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
এসআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।