ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

মাঠে বসেই পাওয়া যাচ্ছে ‘ডিজিটাল কৃষি সেবা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
মাঠে বসেই পাওয়া যাচ্ছে ‘ডিজিটাল কৃষি সেবা’ কৃষকদের ডিজিটাল কৃষি সেবা দিচ্ছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: সাদ্দাম হোসেন।

কুষ্টিয়া: ফসলের চাষাবাদ করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয় চাষিদের। অনেক সময় হাতের নাগালে সেবা না পাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির শিকারও হতে হয়।

এজন্য কৃষকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও কৃষকের দোরগোড়ায় কৃষি সেবা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষির সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে সাধারণ কৃষকদের সেবা দিয়ে আস্থা অর্জন করেছে এ অফিসের কর্মকর্তারা।

জানা যায়, কৃষকদের মধ্যে তাৎক্ষণিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্রচারণা চালায়। এতে কৃষি সংক্রান্ত সব তথ্য খুব সহজেই কৃষকদের মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। সেই সঙ্গে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উপজেলা এবং ইউনিয়ন কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত কৃষকদের ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের শাহাপুর মাঠে দেখা যায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাদ্দাম হোসেন বেশ কয়েকজন কৃষককে ডিজিটাল ট্যাবের মাধ্যমে কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। সেখানে তিনি বোরো ধানের জমিতে যাতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ না হয় ও হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে এবং তার প্রতিকার কি সে সম্পর্কে কৃষকদের আগাম সতর্কতা দিচ্ছেন। এছাড়া কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে ফসল ব্যবস্থাপনা, রোগ, পোকা-মাকড় সম্পর্কেও ধারণা দিচ্ছেন তিনি। কৃষক মাঠে বসেই কৃষি সেবা নিচ্ছেন।  ছবি: কুষ্টিয়ার মিরপুর থেকে তুলেছেন জাহিদ হাসান। মাঠে বসেই ডিজিটাল অ্যাপসের মাধ্যমে নিজের ধানের জমিতে কোনো রোগ দেখা দিয়েছে কি না তা মিলিয়ে দেখছেন শাহাপুর এলাকার কৃষক খাইরুল মালিথা।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মোবাইলে কিভাবে ধানের চাষ, পোকা লেগেছে কি না, রোগ হয়েছে কি না তা আজকে নিজে হাতে দেখলাম। এই ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার এ মোবাইলের মাধ্যমে আমাদের শেখালেন ধানে কোন সময় কি দিতে হবে এবং ব্লাস্ট রোগ হওয়ার আগে আমাদের কি কি করতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেন।

আরেক কৃষক সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। তাই আমরাও এখন ডিজিটাল। কৃষি অফিসের লোকজন মাঠে এসেই  আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরাও আমাদের যেকোনো অসুবিধা হলেই কৃষি অফিসে ফোন দিয়ে সমাধান পাই।

কৃষক মনোয়ার মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, আমার বেগুনের জমিতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিলো। আমি কৃষি অফিসে গিয়ে তাদের বিষয়টি বলি, তারপর তাদের পরামর্শ নিয়ে ভালো উপকার পেয়েছি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাদ্দাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন ফসল চাষের ক্ষেত্রে কৃষকদের যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে আমরা চেষ্টা করি তাৎক্ষণিক সেটার সমাধান করার। নিরাপদ উপায়ে এবং আধুনিক চাষাবাদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। কৃষি বিভাগ বর্তমানে কৃষকদের দোড়গোড়ায় কৃষি সেবা পৌঁছে দিতে জোর দিয়েছে। কৃষি কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে আমরা কৃষকের কাছে সেবা পৌঁছে দিচ্ছি।  

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, মিরপুর উপজেলায় ২৩টি ডিজিটাল ট্যাবে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে এবং উপজেলার সব উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে সর্বাক্ষণিক কৃষি সেবা নিশ্চিত করছি। এছাড়াও কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্রের মাধ্যমে আমরা সেবা দিচ্ছি।

তিনি আরও জানান, বতর্মানে অনেক কৃষক স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। আমরা তাদের কাছে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন অ্যাপস পৌঁছে দিচ্ছি সেই সঙ্গে ফেসবুক পেজের মাধ্যমেও কাজ করে যাচ্ছি। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং মাঠে গিয়ে তাদের সেবা দেওয়ার দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। উপজেলায় কর্মরত প্রতিটি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাসহ সবাই মাঠে গিয়ে হাতে কলমেও কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।