ধামরাই (ঢাকা): বাজারে সবজির দাম আগুন। বন্যা পরবর্তী সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছে ধামরাইয়ের চাষিরা।
সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সবজি চাষিরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার শীতকালীন সবজি চাষ বেশি হবে ধামরাই উপজেলার ফসলি মাঠে। আর এসব সবজি বিক্রি হবে রাজধানী ঢাকার কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে।
ধামরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২০৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সারা গ্রাম জুড়ে শুধুই সবজির আবাদ। খামার-খেতে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণীরা। এখানকার সবজি চাষিরা জানান, তারা বরাবরই শাক-সবজি চাষ করে আসছেন, এতে তারা সফলও।
ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের ফুকুটিয়া এলাকায় ফসলি জমিতে গিয়ে কথা হয় চাষি মান্নানের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছরই শীতের আগাম সবজি চাষ করি। এ বছর ১০ কাঠা জমিতে নানা জাতের সবজি চারা রোপণ করেছি। তবে এবার বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় আগাম সবজি চাষ করতে পারিনি। কিন্তু এখন আবহাওয়া ভালো থাকায় বিষ ও কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষে মাঠে নিয়মিত পরিচর্যা করছি।
তিনি আরও বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে জমিতে পাতাকপি, ফুলকপি, টমেটো ও মূলার বীজ ও চারা রোপণ করেছি। এসব সবজি ক্ষেতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করেছি। আর ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে কীটনাশক ব্যবহার না করে জৈব বালাইনাশক ও সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করছি।
মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, এবার বন্যা আমাদের চাষাবাদের সময়ের ক্ষতি করেছে। তবে জমির জন্য বন্যা একদিক দিয়ে লাভও করেছে। বন্যার কারণে জমির মাটির গুনাগুণ ঠিক থাকে। এমনিতেই আমরা চাষিরা সবজিতে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করি না। প্রাকৃতিক জৈব সারের মাধ্যমে চাষাবাদ করে থাকি সবজির ফলনও ভালো পাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাষিরা বিভিন্ন সবজির বীজ কিনে এনে জমির কিছু অংশে একটি সেড তৈরি করে বীজ রোপণ করি সেখান থেকে চারা হলে ফসলি জমিতে রোপণ করে থাকি। এ বছর ৩০ হাজার টাকা খরচ করে বিভিন্ন শীতকালের সবজিতে চাষ করেছি। আশাকরি এবার ন্যায দাম পেলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো।
ধামরাইয়ের আরেক ইউনিয়ন রোয়াইলের নিরাপদ সবজি চাষি সামচুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার জমিতে আগে লাল শাক ও মূলার আগাম চাষ করেছি। এখন উঠিয়ে আবারও সেই জমিতে শীতের সবজি চাষ শুরু করেছি। এখন ১৪ কাঠা জমিতে ফুলকপি, পাতাকপি ও টোমেটো লাগিয়েছি। এবার আবহাওয়াটাও ভালো যাচ্ছে। কোনো দুর্যোগ না আসলে আশাকরি লাভবান হবো।
ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত মনিটরিংয়ে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। আর এই আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকের মুনাফাও বেড়েছে আগের থেকে অনেক বেশি। এবার আশানুরূপ ফসল পাবে কৃষকেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২০
এনটি