ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেলেন রমেশ চন্দ্র ঘোষ

মো. জাহিদ হাসান জিহাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেলেন রমেশ চন্দ্র ঘোষ বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেলেন রমেশ চন্দ্র ঘোষ। ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া:  কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পেলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ।  

রোববার (২৭ জুন) মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এ মহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৪ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কৃষিক্ষেত্রে অবদান রাখায় মোট ১০টি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

শিক্ষা জীবনে রমেশ চন্দ্র ঘোষ সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি, পরে কলারোয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ২০০৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগ থেকে তিনি এমএস ডিগ্রি লাভ করেন।

চাকরি জীবনে বিসিএস (কৃষি)-২৯ তম ক্যাডার হিসেবে ২০১১ সালে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। পরে দেড় বছরের মাথায় বদলি হয়ে যোগদান করেন খুলনার দৌলতপুর মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসে। সেখান থেকে পদোন্নতি পেয়ে ২০১৫ সালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।

রমেশ চন্দ্র ঘোষ সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের দেয়াড়া গ্রামের রাধাপদ ঘোষ এবং স্মৃতি রানী ঘোষের সন্তান। পারিবারিক জীবনে রমেশ চন্দ্র ঘোষ দুই কন্যা সন্তানের জনক। তার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, কন্যাসহ মোট ১৪ জন সদস্য রয়েছে।

জানা যায়, কৃষক সংগঠন তৈরি, ফলবাগান সৃজন, নিরাপদ ফসল ও সবজি উৎপাদন, কৃষি যান্তিকীকরণ, জৈবসার উৎপাদন, ইঁদুর নিধন, কৃষি বাতায়নের সহায়তায় মিরপুর উপজেলায় কৃষি উন্নয়নে রমেশ চন্দ্র ঘোষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

তার উদ্যোগে মিরপুর উপজেলায় ৫৩৬টি কৃষক সংগঠন, ১টি কৃষি পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। কৃষি বাতায়নে মিরপুর উপজেলার ৫০ হাজার ৮৩০ জন কৃষকের তথ্য দিয়েছেন তিনি। বোরো মৌসুমে মিরপুর উপজেলার ১৭ হাজার কৃষককে ধানের ব্লাস্ট রোগ সংশ্লিষ্ট সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন। তার কর্মতৎপরতায় মিরপুর উপজেলায় ২৪২টি ফল বাগান, ২০ হাজার তালবীজ রোপণ, ৩ হাজার ৮শ হেক্টর শস্যের বহুমুখীকরণ, ৫৭২০ পিট জৈব সার উৎপাদন, ২ হাজার ৭শ হেক্টর ধৈঞ্চা চাষ, ২১৫টি কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ, আমন ধানের ক্ষেতে শতভাগ পার্চিং, সবজি ক্ষেতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন এবং ১ লাখ ২১ হাজার ৫শ ৩৪টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে।

এছাড়া রমেশ চন্দ্র ঘোষ তামাক প্রবণ এলাকার কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করে বিকল্প ফসল হিসেবে বারি মসুর-৬, বারি সরিষা-১৪, বিনা সরিষা-৯, বারিগম-৩০ ও হাইব্রিড ভুট্টা চাষের জমি সম্প্রসারণ করেছেন।  

এছাড়া উঠান বৈঠক, মাঠ দিবস, কৃষক সমাবেশ, কৃষি বায়োস্কোপ ইত্যাদির মাধ্যমে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে এনেছেন।
টেকসই কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষকে ‘বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ১৪২৪’ এর ব্রোঞ্জপদক প্রদান করে সরকার।

রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, আমি চাই কৃষকের উন্নয়ন, কৃষির উন্নয়ন। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন করে কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়ন ঘটানোর চেষ্টা করি। আগামীতেও এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।