ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

আখলাকুল হোসাইন আহমেদ স্মৃতি গ্রন্থগারের যাত্রা শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২১
আখলাকুল হোসাইন আহমেদ স্মৃতি গ্রন্থগারের যাত্রা শুরু

ঢাকা: আলোচনা সভা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করলো গণপরিষদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ স্মৃতি গ্রন্থাগার।

রোববার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে দুুপুর অবধি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জুমের মাধ্যমে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বক্তারা যুক্ত হন। এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অন্তত দেড় শতাধিক মানুষ যুক্ত ছিলেন।

গ্রন্থাগারের উদ্বোধন করে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, বর্তমানে ইন্টারনেটের সঙ্গে অনেকেই যুক্ত। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ইন্টারনেটের মাধ্যমে আরও বেশি কাজ করছেন। আমি নিজেও ইন্টারেনেটের সুবিধাভোগী। ইন্টারনেটের অবাধ বিস্তার আছে বলে যে লাইব্রেরির আবেদন শেষ হয়ে যাবে তা নয়। পশ্চিমাদেশগুলোতেও কিন্তু প্রতিনিয়ত বই প্রকাশ হচ্ছে, বিপণন হচ্ছে এবং সংরক্ষণ হচ্ছে। ইন্টারনেটের ব্যবহার কিছুটা কমিয়ে লাইব্রেরিমুখী হতে হবে। ইন্টারনেটকে চ্যালেঞ্জ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষের কাছে বই পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকদেরও লাইব্রেরিমুখী হওয়া দরকার। শিক্ষকরা লাইব্রেরিতে গেলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহী হয়।

তিনি আরও বলেন, আজকাল দেখি শিক্ষকদের পড়ার অভ্যাস নেই। অনেকে মনে করেন বই পড়ে চাকরি পেয়ে গেলে আর বুঝি পড়তে হয় না। ব্যাপারটা তা নয়। নিজে সমৃদ্ধ না হলে সুন্দর পাঠদান সম্ভব হয় না। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো শিক্ষকদের পাঠাভ্যাসের বিষয়টি লক্ষ্য করার জন্য। শিক্ষকদের পাঠদান ও পাঠাভ্যাস মনিটরিং করার ব্যবস্থা থাকলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।

লাইব্রেরি সম্পর্কে নির্মলেন্দু গুণ বলেন, লাইব্রেরিতে যে পড়াশোনা জানা মানুষ আসবে তা নয়। এখানে সুন্দর সুন্দর বই আছে। বইয়ের ভেতর ছবি আছে, মানচিত্র আছে। এসব দেখে দেশ ও দেশের বাইরের বিষয় সম্পর্কে জানবে।  

তিনি বলেন, মানুষ তীর্থ স্থানে যান পড়াশোনার জন্য নয় দর্শনের জন্য। লাইব্রেরি দর্শন করেও মানুষ তৃপ্তি লাভ করে, জ্ঞানের পিপাসা মিটায়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফর হাসান বলেন, বই পড়া একটা অভ্যাসের ব্যাপার। এটা দিনকে দিন কমে যাচ্ছে। কেন কমে যাচ্ছে তা চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে। এ দৃষ্টি নন্দন গ্রন্থগারটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ সময় তিনি আখলাকুল হোসাইন আহমেদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরন্তর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করার জন্য সাজ্জাদুল হাসানকে ধন্যবাদ জানান।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্থানীয়ভাবে কাজ করে বৈশ্বিকভাবে চিন্তা করা সহজ ব্যাপার নয়। সাজ্জাদুল হাসান বাবার মতোই কাজটি করে যাচ্ছেন। এই কাজ আরও প্রসারিত হোক। গ্রন্থাগারের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ুক হাওর অঞ্চল তথা দেশে ও বিশ্বে।

গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা সাজ্জাদুল হাসান বলেন, বাবার স্বপ্ন ছিল এলাকায় একটি কলেজ করার। তিনি তা করে যেতে পারেননি। তাই আমি এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলার আদর্শনগরে সরকারি সহায়তায় শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় স্থাপন করেছি। সেই মহাবিদ্যালয়েই লাইব্রেরিটি করা হয়েছে। যার নাম দিয়েছি আখলাকুল হোসাইন আহমেদ স্মৃতি গ্রন্থাগার।

তিনি জানান, লাইব্রেরিটিতে পাঁচ হাজার বই রাখার ব্যবস্থা আছে। ইতোমধ্যে বিষয় ভিত্তিক ১২শ’ বই আছে। একজন লাইব্রেরিয়ান একটি সফটওয়্যার দিয়ে লাইব্রেরির পুরো কার্যক্রম যেন করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কর্নারসহ বিষয় ভিত্তিক কর্নার থেকে বই সংগ্রহ করে সুন্দর পরিবেশে বই পড়ার সুযোগ আছে।
 
শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি ও নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চিন্ময় চক্রবর্তী ও নাজনীন সুলতানা।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২১
ডিএন/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।