ঢাকা : উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা বাংলাদেশে তাদের ৩টি ভিসা অফিসের সব ক’টিই বন্ধ করে দিয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
এখন থেকে বাংলাদেশি ভিসা প্রার্থীদের ভিসা ইস্যু করা হবে সিঙ্গাপুরের কানাডীয় হাইকমিশন থেকে। এজন্য আবেদন করতে হবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটস্থ বেসরকারি সংস্থা ‘ভিএফএস’-এর মাধ্যমে।
কানাডার ভিসা অফিস বন্ধ সংক্রান্ত তথ্য জানতে যোগাযোগ করা হলে হাইকমিশনের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বুধবার বিকেলে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অভিবাসন সংক্রান্ত কানাডার সরকারি দফতর ‘সিটিজেন অ্যান্ড ইমিগ্রেশন কানাডা’ (সিআইসি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মূলত খরচ কমানোর জন্য কানাডা সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ’
শুধু বাংলাদেশ নয়, জার্মানির বার্লিন, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর ও জাপানের টোকিও থেকেও ভিসা অফিস তুলে দেওয়া হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও সিলেটের ভিসা অফিসও গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। ’
তবে যারা ৩০ এপ্রিলের আগে আবেদন করেছেন, তাদের ভিসা বাংলাদেশ থেকেই দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এখন থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ভিসা দেওয়া হবে সিঙ্গাপুরের কানাডীয় হাইকমিশন থেকে।
হাইকমিশনের ওই কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশি আবেদনকারীদের ‘ভিএফএস’ নামের ভিসা প্রসেসিং এজেন্টের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
আবেদনকারীদের ভিসা আবেদন ভিএফএস সিঙ্গাপুরের কানাডা হাইকমিশনে পাঠানোর পর সেখানকার ভিসা অফিসাররা ভিসার সিদ্ধান্ত নেবেন।
নতুন এ প্রক্রিয়ায় ভিসা আবেদনকারীদের ভিসা পেতে কোনো ‘প্রতিবন্ধকতা’ হবে না বলেও হাইকমিশনের দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তা বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন।
ভিজিটর, স্টুডেন্ট, ওয়ার্কার ও পার্মানেন্ট রেসিডেন্টের ভিসা আবেদন শুধু ভিএফএসে জমা দেওয়া যাবে।
পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসার মধ্যে যারা শুধু কানাডায় ফিরে যাওয়ার জন্য ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ নেবেন তারাই এখানে আবেদন করতে পারবেন।
ভিসার এই ক্যাটাগরি ছাড়া পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসা, ফেডারেল অ্যান্ড কুইবেক স্কিলড ওয়ার্কার্স প্রোগ্রাম, ফেডারেল ইনভেস্টরস প্রোগ্রাম, প্রোভিনসিয়াল নমিনি প্রোগ্রাম এবং কানাডা এক্সপেরিয়েন্স ক্লাস ভিসার আবেদনকারীদের সরাসরি কানাডার নোভা স্কশিয়ার ‘সেন্ট্রালাইজড ইনটেক অফিস’-এর ঠিকানায় চিঠি আকারে পাঠাতে হবে।
এছাড়া স্পন্সরশিপ ভিসার আবেদনকারীদের আবেদন কানাডার অন্টারিওর মিসিসওয়াগের ‘কেস প্রসেসিং সেন্টার’-এ পাঠাতে হবে।
সেল্ফ এমপ্লয়েড ভিসা ও কুইবেক সিলেটটেড বিজনেস ভিসার আবেদনও অন্টারিওর এ অফিসে পাঠাতে বলা হয়েছে।
কানাডার এসব অফিসে আবেদনকারীদের আবেদন প্রাথমিক বাছাইয়ের পর সিঙ্গাপুরের ভিসা অফিসে পাঠানো হবে বলে কানাডা হাইকমিশনের ওই কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘ভিএফএসের মাধ্যমে আবেদনকারীদের আবেদনও সরাসরি ঢাকার কানাডা হাইকমিশনের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে যাবে। ’
তিনি বলেন, ‘তবে এর মধ্যে যদি কারো সাক্ষাৎকার নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে ভিএফএসের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার নেবে কানাডা হাইকমিশন। ’
ভিএফএসের মাধ্যমে কানাডা ভিসার আবেদনকারীদের আগের মতোই ফিস জমা দিতে হবে।
টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে সিঙ্গেল এন্ট্রির জন্য ফিস ৭৫ ডলার সমপরিমাণ ৬ হাজার টাকা, মাল্টিপল এন্ট্রির জন্য ১৫০ ডলার সমপরিমাণ ১২ হাজার টাকা এবং ফ্যামিলি ভিসার জন্য ৪০০ ডলার সমপরিমাণ ৩২ হাজার টাকা।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ফিস ১৫০ ডলার সমপরিমাণ ১২ হাজার টাকা, স্টাডি পারমিটের জন্য ১২৫ ডলার সমপরিমাণ ১০ হাজার টাকা, টেম্পোরারি রেসিডেন্ট পারমিটের জন্য ২০০ ডলার সমপরিমাণ ১৬ হাজার টাকা এবং পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ডিটারমিনেশনের জন্য ৫০ ডলার সমপরিমাণ ৪ হাজার টাকা ফি জমা দিতে হবে।
ভিসা আবেদন প্রসেসিংয়ের জন্য অবশ্য ‘ভিএফএস’ প্রতি আবেদনকারীর কাছ থেকে ৮৭৫ টাকা অতিরিক্ত নেবে এবং সেখানকার ব্যাংক বুথে টাকা জমা দেওয়ার জন্য আরো ২৩০ টাকা জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময় : ১৮৫৭ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১২
একেআর /সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর