ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

৪০ বছর পরও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই দেখে কষ্ট পাই: মতিন চৌধুরী

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১১
৪০ বছর পরও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই দেখে কষ্ট পাই: মতিন চৌধুরী

ঢাকা: জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও দেশ নিয়ে ভাবছেন আবদুল মতিন চৌধুরী। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে শয্যাশায়ী তিনি।

ব্রেইন হেমারেজের পর থেকে না বলে দিলে নিজে থেকে মনে করতে পারেন না কিছু। তাই রাজনীতি থেকেও দূরে। তবু তার ভাবনা জুড়ে শুধুই দেশ।

আক্ষেপভরা কণ্ঠে বাংলানিউজকে বললেন, ‘স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও রাজপথে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই দেখে কষ্ট পাই। ’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ৬৩/বি সিদ্ধেশ্বরীর নিজ বাসায় বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মতিন চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘সংসার আর রাজনীতি-এ দুইয়ের একটি বেছে নিয়েছিলাম। জীবনের চেয়ে দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করে রাজনীতিকেই প্রাধান্য দিয়েছিলাম। ’

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পরের বছর ’৭২ সালে বিয়ের আসরে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পর তিনি আর দ্বার পরিগ্রহ করেননি।

অসুস্থ হওয়ার পর প্রথমে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নুরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন মতিন চৌধুরী। এরপর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর বর্তমানে বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. দ্বীন মোহাম্মদের অধীনে রয়েছেন।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তার ভাইয়ের ছেলে নুরুজ্জামান চৌধুরী  ফারুক বলেন, ‘চাচা দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ। তাকে আমরাই দেখাশুনা করছি। তিনি এখনো কথায় কথায় দেশ ও মানুষের কথাই টেনে আনেন। ’

চাচার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে নুরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘চাচা আবদুল মতিন চৌধুরী সর্বশেষ ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বস্ত্রমন্ত্রী ছিলেন। অসুস্থ থাকার কারণে ২০০৯ সালের কাউন্সিলের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। ’

১৯৯১ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ’৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর কিছু দিনের জন্য যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন আবদুল মতিন।

দলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থাকায় এমন পদগুলোতে দায়িত্ব পেয়েছেন বলেই মনে করছেন নুরুজ্জামান।  

আবদুল মতিন চৌধুরী ছাত্রজীবনে নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজে মুসলিম লীগের ছাত্র সংগঠনে সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭৯ সালে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আরো তিন দফা সংসদ সদস্য ছিলেন।

১৯৭৮ সালে বিএনপিতে যোগদানের পর প্রথম যুগ্ম-মহাসচিবের পদ পান। ১৯৯০ সালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হন।

এদিকে দীর্ঘদিন দলের পক্ষ থেকে অসুস্থ মতিন চৌধুরী খোঁজ না নিলেও মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ করেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে দেখতে যান।

দলের নেতা খালেদা জিয়াকে কাছে পেয়ে অসুস্থ মতিন চৌধুরী আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন। নিজে অসুস্থ থাকলেও খালেদা জিয়া কি অবস্থায় আছেন, কোথায় থাকেন সে খোঁজও নেন মৃতুপথযাত্রী মতিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।