মিরসরাই (চট্টগ্রাম): মিরসরাই ট্রাজেডির খলনায়ক চালকের আসনে বসা হেলপার মফিজ উদ্দিনের ছবির সন্ধান শেষ পর্যন্ত মিলেছে। বাংলানিউজ প্রতিনিধির নিরলস অনুসন্ধানে ছবিটি সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১১জুলাই মিরসরাইয়ে মর্মান্তিক ট্রাক দুর্ঘটনায় ৪৩ স্কুলছাত্রসহ মোট ৪৫জন নিহত হয়। ঘটনা পরবর্তী সময়ে পুলিশ কর্মকর্তারা ট্রাকটির চালক (হেলাপার) মফিজ উদ্দিনের বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রী রোকেয়া বেগমের কাছে মফিজ উদ্দিনের ছবি চাইলে তার কোনও ছবি নেই বলে তিনি জানান। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্ঘটনার পরপর এর জন্য দায়ী ব্যক্তি হিসেবে হেলপার মফিজের নাম জানাজানি হওয়ার পর বাড়িতে থাকা তার সব ছবি পুড়িয়ে ফেলেন স্ত্রী রোকেয়া বেগম।
এরপর মফিজের ছবি সংগ্রহ করতে শুরু হয় বাংলানিউজের অনুসন্ধান তৎপরতা। খোঁজ নেওয়া হয় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে। ছবিযুক্ত ভোটার তালিকায় অস্পষ্ট ছবি থাকায় মফিজের সঠিক ছবি সনাক্ত করা অনেকটা কষ্টকর হয়ে পড়ে। পরে মিরসরাইয়ের আবুতোরাব এলাকার প্রত্যেকটি স্টুডিওতে খোঁজ নেওয়া হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টুডিও মালিক জানান- কিছুদিন আগে মফিজ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তার স্টুডিওতে একটি ছবি তুলেছিল।
বাংলানিউজ প্রতিনিধি সেই ছবিটি সংগ্রহ করেন। এরপর দুর্ঘটনায় ভাগ্যগুনে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থী ওয়াহিদুল ইসলাম, নয়ন শীল, পলাশ, নাজমুল হুদা, আলমগীর হোসেন, আলী নেওয়াজ উদ্দিন নোমান ও আবুল কাশেমকে ছবিটি দেখালে তারা তা সনাক্ত করে।
তারা দীপ্ত কন্ঠে বলে, এই সেই মফিজের ছবি। যে দুর্ঘটনা কবলিত পিকআপটির চালকের আসনে বসে ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিল।
তারা বলে, মফিজের কারণে আমরা প্রায় অর্ধশত সহপাঠীকে হারিয়েছি। আমরা তার ফাঁসি চাই।
মফিজের মত আর যেন কোনও অদক্ষ হেলপার চালকের আসনে বসতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করে আহত এসব শিশু।
অবশেষে বহুপ্রতিক্ষিত সেই ছবি সংগ্রহ করা সম্ভব হলেও ছবির ওই ব্যক্তিই মফিজ কীনা তা নিশ্চিত হতে বাংলানিউজ প্রতিনিধি সংগ্রহীত ছবিটি মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন নিজামীকে দেখান। চেয়ারম্যানও বলেন, ‘এ ছবিই মফিজের। ’
মধ্যম মায়ানী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সঞ্জীব চক্রবর্তীকে ছবিটি দেখানো হলে তিনিও বলেন, ‘মফিজ আমার আমার ওয়ার্ডের লোক। আমি তাকে ভালো করেই চিনি। ’
বাংলানিউজের সংগ্রহীত ছবিই মফিজের ছবি বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
এরপর মধ্যম মায়ানী ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা হাসান, গিয়াস উদ্দিন, আবু আনসার নিজামীসহ একাধিক ব্যাক্তিকে ছবিটি দেখনো হয়। তারাও ছবিটি মফিজের বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, ১৮ জুলাই, ২০১১