ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

বাংলানিউজকে সোহাগ ও নাজমুল

শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়েই কথা বলবে ছাত্রলীগ

মাজেদুল নয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১১
শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়েই কথা বলবে ছাত্রলীগ

ঢাকা: শিক্ষার্থীদের চাহিদা এবং অধিকারই ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্বের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । এ অভিমত সংগঠনটির নবনির্বাচিত দুই শীর্ষ নেতার।


 
এদের একজন বদিউজ্জামান সোহাগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সভাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগের বাড়ি বাগেরহাটে। অপরজন সিদ্দিকী নাজমুল আলম নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুলের বাড়ি জামালপুরে।

গত ১১ জুলাই বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে ছাত্রলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তারা। দু’জনেই তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তুলনায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তাই বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় ছাত্রসংগঠনের নেতা হিসেবে তাদের ওপর নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশাও অনেক। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারা বলেছেন তাদের পরিকল্পনার কথা। আলোচনা করেছেন ছাত্ররাজনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে।

বর্তমান ছাত্ররাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে মাথা ঘামায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ছাত্ররাজনীতি মানেই আমি জানি ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির যে উত্থান তা ছাত্রদের দাবি দাওয়া থেকেই। আপনার জানেন ছাত্র সমাজের রক্তস্নাত এগারো দফার কথা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২১ বছর পরে, ১১ দফার একটি, বাংলাদেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি পূরণ করেন।   ছাত্রদের প্রতি শেখ হাসিনার কমিটমেন্ট রয়েছে। আমারাও কমিটেড। ছাত্রলীগের অতীত  ইতিহাস রয়েছে ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে কথা বলার। আমরাও সে ধারা অব্যাহত রাখবো। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানের জন্যে আমরা সর্বপ্রকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।

শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে নাজমুল বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা যদি সরকারের উচ্চ মহলে কথা বলি বা একটি আন্দোলন গড়ে তুলি, তাহলেই কিন্তু সাধারণ ছাত্রছাত্রী এবং মেধাবীরা ছাত্ররাজনীতির দিকে ধাবিত হবে। যেমন বলা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহন সমস্যা, লাইব্রেরি সমস্যা, হলের সিট সমস্যা সমাধানের জন্যে যদি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি তুলি, তাহলে শিক্ষার্থীরাও নিজেদের তাগিদেই আসবে।

শিক্ষার্থীরা যখন দেখবে ছাত্রলীগ মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, দেশের কথা বলে, ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে কথা বলে তখনই তারা আমাদের রাজনীতির দিকে আকৃষ্ট হবে।

ছাত্রসংসদগুলো চালু করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে সোহাগ বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সব সময়ই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। কারণ ছাত্রসংসদ না থাকলে সাধারণ ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলার কন্ঠস্বর থাকে না।

বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতিতে আগের মতো আগ্রহী না হওয়ার কারণ হিসেবে নাজমুল বলেন, ছাত্ররাজনীতি থাকবে ছাত্রদের হাতে। অথচ দেখুন, যেখানে আমাদের বয়সসীমা ২৯ বছর সেখানে অন্য একটি ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের নেতার বয়স ৪৩ বছর। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ছাত্ররাজনীতিতে আকৃষ্ট হয় না কিন্তু এ কারণেই।

যে ছাত্রনেতা বিবাহিত, যার বাচ্চা স্কুলে পড়ে, সে কী করে একজন প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের সঙ্গে মিশবে? শিক্ষার্থী কিন্তু এ বয়সীদের সঙ্গে থেকে নিজের ইচ্ছাটাকে ধারণও করতে পারবে না।

`প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে দিয়েছেন ছাত্ররাই ছাত্র রাজনীতি করবে, আমরাও সেটাই বিশ্বাস করি`-- বললেন এই দুই ছাত্রনেতা।

`বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আরো শক্তিশালী করতে নতুন নেতৃত্ব কী ভূমিকা রাখবে?`--এ প্রশ্ন রাখা হলে জবাবে   সোহাগ বলেন, আমাদের বিদায়ী  কমিটি প্রায় ৮০টি জেলায় সম্মেলন করেছে। আমাদের কাজ হচ্ছে অতি দ্রুত উপজেলা পর্যায়ে কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর কমিটিসহ তৃণমূল পর্যায়ের সকল কমিটি করে ফেলা। এবং এটা যত দ্রুত সম্ভব করে ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করা।

তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের মেয়াদ ২ বছর। তাই সে টার্গেট নিয়েই কাজ করবো। শিগগিরই ত্যাগী, পরীক্ষিত, মেধাবীদের সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ গঠন করে তাদের নিয়ে টিমওয়ার্ক শুরু করবো। ’

‘ভাল কিছু করেই তা নিয়ে কথা বলতে চাই’, প্রতিশ্রুতি বদিউজ্জামান সোহাগের।

যারা এক এগারোতে ত্যাগী নেতাকর্মী ছিলেন, তাদের নিয়ে অচিরেই একটি কেন্দ্রীয় কমিটি হবে জানিয়ে নাজমুল বলেন, ‘আমাদের কিছু নতুন আইডিয়া আছে এগুলো এখনই বলছি না। কমিটির সঙ্গে আইডিয়াগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। কিছু আইডিয়া বাস্তবায়ন করে ছাত্ররাজনীতির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই। ’

সারাদেশে ছাত্রলীগের একটি ডাটাবেজ বানানোর উদ্যোগের কথা জানান নাজমুল। এটা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও জেলাতে থাকবে। আমাদের ছাত্রলীগের কয়জন কর্মী এবং কারা কর্মী, আমরা তখন নির্দিষ্ট করে বলতে পারবো। তখন কোনো অঘটন ঘটলেই তার দায় ছাত্রলীগের ওপর ঢালাওভাবে চাপানো সম্ভব হবে না। তখন আমরা প্রতিবাদ করতে পারবো যে এই নামে ছাত্রলীগের কোনও নেতাকর্মী নেই।

ছাত্ররাজনীর আগের সুনাম ফিরে পেতে হলে কি করতে হবে জানতে চাইলে বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, আমি মনে করি মেধাবীদেরই রাজনীতিতে আসতে হবে। বিদেশে দেখবেন অনেকে পড়াশোনা শেষ করে লিডারশিপ বিল্ডআপের জন্যে প্রশিক্ষণ নেয়। বাংলাদেশেও এরই মধ্যে তা শুরু হয়েছে। এই প্রশিক্ষণ থাকলে তা চাকুরির জন্যেও সহায়ক হতে পারে। আমি মনে করি, ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় থাকলে একজন ছাত্রের মধ্যে সমাজ সচেতনতা তৈরি হয়। এবং তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী তৈরি হয়।

ছাত্রলীগ করে সবাই যে সংগঠনের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হবে তা নয়। প্রত্যেকেই নিজেকে তৈরি করবে একজন কর্মঠ, আদর্শবান, সৎ, ত্যাগী ও নির্ভীক কর্মী হিসেবে। সামাজিক মূল্যবোধগুলো তার মধ্যে জাগ্রত হতে হবে, বললেন সোহাগ।

সিদ্দিকী নাজমুল বলেন, ‘রাজনীতিতে ত্যাগ এবং মেধার মূল্যায়ন যে আছে, তা এবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৭তম কাউন্সিলে প্রমাণিত হয়েছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভোটের মাধ্যমে কিন্তু হাই অথরিটিকে একটা মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আর সেটা হচ্ছে, ত্যাগী এবং মেধাবী যারা তারাই ছাত্ররাজনীতি করবে। ’

সুতরাং যারা ছাত্ররাজনীতিতে আসতে চায় তাদের জন্যে বলবো, নির্বাচিত হওয়ার পর শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রথম যেদিন দেখা করেছিলাম নেত্রী আমাদের বলেছেন আগে লেখাপড়া তারপর রাজনীতি। আমাদের কিন্তু একটি স্লোগানও আছে। আর তা হচ্ছে,  শুধু ভাল কর্মী হলেই চলবে না। ভাল ছাত্রও হতে হবে। এ জন্যে প্রথমত লেখাপড়া ঠিক রাখতে হবে। তারপর ছাত্ররাজনীতিতে আমরা বর্তমানে যারা নেতৃত্বে আছি তারা হয়তোবা কিছু আইডিয়া বাস্তবায়ন করবো। কিংবা আমরা যখন কোনও আন্দোলন করবো, তখন আমরা আহ্বান করবো সবাই যেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের সহযোগিতা করেন।

ছাত্ররাজনীতি মানে এটা না যে, সারাদিন মাঠে মিছিল করতে হবে। ছাত্ররাজনীতিতে ছাত্ররা সহযোগিতা বিভিন্নভাবে করতে পারেন। কেউ পত্রিকায় কলাম লিখতে পারেন। কেউ ডিবেটের মাধ্যমে সেটা ফুটিয়ে তুলতে পারেন, কেউ দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে, কেউ সাংস্কৃতিক ভাবেও অবদান রাখতে পারেন। আমি বলি যিনি যেই অবস্থানে আছেন সেই অবস্থান থেকে নিজেকে হাইলাইট করতে পারেন। নিজেকে হাইলাইট করার মাধ্যমে একজন ছাত্র কেন্দ্রকে জানাতে পারেন, তার কর্মের মাধ্যমেই আমাদের মেসেজ দিতে পারেন যে, আমি এই জায়গাটার জন্যে উপযুক্ত। ’

জাতীয় রাজনীতি এবং ছাত্র রাজনীতি আঞ্চলিকতার প্রভাবে দুষ্ট-- এ অভিযোগের ব্যপারে সোহাগ বলেন,  ‘আঞ্চলিকতা থেকে আমরা এরই মধ্যে বেরিয়ে গেছি। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে আঞ্চলিকতার কোনও অবকাশ নেই। আমরা কোনও আঞ্চলিক গ্রুপের মাধ্যমে নেতা হইনি। মাঠের থেকে রাজনীতির মাধ্যমেই আমরা এ পর্যায়ে এসেছি। আমাদের সম্পর্ক তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে।

ছাত্রলীগে আঞ্চলিকতার প্রভাব দূর হয়েছে--এ দাবি নাজমুলের বক্তব্য আরো জোরালো।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগ যে আঞ্চলিকতা থেকে বেরিয়ে এসেছে, তার প্রথম নিদর্শন হলো আমার সভাপতির বাড়ি বাগেরহাট। আর বাগেরহাটের ইতিহাসে এটাই প্রথম ছাত্রলীগের সভাপতি। আমার বাড়ি জামালপুর। জামালপুরের ইতিহাসে এটাই প্রথম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। আঞ্চলিকতা বলতে কিন্তু বিশেষ কিছু এলাকাকে বোঝাতো। প্রত্যেক বছর যেখান থেকে নেতৃত্ব আসতো । সে অবস্থা এখন আর নেই।

তিনি বলেন, ‘এবারের কাউন্সিলে মোট ২৩শর মতো ভোট ছিল। সোহাগ ভাইকে যদি শুধু খুলনা অঞ্চল ভোট দিত এবং আমাকে ময়মনসিংহ অঞ্চল, তবে কিন্তু আমরা এতো ভোট পেতাম না। সারা বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীরা আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তারা আমাদের পরিশ্রমকে, ত্যাগকে মূল্যায়ন করেছে। সুতরাং যারা ভোট যে দিয়েছে তাদের সম্মান রাখতে একটি পরিবারের মতো সংগঠনটিকে আরো অনেকদূর নিয়ে যেতে চাই।

ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে টেন্ডারবাজি আর চাঁদাবজি, এখান থেকে বেরিয়ে আসতে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব কি ভূমিকা রাখবে জানতে চাইলে সোহাগ বলেন, আমাদের কঠোর হতে হবে। কেউ যেন সংগঠনের নাম বেচে এসব অপকর্ম না করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি, যদি আইনকে নিজ গতিতে চলতে দেওয়া যায়, তাহলে কোনও অপরাধীই ক্ষমা পাবে না। ’

নাজমুল  বলেন, যারা সত্যিকারের ছাত্ররাজনীতি করে তারা কিন্তু কখনো চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত হয় না। যারা করে তাদের বেশীরভাগই একসময় ছাত্ররাজনীতি করতো অথবা অনেক আগে করতো।

বর্তমান সরকারকে বলা হয় দিনবদলের সরকার। এই দিনবদলে এবং আওয়ামী লীগ ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ছাত্রলীগ কি ভুমিকা রাখবে জানতে চাইলে সোহাগ বলেন, ২০০৮ সালের পর বাংলাদেশে প্রকৃত অর্থেই দিনবদল হয়েছে। নির্বাচনের পর নির্বাচনী সহিংসতা হয়নি। জাতীয় রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। ছাত্ররাজনীতিতেও পরিবর্তন এসেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্ররাজনীতিকে প্রকৃত ছাত্রদের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি গণতন্ত্রের মানসকন্যা। তাই তিনি গণতন্ত্রের চর্চা করেছেন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্যে প্রতিটি ক্ষেত্রেই গণতন্ত্রের চর্চা করছেন। ছাত্রলীগের নতুন যে কমিটি হলো, সেখানে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের প্রত্যক্ষভাবে ভোট দেওয়ার যে ব্যবস্থা তিনি করেছেন এটাই হচ্ছে দিন বদল।

শতভাগ চেষ্টা থাকবে আগামী দিনে বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার। এ জন্যে যা যা করা দরকার সব করবো। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে না, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশনজট থাকবে না, এটাই হচ্ছে দিন বদল।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে বলে প্রতিজ্ঞা করেন তিনি।

ডিজিটাল বাংলাদেশের ব্যপারে নাজমুল বলেন, ডিজিটাল জিনিসটার ব্যাখ্যা আমি ব্যক্তিগতভাবে এভাবে দেই, যে সবকিছুর একটি পজিটিভ পরিবর্তন।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে আমরা চেষ্টা করবো, ছাত্ররাজনীতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক হবে এবং ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমেই আগামীদিনের জাতীয় নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। আমরা সকল সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি আশা করি, এ কাজগুলো করলেই শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন ২০২১ এর অনেক কিছুই বাস্তবায়ন হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর থাকবে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব।

সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার জন্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি অর্থাৎ ইসলামী ছাত্রশিবির যদি কোনও অপচেষ্টা চালায়, তাহলে আমরা তা প্রতিহত করবো। এ কথাটি আমি দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীকে জানাতে চাই।

মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সভাপতির বক্তব্যও প্রায় একই রকম। তিনি বলেন, মৌলবাদের বিরুদ্ধে  সারা জাতিই আজ ঐক্যবদ্ধ  অবস্থান নিয়েছে। আপনার জানেন বিগত জোট সরকারের সময় এ মৌলবাদী গোষ্ঠীর যেভাবে উত্থান ঘটেছিল এবং তারা যেভাবে বাংলাদেশে বোমাবাজির রাজনীতি শুরু করেছিল সেটা এ দেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছে। যারা যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচারের পক্ষে জনগণতো ঐক্যবদ্ধ। জনগণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে রায় দিয়েছে। এবং সেভাবেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

কোনও ভুলত্রুটি হলে তার গঠনমূলক সমালোচনা চান ছাত্রলীগের দুই নেতা। ‘আমরা নতুন এবং আমরা রানিং স্টুডেন্ট, এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ঘুমাই সেহেতু আমাদের ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। আমাদের অনেক বেশি সমালোচনা না করে পরামর্শ দিলে তা গ্রহণ করেই সামনে এগিয়ে যাবো’, বলেন তারা।

বাংলাদেশ সময় ১৬২৭ ঘণ্টা জুলাই ২০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।