ঢাকা: আফগানিস্তানে তালেবানি প্রশিক্ষণ নিয়ে যেসব জঙ্গি বাংলাদেশে এসেছিল তাদের তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে। এদেরকে বাংলাদেশ থেকে ধরে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তারা।
এ মন্তব্য খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বুধবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আলোচনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি এ মন্তব্য করেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, `যুক্তরাষ্ট্রের ওই চাপ সত্ত্বেও আমরা তা করতে রাজি হইনি। আমরা তাদের বলে দিয়েছি, লিস্ট থাকলে দিয়ে দিন। আমরাই ব্যবস্থা নেব। ’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া এতো বড় বড় কথা বলেন! পাকিস্তান-আফগানিস্তানে কারা বোমা মারে তার লিস্ট যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে। আফগানিস্তান থেকে কারা ট্রেনিং নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে সেই লিস্টও তাদের কাছে আছে। এরা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান-পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। এরা স্লোগান দিয়েছিলো `আমরা হবো তালেবান, বাংলা হবে আফগান’। তারা ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৫০০টি স্থানে একযোগে বোমা হামলাও চালিয়েছিলো। খালেদা জিয়া তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। এই তালেবানদের বাংলাদেশ থেকে ধরে নিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের ওপর চাপ ছিলো। কিন্তু আমরা রাজি হইনি। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ আমরা চাই না। আমরা তাদের বলেছি- যদি লিস্ট থাকে আমাদের কাছে দিতে। আমরাই ব্যবস্থা নেব। ’
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় আছি তাই বাংলাদেশ নিরাপদে আছে। আমার চোখ বন্ধ হলে কী হবে তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানেন। ’
সূত্র জানায়, বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের সমালোচনা করেন এবং নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মোহাম্মদ নাসিম বৈঠকে বক্তব্যদানকালে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলছিলেন। তারই এক পর্যায়ে তিনি ফাঁসির আসামি লক্ষ্মীপুরের আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবের সাজা মওকুফে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে বলে মন্তব্য করেন।
মোহাম্মদ নাসিমের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময়ে শেখ হাসিনা নাসিমের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনি এত বড় বড় কথা বলছেন। আমরা গত টার্মে (১৯৯৬-২০০১) যখন ক্ষমতায় ছিলাম, আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তখনও তো অনেক কিছু হয়েছিলো। তাতে কী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি? আপনার কারণে আপনার এলাকার সংসদীয় আসনটি আমাদের হারাতে হয়েছিল। ’
সূত্র জানায়, বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলতাফ হোসেনসহ একাধিক সদস্য দেশের আইন-শৃংখলার অবনতির কথা জানালে জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অতীতের যে সময়ের চেয়ে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি এখন ভালো। তবে, মাঝে মধ্যে দু’একটি ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতির আরো উন্নতি হওয়া দরকার। ’
এদিকে বুধবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরসূচি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই দেশের বৃহত্তর ১৯ জেলায় এ সফর হবে। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের নেতৃত্বে ১৯ টিমে বিভক্ত করে কেন্দ্রীয় নেতারা এ সফর সফল করবেন।
এছাড়া বৈঠকে ১৫ ও ২১ আগস্টের কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১১