ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

ভোগান্তি সঙ্গী করে দেশে ফিরছেন শত শত হাজী

ইশতিয়াক হুসাইন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১১
ভোগান্তি সঙ্গী করে দেশে ফিরছেন শত শত হাজী

ঢাকা: ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের হাসিবুল ইসলাম তার সহধর্মিনীকে সঙ্গে করে হজ শেষে শুক্রবার সকালে নেমেছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। পবিত্র মক্কা গিয়ে ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে পেরে তিনি সন্তুষ্ট।

এজন্য তিনি নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করছেন।

তবে এতকিছুর পরেও মনের মধ্যে একটু কষ্ট! কারণ, মক্কা থেকে দেশের আত্মীয়-স্বজনদের জন্য তিনি নিয়ে এসেছিলেন জমজমের পানি। কিন্তু জমজমের সেই পানির ক্যানটি আর খুঁজে পাননি। শুধু পানির ক্যানই নয়, নিজের পরনের কাপড়টি ছাড়া তার সঙ্গে আর কিছুই নেই।     

শুধু লাগেজ আর জমজমের পানিই নয়, জেদ্দা বিমানবন্দরে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা, কোনো রকমে পানি, সামান্য রুটি খেয়ে কিংবা না খেয়ে হাসিবুল ইসলামের মতো দুর্ভোগ আর ভোগান্তিকে সঙ্গে করে দেশে ফিরেছেন হাজীরা। শুক্রবার সকালে কাতার এয়ারওয়েজ, নাস এয়ারসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে কয়েকশ হাজী দেশে ফিরেছেন। আর রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স বিমান সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ৫শ ৫ জন হাজী নিয়ে দেশের ফেরার কথা থাকলেও ফ্লাইটটির আসা পিছিয়ে গেছে। বিমান সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টায় এই ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করেছে।

শুক্রবার সকালে দেশে ফেরা হাজীদের সঙ্গে বিমানবন্দরে কথা বলে জানা গেছে, সৌদি আরবের প্রাইভেট এয়ারলাইন্স নাস এয়ারে আসা বেশিরভাগ হাজী জেদ্দা বিমানবন্দরে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে কাটিয়েছেন।

নরসিংদীর মাসুদুল হক বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় জেদ্দা বিমানবন্দরে আসেন। এরপর সকাল, দুপুর, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। অবশেষে রাত সোয়া ৯টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে জেদ্দা ছাড়ে নাস এয়ারের ফ্লাইটটি।
৬৫ বছরের বৃদ্ধ পাবনার হাবিবুর রহমানও একই ফ্লাইটে এসেছেন জেদ্দা থেকে। বয়সের তুলনায় শরীরে বয়সের ছাপ অনেক, ক্ষীণকায় শরীর নিয়ে হাবিবুর রহমান বিমানবন্দরে নেমে যেন আর দাঁড়াতে পারছিলেন না!

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানালেন, সৌদি আরবের স্থানীয় সময় বুধবার রাত ১টায় ঘুম থেকে উঠে রওনা দেন জেদ্দা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্য। ভোরে বিমানবন্দরে গিয়ে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু সকাল ৯টায় ছাড়বে, দুপুর ১২টায় ছাড়বে-এভাবে রাত সোয়া ৯টায় ফ্লাইট ছাড়ে।

হাবিবুর রহমান বলেন, ‌ভোর থাইক্যা রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। সাতে কোনো খাবার আছিল না। বিমানবন্দরে খাবারের অনেক দাম। কিনা খাওনের টাকাও আছিল না। এজেন্সির লোকেরা একটু রুটি ও পানি দিছিল। তাই খাইয়্যা রাত পর্যন্ত আছিলাম।

একই এলাকার কেরামত আলী ও আব্দুস সোবহানও বললেন একই রকমের কষ্টের কথা। এই তিনজনের কেউই তাদের লাগেজ ও জমজমের পানি পাননি। এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার আসলে তারা লাগেজ ও পানি নিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এ কথায় আশ্বস্ত হতে পারছেন না তারা। তাই, এ প্রতিবেদকের কাছে জানতে চাইলেন, তারা তাদের লাগেজ আর জমজমের পানি পাবেন তো।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৮ ঘন্টা, নভেম্বর ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।