ঢাকা: এবারের বাটেক্সপো মেলার দ্বিতীয় দিনে জমে উঠেছে মেলাপ্রাঙ্গণ। গতবারের চেয়ে এবার বিক্রি বাড়ার আশা করছেন আয়োজকরা।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে।
রোববার ছিলো মেলার দ্বিতীয় দিন।
সরেজমিনে মেলা ঘুরে দেখা গেল, উদ্যোক্তা আর দেশি বিদেশি ক্রেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে ২২তম বাটেক্সপো আয়োজন।
এদিকে আয়োজকরাও আশা করছেন, বিশ্ববাণিজ্যে মন্দার ছোঁয়া থাকলেও মেলাতে আশানুরূপ সাড়া মিলবে ক্রেতাদের কাছ থেকে।
মেলা ঘুরে অংশগ্রহণকারী স্টলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গতকাল (শনিবার) থেকে দেশি ক্রেতা (বায়িং হাউস) এবং সরাসরি বিদেশি ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন।
রোববার সকাল থেকে বিদেশি ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে বিক্রির অর্ডার ঠিক দেওয়া শুরু হয়নি।
তাদের ধারণা, বিক্রির অর্ডার পাওয়া যাবে মূলত শেষ দিনে। এছাড়া কার্ড আদান প্রদান চলছে। পরে যোগাযোগ করবে দু’পক্ষই।
আয়োজক বিজিএমইএ জানিয়েছে, মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের পোশাক সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রেতারা এসেছেন।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, হংকং, থাইল্যান্ড, চীন, ভারত, পাকিস্তান থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্রেতা এ মেলা পরিদর্শন করবেন।
বিজিএমইএ সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, গতবারের মেলায় আমরা ৬ কোটি (৬০ মিলিয়ন) ডলারের অর্ডার পেয়েছিলাম। এবার মেলাতে তা ৭ কোটি (৭০ মিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলেই আমাদের ধারণা।
এ ধারাবাহিকতায় গতবারের চেয়ে এবারের মেলায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে আশা করছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, এবার বাটেক্সপোর ২২তম আসর। ১৯৮৯ সাল থেকে বিজিএমইএ’র উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন হয়ে আসছে। । তখন এটি স্বল্প পরিসরে হলেও আজ এ মেলার ব্যাপ্তি সারা পৃথিবীব্যাপী।
বাটেক্সপোর মাধ্যমে অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা আগের বছরগুলোতে পুরোপুরিভাবে অর্জিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি, বিশ্ববাণিজ্যে মন্দার ছোঁয়া থাকলেও এবারের মেলায় আমাদের সার্বিক প্রত্যাশা পুরণ হবে।
অংশগ্রহণকারী সিনহা ফেব্রিক্সের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) জহির উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে জানান, মেলায় তারা বেশ সাড়া পাচ্ছেন। গতকালের চেয়ে রোববার ভিড় বেশি। তবে তাৎক্ষণিক কোনও অর্ডার পাচ্ছেন না।
মেলা শেষে ক্রেতারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলে তিনি জানান।
আরেক অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সটেক্স লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক (বিপণন) মো. মহসিন কবির বাংলানিউজকে বলেন, ‘মেলা যদিও একটা দিকে বেশি লক্ষ্য রাখা হয়, সেটি হলো বিক্রির চেয়ে পণ্যের প্রদর্শনী। ক্রেতারা ঘুরে পোশাক দেখে যাবেন। প্রয়োজনে নমুনা সংগ্রহ করছেন। পরে বিক্রির আদেশ নিয়ে আসবেন। ’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে মেলায় এসেছেন কিড় হ্যাডলি। সিনহা গ্রুপের স্টলে তিনি কাপড় নেড়েচেড়ে দেখছিলেন।
হ্যাডলি বাংলানিউজকে জানান, তিনি একজন পোশাক ব্যবসায়ী। মূলত এ মেলার জন্য গত পরশু তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।
এদিকে তিন দিনের এ মেলার পাশাপাশি এখানে চলছে একটি বিশেষ কর্মশালা। আর পাশাপাশি চলছে জমকালো ফ্যাশন শো।
অন্যদিকে, এবারের মেলায় থাইল্যান্ড থেকে ১০টি, চীনের ২টি, পাকিস্তানের ১টি এবং ভারতের ৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এবারের মেলাতে ১৪৬টি দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে বিজিএমইএ সদস্য ৫৬, গার্মেন্ট এক্সেসরিজ (লোকাল) ১৩, গার্মেন্ট এক্সেসরিজ (বিদেশি) ২, গার্মেন্ট ফেব্রিক্স (ফরেন) ১৭, গার্মেন্ট (প্রযুক্তি) টেকনলোজি ১০, সেবা প্রদানকারী ১৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। এর বাইরে আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মেলা চলবে কাল সোমবার পর্যন্ত।
প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মেলাপ্রাঙ্গণ সর্ব সাধারণের জন্য খোলা থাকছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১১