শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): একটি নতুন প্রজাতির পাখি পেলো বাংলাদেশ। পাখিটির ইংরেজি নাম ‘পেইল-লেগড লিফ ওয়ারবলার’ (Pale-legged Leaf Warbler)।
পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Phylloscopus Tenellipes। পাখি পর্যবেক্ষক সৈয়দ শাহনূর ইনাম রাতুল ও সাহাদ রাজু যৌথভাবে পাখিটির সন্ধান পেয়েছেন। ২০১৫ সালের এপ্রিলে এ পাখিটিকে প্রথম রেকর্ড করা হয়। এরপর দ্বিতীয় রেকর্ড ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের নামকরণ অনুসারে ‘ওয়ারবলার’ (Warbler) পাখিগুলোকে বাংলায় ‘ফুটকি’ বলা হয়। আমাদের দেশে ফুটকি, টুনটুনি, ঘাসপাখি প্রভৃতি Sylviidae পরিবারের পাখি। এমন ২৬টি পাখির বিচরণ রয়েছে আমাদের দেশে।
পাখি পর্যবেক্ষক ও পাখি আলোকচিত্রী সাহাদ রাজু বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের এপ্রিলে মৌলভীবাজারের বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক থেকে পাখিটির ছবি প্রথম তুলেছেন সৈয়দ শাহনূর ইনাম রাতুল। কিন্তু আমরা এটিকে কমন পাখি ভেবে তেমন একটা গুরুত্ব দেইনি। ফলে আইডিসহ অন্য তথ্য-উপাত্ত জানার জন্য পাখিটির ছবি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রাতুল ও আমি দু’জনেই হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে পাখিটিকে দেখতে পাই।
তিনি আরও বলেন, সৈয়দ শাহনূর ইনাম রাতুলের অনুরোধে আমি পাখিটির ছবি প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ স্যার পল থম্পসন ও স্যার ফিল রাউন্ডের কাছে পাঠাই এর আইডি নির্বাচনের জন্য। তারা দু’জনই পাখিটিকে বাংলাদেশের প্রথম রেকর্ড বলে সনাক্তকরণে সহযোগিতা করেন।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সহ-সভাপতি এবং পাখি বিষয়ক গবেষক ও আলোকচিত্রী সায়েম ইউ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, রাতুল ও রাজু পেইল-লেগড লিফ ওয়ারবলার নামে নতুন প্রজাতির একটি পাখির দেখা পেয়েছেন। এটিকে আগে কখনও আমাদের দেশে দেখা যায়নি।
নামকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর বাংলা নামকরণ এখনও হয়নি। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক, আমাদের শ্রদ্ধেয় ইনাম ভাই বিদেশ থেকে এলে পাখিটির বাংলা নাম দেওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
পাখিটির দৈহিক আয়তন, খাবার ও বিচরণ সম্পর্কে সাহাদ রাজু বলেন, আয়তন ১০ থেকে ১১ সেমি ও ওজন ১৩.৫ গ্রাম। মাঝারি আকারের বাদামি ছোট চঞ্চুবিশিষ্ট এই ফুটকি। পা গোলাপি বর্ণের। এছাড়া ডানায় দু’টি দাগ আছে। ছোট-খাটো পোকামাকড় বেশি খায়।
পাখিটি বংশবৃদ্ধি করে দক্ষিণ পূর্ব রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও চীনে। প্রজননের সময় ছাড়া পরিযায়ী পাখি হয়ে এদের প্রায় সবাই চলে আসে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে। শীতে দক্ষিণ মায়ানমার, কম্বোডিয়া ও দক্ষিণ ভিয়েতনামে এদের বেশি দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬
বিবিবি/এসএস