ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

পাহাড়ে ধস ঠেকাতে ১২ দফা সুপারিশ পরিবেশ অধিদপ্তরের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
পাহাড়ে ধস ঠেকাতে ১২ দফা সুপারিশ পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক

ঢাকা: একের পর এক পাহাড় ধসের কারণ খুঁজে বের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তাই আগামীতে যাতে আর পাহাড় ধসের ঘটনা না ঘটে সেজন্য ‘পাহাড় ব্যবস্থাপনা’ নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি ১২ দফা সুপারিশ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে সংসদভবনে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছে ১২ দফা সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়। এর আগে ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সম্প্রতি পাহাড় ধসের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে এই সুপারিশালা দেওয়া হয়।

সুপারিশমালার মধ্যে রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর পাহাড় ও টিলা সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ কঠোরভাবে প্রতিপালন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা নীতি তৈরি করা, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে তবেই পাহাড়ি এলাকায় পরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট নির্মাণ করা।

পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস ও ভূমিক্ষয় রোধে বনায়ন, পাহাড় সংরক্ষণে টেকসই কৃষিপদ্ধতির প্রবর্তন,পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। ম্যাপিং, জোনিংসহ পাহাড়ি এলাকার বিস্তারিত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা, পাহাড় সংরক্ষণ এবং পাহাড়ি এলাকার ব্যবহার সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার কথাও বলা হয় এতে।

পাহাড়/টিলার গঠনশৈলী, পাহাড়ি নদ-নদী-ঝর্ণা, এসবের স্থায়িত্ব ধরে রাখা, ধসে পড়ার ঝুঁকিসমূহ বিবেচনায় নেওয়া, পরিবেশ-প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য রজায় রাখা, পাহাড়ে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর গৃহব্যবস্থা খতিয়ে দেখা, পাহাড়নির্ভর জীবিকা---ইত্যাদি বিভিন্ন দিকের ওপর গবেষণা/সমীক্ষা পরিচালনা করে টেকসই পাহাড় ব্যবস্থাপনা নীতি প্রণয়নের সুপারিশ করা হয় এতে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, নির্বিচারে বৃক্ষকর্তন/নিধন বন্ধ করতে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাহাড়ে ব্যাপক হারে পাহাড়ের জন্য উপযোগী বনায়ন করতে হবে। পাহাড়ের গায়ে থাকা গুল্ম জাতীয় গাছ/জঙ্গল পোড়ানো বন্ধ করতে হবে।

পার্বত্য জেলার পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা নির্মাণের সময় পাহাড়ের ঢাল কোনক্রমেই যাতে ৩৫-৪০ ডিগ্রির বেশি না হয়। পাহাড়ের ঢালে সিমেন্টব্লক বসাতে হবে অথবা ঘাসের আচ্ছাদন লাগাতে হবে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, দেখা গেছে, সরকারি সংস্থাও খাড়াভাবে পাহাড় কাটে। এজন্য সংসদীয় কমিটি পরিবেশ অধিদপ্তরের সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়ে দিতে বলেছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয়ে বৈঠক করে সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে বলেছে।

ওই প্রতিবেদনে পরিবেশ অধিদপ্তর বলেছে, অবৈধ পাহাড় কাটা, পাহাড়ি বনভূমি উজাড়, পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণসহ নানা ধরনের নেতিবাচক কাজকর্মের ফলে দেশের পাহাড়গুলো আজ একে একে ধ্বংসের মুখে। বর্তমানে নির্বিচার বন ধ্বংস, ভূমিধস, ভূমিক্ষয়, মাটি ও পানি দূষণ, অপরিকল্পিত নগরায়ন, পাহাড় কাটা প্রভূতি কারণে পাহাড় সুরক্ষার কাজটি কঠিন হয়ে পড়ছে।

ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশ ও বন-উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, নবী নেওয়াজ, টিপু সুলতান, মো. ইয়াসিন আলী এবং মেরিনা রহমান অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
এসএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।