রাজশাহী: ঈদের দ্বিতীয় দিন বৃষ্টিতে সিক্ত হলো রাজশাহী। সকাল থেকে আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরাচ্ছিল সূর্য।
প্রথমে শুরু হয় বজ্রসহ বৃষ্টি। এর পর বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যায় রাজশাহীর উপর দিয়ে।
এতে তপ্ত প্রকৃতি আবার প্রাণ ফিরে পায়। আর জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। মধুমাস জৈষ্ঠ্যের প্রথম দিনে বৃষ্টির পরশ পেয়ে উপকৃত হয় গাছে থাকা আমগুলোও।
তবে বৃষ্টি শেষে একবার রোদ উঠছে। একবার মেঘে ঢেকে যাচ্ছে আকাশ। রোদ আর মেঘের এ লুকোচুরির মধ্যেই বাইরে নামছে রাজশাহীর অনেক মানুষ।
করোনার কারণে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় উদ্যান, চিড়িয়াখানা ও শিশু পার্কসহ সব বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ।
এরপরও একটু নির্মল বায়ু ও বিনোদনের খোঁজে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় করছে পদ্মাপাড়ে। নদীতে পানি শুকিয়ে গেলেও মুক্ত বাতাসে বসে আড্ডা দিচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। বৃষ্টিও তাদের ঘরে আটকে রাখতে পারছে না।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১১ মে) দুপুর ১২টার পর থেকে শুরু হয় কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। মুষলধারে বৃষ্টি চলে একটানা বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত। এরপর থেমে থেমে বৃষ্টি চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এর চার দিন পর আবারও বৃষ্টির দেখা মিললো।
এ বৃষ্টিতে খরার কবলে পড়া আম, লিচুসহ ফলের ব্যাপক উপকার হয়েছে। বৃষ্টির কারণে আম দ্রুত বড় হবে ও ঝরে পড়া বন্ধ হবে। এখন উফশী ধান লাগানো হচ্ছে। এ বৃষ্টিতে ধানেরও উপকার হয়েছে। এছাড়া জমিতে থাকা পাট, তিল ও ভুট্টাসহ অন্যান্য সবজি জাতীয় ফসলের উপকার হলো।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র বাংলানিউজকে জানান, শনিবার (১৫ মে) দুপুর সোয়া ২টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। একটানা বৃষ্টি চলে বিকেল পৌনে ৩টা পর্যন্ত। এ সময় রাজশাহীতে পাঁচ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
শনিবার বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল সকাল ৬টায় ৯৭ শতাংশ ও বিকেল ৩টায় ৯৬ শতাংশ।
এক প্রশ্নের জবাবে দেবল কুমার মৈত্র বলেন, এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। একটানা বৃষ্টি চলে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত। ওই সময় রাজশাহীতে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর আগে গত সোমবার (১০ মে) রাতেও বৃষ্টি হয়েছে। রাত সাড়ে ৯টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত ৩ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গত ৫ মে ৬১ দশমিক ৪ মিলিমিটার।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর থেকে শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। যশোর ও খুলনা অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২১
এসএস/আরবি