রাজশাহী: রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সূর্যের মুখ দেখা গেলেও উজ্জ্বল রোদের কোনো উষ্ণতা ছিল না। ভোরে ও সন্ধ্যায় ছিল ঘন কুয়াশার দাপট।
এর আগে শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাজশাহীতে হঠাৎ করেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে আসে। হু হু করে বইতে শুরু করে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা বাতাস। তাপমাত্রা কমায় দিনের বেলায়ও রাতের মতো তীব্র শীত অনুভূত হয়।
শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। বৈরি আবওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে-খাওয়া, ছিন্নমূল মানুষ। বিশেষ করে শহুরে ছিন্নমূল মানুষগুলো বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। মাঘ মাসের শীতের এই তীব্রতায় ঠাণ্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছেন
এরপরও জীবন ও জীবিকার তাগিদে ঘনকুয়াশা আর তীব্র শীতের মধ্যেই সকাল-সন্ধ্যা এক করে কাজ করে যাচ্ছেন। রাতে রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। সেখানে ছাদের নিচে খোলা কম্পাউন্ডে গুটিশুটি হয়ে রাত কাটাচ্ছেন। আর শহরের বস্তি এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষকে সন্ধ্যার পর কুড়িয়ে আনা খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজয়ানুল হক বাংলানিউজকে জানান, গতকাল থেকে চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বৃহস্পতিবারও (২৭ জানুয়ারি) ছিল ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ওপর শুক্রবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ছিল কম।
শনিবার রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ফলে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও শৈত্য প্রবাহ কাটেনি। সাধরণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৮ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে তাকে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ বলা হয়। এছাড়া তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে তীব্র শৈত্য প্রবাহ বলা হয়। বর্তমানে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চল রংপুর ও রাজশাহীসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে যে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
এসএস/এমআরএ
