ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপকূল থেকে উপকূল

উপকূলের ৬০ পয়েন্ট দিয়ে মানবপাচার

তুষার তুহিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৬ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৫
উপকূলের ৬০ পয়েন্ট দিয়ে মানবপাচার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার: দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ৬০টি পয়েন্টকে ব্যবহার করে সাগরপথে মানবপাচার করে ৪৯৭ জনের পাচারকারী চক্র। এর মধ্যে ৪৫টি পয়েন্ট কক্সবাজার জেলায়।

বাকি ১৫টি অন্যান্য জেলায়। রঙ্গিন জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে পাচারকারী চক্র ৪১ জেলা থেকে লোক সংগ্রহ করে।

পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডের পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। একই তথ্য গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও রয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য মতে, সারাদেশের ৬০টি পয়েন্টের মধ্যে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার মূল ঘাটি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ। এছাড়া পাচারের রুট হিসেবে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া, ফিশারিঘাট, নাজিরারটেক, সমিতিপাড়া,  কলাতলী, মাঝিরঘাট, সদর উপজেলার ঈদগাহ, খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী, পিএমখালী, রামু উপজেলার হিমছড়ি, দরিয়ানগর, পেচারদ্বীপ, মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া, গোরকঘাটা, কুতুবজোম ও ধলঘাটা।

উখিয়ার সোনারপাড়ার মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ বাংলানিউজকে জানান, উখিয়ার সোনারপাড়ার বাদামতলী ঘাট, রুস্তম আলী ঘাট,  রেজুনদী, ইনানী, ছেপটখালী, মনখালী, শফিরবিল পাচারের নিরাপদ রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখনো এখানে পাচারের কাজে ব্যবহৃত ট্রলারগুলো রয়েছে। তবে পাচারকারীরা গা ঢাকা দিয়েছে।

এছাড়া টেকনাফের বাহারছড়া, হাবিরছড়া, বড়ডেইল, মহেশখালীয়া পাড়া, সাবরাং নয়াপাড়া, কাটাবুনিয়া, খুরের মুখ, শাহপরীর দ্বীপ, ঘোলারপাড়া, মাঝেরপাড়া, পশ্চিমপাড়া, জালিয়াপাড়া, হাদুরছড়া, জাহাজপুরা, কচ্ছপিয়া, শামলাপুর, চকরিয়ার বদরখালী, সুন্দরবন ও পেকুয়ার মগনামা।

তাছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, পটিয়ার শিকলবাহা, গহিরা, সদ্বীপ, কর্ণফুলী, বন্দর, পতেঙ্গা, নোয়াখালীর চরজব্বার, হাতিয়ার নলচিরা, জাহাজমারা, ভোলার মনপুরা, সাতক্ষীরা, বরঘোনা, খুলনার কয়েকটি পয়েন্ট মানবপাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

মানবপাচারের বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে এমন একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম বাবু বাংলানিউজকে জানান, বিভিন্ন সময় উদ্ধার হওয়া ভিকটিমদের তথ্য উপাত্ত যাচাই করে দেখা গেছে দেশের ৪১টি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলের ৪৫টি পয়েন্টকে মানবপাচারকারী বিভিন্ন চক্র ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করে। এসব পয়েন্ট শনাক্ত করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলার সাড়ে চার শতাধিক পাচারকারীকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৯ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।