ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সেই ছোট্ট মেয়েটির মুখ এখনো ভেসে ওঠে ডোনাল্ডের চোখে

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
সেই ছোট্ট মেয়েটির মুখ এখনো ভেসে ওঠে ডোনাল্ডের চোখে

এখনো সেই ভুত তাড়া করে বেড়ায় অ্যালান ডোনাল্ডকে। ল্যান্স ক্লুজনারের ডাকে সাড়া দিয়ে যদি আরো আগে দৌড় দিতেন, তাহলে হয়তো ট্র্যাজিক গল্পের 'কেন্দ্রীয় চরিত্রে' পরিণত হতেন না তিনি।

'সাদা বিদ্যুৎ' খ্যাত কিংবদন্তি এই পেসার ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শিকার করেছেন ৬০২ উইকেট। কিন্তু সেই রানআউট ছাপিয়ে গেছে সবকিছুকে। যা এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচকে। ভুলতে পারেননি অশ্রুজলে সিক্ত সেই ছোট্ট মেয়ের মুখটি।

বিশ্বকাপে আজ অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই কিছুটা হলেও ক্রিকেটভক্তদের মনে উঁকি দিচ্ছে ২৪ বছর আগের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের সেই স্মৃতি। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেকটাই নস্টালজি হয়ে যান ডোনাল্ড। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার জন্য থেরাপি পর্যন্ত নিতে হয়েছে তার।

তিনি বলেন, 'সেদিনের অনেককিছুই আমার মনে আছে। তবে সেই ছোট্ট মেয়েটির কথা সবার আগে মনে পড়ে। মাথায় হাত দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছিল সে। মনে আছে নিরাপত্তাকর্মীরা আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। আমার পা একদম জেলির মতোই আটকে ছিল। হাঁটার শক্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু ভাবছিলাম, আমি সেই ছোট্ট মেয়েটিকে হতাশ করেছি। এমনকি এখনো আমি তার মুখের সেই ছবি কল্পনা করতে পারি। '

শুধু বিশ্বকাপ নয়, ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচ সেটি।  বার্মিংহামে আগে ব্যাট করতে নেমে ২১৩ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২১৩ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকাও। কিন্তু রানরেটে এগিয়ে থাকার কারণে ফাইনালে উঠে অজিরা।  

অথচ শেষ ওভারে জেতার জন্য ৯ রান প্রয়োজন ছিল প্রোটিয়াদের। ডেমিয়েন ফ্লেমিংয়ের প্রথম দুই বলে চার মেরে দূরত্বটা কমিয়ে আনান ক্লুজন। তৃতীয় বলে কোনো রান নেননি তিনি। সিঙ্গেল নেওয়ার চেষ্টা করতে রান আউটের কবল থেকে বেঁচেছিলেন ডোনাল্ড। কিন্তু চতুর্থ বলে আর রক্ষা পাননি। মার্ক ওয়াহর সেই থ্রোয়ে রচিত হয় ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম ট্র্যাজিক কাব্য।

ডোনাল্ড বলেন, 'ম্যাচটি টাই হওয়ার কারণে সম্ভবত বেশি যন্ত্রণা দেয়। ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালের (যা ছিল অবিশ্বাস্য) পর এটি সম্ভবত ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ম্যাচ। এটি আজীবন হৃদয়ে গেঁথে থাকবে এবং এর অংশ হওয়াটা সত্যিই স্পেশাল। মনে হচ্ছে যেন, মহাকাব্যিক এই চলচ্চিত্রে আমি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছি। ' 

‘এটা কাটিয়ে উঠতে আমাকে থেরাপি নিতে হয়েছিল। এই ম্যাচ আর দেখতে পারিনি। এটা নিয়ে আর কথা বলিনি। আমার অংশ হয়ে গিয়েছিল। ’

দুঃখজনক এই হারের পর দেশে ফিরে ট্রলের শিকার হয়েছেন ডোনাল্ড, ‘প্রিটোরিয়ায় এক ম্যাচে ফাইন লেগ বাউন্ডারি সীমানায় ফিল্ডিং করছিলাম। সমর্থকেরা বলছিল, অ্যালান, তুমি কি এবারও দৌড়াবে?, তোমার ব্যাট কোথায়?’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
এএইচএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।