ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বাংলাদেশকে সহজেই হারাল ভারত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৪
বাংলাদেশকে সহজেই হারাল ভারত

নাজমুল হোসেন শান্তর রিভার্স সুইপেই কি সর্বনাশ! শেষদিনে তিনি আউট হয়ে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। এর পরিণতিতে হারতেও হলো বাংলাদেশকে।

প্রায় তিনদিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও শেষ দুই দিনের খেলায় হেরে গেছে তারা। কারও কারও কাছে ঘটনাটা হয়তো অবিশ্বাস্য হয়ে থাকবে।  

কানপুরে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা।  ভারত নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি ভারতকে।  

শেষদিনের শুরুটা চাপ নিয়েই করে বাংলাদেশ। আগের দিন দুই উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। এদিন অন্তত দুই সেশন খেলতে না পারলে যে হার চোখ রাঙাবে, তাও জানা ছিল। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে শুরুটা অবশ্য তত ভালো হয়নি।  

আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক ফেরেন দ্রুতই। সেঞ্চুরির সময়ে সুইপটা খুব ভালো করছিলেন মুমিনুল। এবারও করতে গিয়েছিলেন তেমন কিছুই। কিন্তু রবীচন্দ্রন অশ্বিন লেগ স্লিপটা রাখেন তার জন্য। ওখানেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল। ৮ বল খেলে ২ রান করেছিলেন তিনি।  

তার বিদায়ের পর বাংলাদেশকে আশা দেখান নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম। তাদের জুটিতে ভর করে পরের এক ঘণ্টা স্বাচ্ছন্দ্যেই পার করে বাংলাদেশ। এর মধ্যেই প্রথম ওপেনার হিসেবে ভারতের মাটিতে টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি পান সাদমান।  

ঝামেলার শুরুটা হয় নাজমুল হোসেন শান্তকে দিয়ে। রবীন্দ্র জাদেজার প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৩৭ বলে ১৯ রান করে আউট হয়ে যান শান্ত। তার সঙ্গে সাদমানের জুটি ছিল ৫৫ রানের।  

শান্ত আউট হওয়ার পর তিন রান করতে আরও তিনটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আকাশ দীপের বলে শট খেলতে গিয়ে জাসওয়ালের হাতে ক্যাচ দেন সাদমান। রেকর্ড হাফ সেঞ্চুরির পর আর এক রানও যোগ করতে পারেননি তিনি। ১০১ বলে ৫০ রান করেন সাদমান।  

এরপর উইকেটে দুই নতুন ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। তাদের মধ্যে লিটন উইকেটে থাকেননি বেশিক্ষণ। জাদেজার করা ওভারের প্রথম পাঁচটি বলের চারটিই ছেড়ে দেন তিনি। শেষ বলটিও ছাড়তেই চেয়েছিলেন, কিন্তু লিটনের গ্লাভসে লেগে বল যায় পন্তের হাতে।  

দেশের বাইরে নিজের শেষ টেস্টে ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি সাকিব আল হাসানও। জাদেজার বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে দুই বলে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরত যান সাকিব। ৪ রান করতেই তিন উইকেট হারিয়ে হারের ভয়ে ভালোভাবেই পড়ে যায় বাংলাদেশ।  

সেটি যেন আরও একটু নিশ্চিত হয়ে যায় মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই। জাসপ্রিত বুমরাহর দুর্দান্ত এক ডেলেভারি মিরাজের ব্যাট ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় পন্তের হাতে। তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের অলআউট হওয়াটা ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার।  

সেটি হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যাওয়ার আগেই অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। সেশনের একদম শেষ বলে বুমরাকে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন মুশফিক। তাতে ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে তিন উইকেট নেন অশ্বিন, জাদেজা ও বুমরাহ। তাদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় স্রেফ ৯৫ রানের।  

এটি তাড়া করতে গিয়ে ভারতও অবশ্য উইকেট হারিয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য কম থাকায় তেমন চাপে পড়েনি তারা। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ঝোড়ো শুরুই করতে চেয়েছিল ভারত। কিন্তু মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং লেগে হাসান মাহমুদকে ক্যাচ দেন ৮ বলে ৭ রান করা রোহিত।

তার বিদায়ের পর শুভমান গিলকেও ফেরায় বাংলাদেশ। ৬ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। এরপর বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেন যশস্বী জয়সওয়াল।  

কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি তোলার পর জয় থেকে তিন রান দূরে থাকতে আউট হন তিনি। তাইজুলকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন সাকিবের হাতে।  সেই তাইজুলের বলেই চার মেরে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন পন্ত।

বাংলাদেশ সময় : ১৪২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৪
এমএইচবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।