ঢাকা: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে উত্তাপ ছড়ানো পাকিস্তান-ভারত ম্যাচ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের টুর্নামেন্টের মূল পর্ব।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার শেরে-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম মাঠে নামছে ক্রিকেটের এ দুই পরাশক্তি।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের খেলার আগে কার কতটুকু শক্তি কিংবা দলের কোন খেলোয়াড়ের কি অবস্থা তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গৌণ হয়ে যায়।
তারপরেও দলের শক্তি ও সামর্থ্য নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন ক্রিকেট বোদ্ধারা। সাধারণ দর্শকরা বিশ্লেষণে না গেলেও কে ফেবারিট আর কে জিতবে তা নিয়ে বিতর্ক চলছেই।
ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে পারফরম্যান্স ও টি-টোয়েন্টি খেলার কৌশল বিবেচনায় শুক্রবারের ম্যাচে ফেবারিট পাকিস্তান। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও পাকিস্তানের পক্ষেই কথা বলে।
সর্বশেষ এশিয়া কাপে ঢাকায় ভারত হেরেছে পাকিস্তানের কাছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় আবার পাক-ভারত যুদ্ধ। স্বাভাবিকভাবেই সর্বশেষ ফলাফলের কারণে পাকিস্তানের পক্ষে পাল্লা ভারি।
তবে কেউ যদি বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের পরিসংখ্যান নিয়ে আসেন তাহলে নিশ্চিতভাবে এই পাল্লা ভারতের পক্ষে। কারণ এ পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপে যতবার ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছে কোনোবারই পাকিস্তান প্রতিপক্ষের সঙ্গে পেরে ওঠেনি।
শুধু বিশ্বকাপ ক্রিকেটই নয়, টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেও ভারতের বিপক্ষে জয়ের দেখা পায়নি পাকিস্তান।
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ ম্যাচে দু’দলের ম্যাচ ড্র হয়েছিল। পরে বোল আউটে জিতে যায় ভারত। ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে আবার মুখোমুখি হয় দুই দল। এবারও ভারতের কাছে হারে পাকিস্তান।
এতো গেল পরিসংখ্যানের বিচার। পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে এগিয়ে পাকিস্তান। শুধু পারফরম্যান্সই নয়, এর সঙ্গে দলের শক্তিও প্রাধান্য পাবে।
এশিয়া কাপের সর্বশেষ জয় পাকিস্তানকে মানসিকভাবে অনেকটাই এগিয়ে রাখছে। এরপর ব্যক্তিগত নৈপূণ্যেও এগিয়ে থাকছে পাকিস্তান। এশিয়া কাপে এক শহীদ আফ্রিদির কাছেই হেরেছে ভারত।
আফ্রিদির দিনে মুখ থুবড়ে পড়ে প্রতিপক্ষের খেলা। এ আর নতুন কিছু নয়। এর সঙ্গে রয়েছে পাকিস্তানের স্পিন বিষ। সাঈদ আজমল, মোহাম্মদ হাফিজের ধারালো স্পিনের সঙ্গে রয়েছে ওমর গুল ও সোহেল তানভীরের বৈচিত্র্যময় পেস অ্যাটাক। এদের একেকজনই পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের ফলাফল।
এটি শুধু দর্শকদের কথা নয়। স্পিন যাদুকর মুত্তিয়া মুরালিধরনও বোলিংয়ের শক্তি বিবেচনায় পাকিস্তানকে ফেবারিটের তকমা দিয়েছেন।
প্রতিপক্ষ ভারতীয় শিবিরে রয়েছে ব্যাটিংয়ের শক্তি। এতসব পরিসংখ্যান, ফেবারিটের তকমা কোনোকিছুই আমলে নিতে চান না ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি।
কোহলি একাই যেকোনো সময় বদলে দিতে সক্ষম ম্যাচের চিত্র। এশিয়াকাপে ভারত পাকিস্তানের কাছে হেরে বিদায় নিলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে পিছিয়ে নেই এই তরুণ ব্যাটসম্যান। সঙ্গে রয়েছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এক ওভারে ছয় ছক্কা হাঁকানো পরীক্ষিত ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং।
ইংলিশ পেসার স্টুর্য়াট ব্রডের এক ওভারে ৩৬ রানের ওই ওভারের কথা মনে পড়লে আজো যেকোনো বোলারের বুকে কাঁপন ধরে। যেকোনো সময় ঝলসে উঠতে পারেন সুরেশ রায়না, শিখর ধাওয়ান কিংবা রোহিত শর্মার মতো ব্যাটসম্যান। আর অগ্নিমূর্তির রেকর্ড রয়েছে স্বয়ং অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির।
২০১১ এর ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেতৃত্ব, ব্যাটিং ও কিপিং দিয়ে তা প্রমাণও করেছেন তিনি।
এতো এতো পরিসংখ্যান কিংবা ফেবারিট তত্ত্ব নিয়ে যতই আলোচনা হোক না কেন পাকিস্তানের সোহেল তানভীর ও ভারতের বিরাট কোহলির মতে ওই নির্দিষ্ট দিনে যে ভালো খেলবে সেই জিতবে। এখন অপেক্ষা ম্যাচ ও ক্ষণের।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৪