ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

ক্রিকেট

রান তাড়ায় নতুন রেকর্ড টাইগারদের

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
রান তাড়ায় নতুন রেকর্ড টাইগারদের ছবি: শোয়েব মিথুন ও মানজারুল ইসলাম / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ক্রিকেটের দ্রুততম সংস্করণেও ‘খোলস’ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে টাইগার বাহিনী। সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রান তাড়া করে জেতার নতুন রেকর্ড টাইগারদের সেই ‘গর্জনই’ শুনছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

মার্চে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এ ‘গর্জন’ আয়োজক শিবিরেও জ্বালিয়ে দিচ্ছে সাহসের বাতি।

খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ওয়ালটন চার ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ জিতেছে সর্বোচ্চ ১৬৪ রান তাড়া করে। অথচ, বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যকার টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ১৬০ রান তুলে হারতে হয়নি কোনো দলকে। সে বিবেচনায় প্রথমে ব্যাট করে ১৬৩ রান সংগ্রহ করা জিম্বাবুয়ের জন্য ‘জয় নিশ্চিত’ বলে ধরাটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ক্রমে পরাশক্তি হয়ে ওঠা বাংলাদেশ সেই ‘ধরাটা’কে ‘স্বাভাবিক’ হতে দিল না। দৃঢ় ব্যাটিংয়ে ৮ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে গেল এ রানের গণ্ডি।

শুক্রবারের এ ম্যাচের আগে একবারই ১৬০ রানের বেশি তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ। ‘ঐতিহাসিক’ সেই ম্যাচটি ছিল ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, প্রতিপক্ষ ওয়ানডের সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

অবশ্য এরপর ২০১৩ সালে কাছাকাছি গিয়েও হেরে যায় টাইগাররা। ম্যাচে জিম্বাবুয়ের ১৬৮ রানের জবাবে বাংলাদেশ তুলেছিল ১৬২ রান। ওই সিরিজের পরের ম্যাচেই বাংলাদেশের ১৬৮ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ১৩৪ রান করতে সক্ষম হয়।

পুরনো এই হিসাব সামনে থাকলেও টাইগার ক্রিকেটপ্রেমীরা ধরেই ছিলেন, ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের পর ধারাবাহিক ফর্মে থাকা লাল-সবুজের দলের কাছে ১৬৩ রান ‘নিরাপদ’ নয়। হলোও তাই। তা করলেন সাকিব-তামিম-মুশফিক-সাব্বিররা। তাদের দাপুটে জয় আবারও সফরকারীদের ‘রিক্ত হস্তে’ বিদায়ের ইঙ্গিত বলে উচ্ছ্বসিত হচ্ছেন টাইগার ভক্তরা।

ওয়ালটন টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুক্রবারের ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ‍জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এলটন চিগম্বুরা। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে তা প্রমাণ করেন ওপেনিংয়ে নামা সিবান্দা ও মাসাকাদজা। তাদের দু’জনের ১০১ রানের জুটি টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ স্কোর।

১১তম ওভারে সাকিবের বলে সিবান্দা ফিরে গেলেও তৃতীয় স্থানে নামা ওয়ালার ১৪ রান করলেও সাত উইকেট খরচা করা দলটির আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পারেনি। অবশ্য এক প্রান্ত আগলে রাখা মাসাকাদজা ৫৩ বলে ৭৯ রান করে একাই সব সামাল দেন।

জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংয়ের অপরপ্রান্তে নিয়মিত আসা-যাওয়া থাকলেও মাসাকাদজার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রানের খাতা ছিল সচল। অধিনায়ক মাশরাফি ছয় বোলার ব্যবহার করলেও ১৭ ওভার পর্যন্ত কেউই সুবিধা করতে পারেননি।

সফরকারীদের রানের ধারাবাহিকতায় স্কোরবোর্ডে ১৮০ রানের মতো যোগ হতে পারে, এমন সম্ভাবনার মধ্যে দলীয় ১৫০ রানে বিদায় নেন মাসাকাদজা। এ অবস্থায় চিগম্বুরা ও জঙ্গেকে বোল্ড করে চতুর্থবারের মতো হ্যাটট্রিকের দুয়ারে এসে সফরকারীদের রানের খাতা আটকে দেন মুস্তাফিজ। আর শেষ বলে উইলিয়ামসকে বোল্ড করে ইনিংসের দ্বিতীয় সফল বোলারের স্বাক্ষর রাখেন আল-আমিন।

ম্যাচে জিম্বাবুয়ের সিবান্দার একটি ছক্কাকে ‘ক্যাচ’ বানাতে বাউন্ডারি লাইনে সৌম্য সরকারের কয়েক দফায় ‘লম্পঝম্ফ’ ছিল মজার দৃশ্য। যদিও বাংলাদেশি এ ফিল্ডারের এমন প্রচেষ্টাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ধারাভাষ্যকাররা।

বাংলাদেশ পারবে তো? এমন আশঙ্কার মেঘ যখন ঘুরপাক খাচ্ছিল খুলনার আকাশে, তখন ব্যাট করতে অনেকটা দূর করে দেন দুই ওপেনার তামিম-সৌম্য। ভুল বোঝাবুঝিতে সৌম্য রানআউট হলে তৃতীয় স্থানে ব্যাট করতে নেমে জ্বলে ওঠেন সাব্বির। তার ৩৬ বলে ৪৬‍ রানের ঝড়ো ইনিংসের সঙ্গে মুশফিক-সাকিবের দায়িত্বশীল ব্যাটিং টাইগারদের দাপুটে জয় এনে দেয়।

জিম্বাবুইয়ান জঙ্গে ‘ডাক’ হয়ে সাজঘরে ফিরলেও টাইগার কোনো ব্যাটসম্যানকে ‘শূন্য হাতে’ ফিরতে হয়নি। অভিষিক্ত শুভাগত হোমেরও ছিল স্কোরবোর্ডে অবদান।

অভিষেকে নিজের মাঠে এমন দাপুটে জয় ‘স্মৃতির পাতায়’ তুলে রাখতেই পারেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
জেডএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।