ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ইংলিশদের কষ্টার্জিত সিরিজ জয়

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৬
ইংলিশদের কষ্টার্জিত সিরিজ জয় ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে: তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় ‘অলিখিত ফাইনাল’। আর সেই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ২-১ এ সিরিজ জিতে নিল সফরকারী ইংল্যান্ড।

প্রথম ওয়ানডেতে ইংলিশরা জিতলেও দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরায় বাংলাদেশ।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ২৭৭ রান। মুশফিকুর রহিম, সাব্বির, ইমরুল কায়েস আর তামিম ইকবালের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ গড়ে টাইগাররা। জবাবে, ৪ উইকেট হাতে রেখে ৪৭.৫ ওভার ব্যাট করে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।

বুধবার (১২ অক্টোবর) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচটির টস নির্ধারিত সময়ের কিছু পরে অনুষ্ঠিত হয়। স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে টস জেতে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ইংলিশ দলপতি জস বাটলার।

ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরুর আভাস দেন টাইগারদের দুই সেরা ওপেনার ১৫৯তম ওয়ানডে খেলতে নামা তামিম এবং ৬২তম ওয়ানডে খেলতে নামা ইমরুল। ইনিংসের শুরু থেকে বেশ সতর্ক হয়েই ব্যাট চালান এই দুই ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে ৪২ রান।

তবে, দারুণ শুরুর পরও ইনিংসের ১৯তম ওভারে বেন স্টোকসের বলে স্কয়ার লেগে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ৫৮ বলে ৪৬ রান করা ইমরুল। তার ইনিংসে ছিল চারটি চার আর একটি ছক্কা। দলীয় ৮০ রানের মাথায় বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। ওপেনার ইমরুলের পর বিদায় নেন তামিম ইকবাল। ইনিংসের ২৩তম ওভারে ব্যক্তিগত ৪৫ রান করে আদিল রশিদের শিকার হন তামিম। তার ৬৮ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চারের মার।

দলীয় ১২২ রানের মাথায় বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আদিল রশিদের করা ২৫তম ওভারে বেয়ারস্টোর হাতে ধরা পড়েন ৭ বলে ৬ রান করা রিয়াদ।

এক রানের জন্য অর্ধশতক বঞ্চিত হন সাব্বির রহমান (৪৯)। ৩৩তম ওভারে অাদিল রশিদের বলে জস বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। তার আগে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৫৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন এ ‘মারকুটে’ ব্যাটসম্যান। সাব্বিরের বিদায়ে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ইনিংসের ৩৬তম ওভারে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন সাকিব। ব্যক্তিগত ৪ রান করে মঈন আলীর বলে বিদায় নেন সাকিব। দলীয় ১৮৪ রানের মাথায় টাইগারদের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে। এরপর ইনিংসের ৩৯তম ওভারে আদিল রশিদের করা প্রথম বলে বিদায় নেন ৪ রান করা নাসির হোসেন। মিড উইকেটে ভিঞ্চের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন নাসির।

এরপর জুটি গড়েন মুশফিক আর মোসাদ্দেক। এই জুটি থেকে আসে ৮৫ রান। ইনিংসের ৪৭তম ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৩তম অর্ধশতক স্পর্শ করেন রান মেশিন খ্যাত মুশফিক। টাইগার এই ব্যাটসম্যান ৬৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। মুশফিক তার ৬২ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন চারটি চার আর একটি ছক্কায়। মোসাদ্দেক ৩৯ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন।

স্বাগতিক বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২৭৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামে সফরকারী ইংল্যান্ড। টাইগারদের হয়ে বোলিং শুরু করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রথম ওভার থেকে কোনো রানই তুলে নিতে পারেননি ইংলিশ ওপেনার ব্যাটসম্যান জেমস ভিন্স। দলীয় ৬৩ রানের মাথায় ইংলিশরা তাদের প্রথম উইকেট হারায়। ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন নাসির হোসেন। ৩৭ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩২ রান করে ইনিংসের ১২তম ওভারে এলবির ফাঁদে পড়েন জেমস ভিন্স।

এরপর জুটি গড়েন স্যাম বিলিংস এবং বেন ডাকেট। এই জুটি থেকে আসে আরও ৬৪ রান। টাইগারদের গলার কাঁটা হয়ে থাকা বিলিংসকে ইনিংসের ২৫তম ওভারে ফিরিয়ে দেন মোসাদ্দেক। তার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইমরুলের হাতে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ৬৯ বলে চারটি চার আর একটি ছক্কায় ৬২ রান করা বিলিংস।

ইনিংসের ৩২তম ওভারে আক্রমণে আসেন শফিউল। টাইগার এই পেসার নিজের দ্বিতীয় বলেই ক্লিন বোল্ড করেন বেয়ারস্টোকে। ১৮ বলে ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান। দলীয় ১৭২ রানের মাথায় ইংল্যান্ড তাদের তৃতীয় উইকেট হারায়।

এর ওভার পরেই বেন ডাকেটকে ফিরিয়ে দেন শফিউল। উইকেটে সেট হয়ে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হতে থাকা ডাকেট ৬৮ বলে চারটি চার আর একটি ছক্কায় ৬৩ রান করে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন। মুশফিক দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দেন ডাকেটকে। দলীয় ১৭৯ রানের মাথায় ইংলিশদের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে।

আবারো টাইগারদের অপেক্ষায় থাকতে হয়। ইনিংসের ৪১তম ওভারে ব্রেক থ্রু আনেন মাশরাফি। বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন ইংলিশ দলপতি বাটলারকে। ২৬ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে ২৫ রান করে ফেরেন বাটলার। বাটলার-স্টোকস জুটি থেকে আসে আরও ৪৮ রান। এক ওভার পর মাশরাফি ফিরিয়ে দেন মঈন আলীকে। আর এই উইকেট দখলের মধ্যদিয়ে মাশরাফি টাইগারদের জার্সি গায়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হন। ২৩৬ রানের মাথায় ইংলিশদের ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে।

তবে, উইকেট আগলে রেখে ক্রিস ওকস ১৮ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় করেন অপরাজিত ২৭ রান। আর ৪৮ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় অপরাজিত ৪৭ রান করেন বেন স্টোকস। শেষ ৩২ বলে এই জুটি অবিচ্ছিন্ন থাকেন ৪২ রান করে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৪ ঘণ্টা, ১২ অক্টোবর ২০১৬
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।