২০১১ সালে ক্রিকেটের তিন ফরমেটে টাইগারদের অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তিন বছর যেতে না যেতেই রঙিন পোশাকের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার কাছে।
টেস্ট ক্রিকেটে ৭ বছর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এসে তার সমাপ্তি দেখছিলেন অনেকেই। তবে, দ্বিতীয় ম্যাচের পর মুশফিক জানালেন, নিজে থেকে অধিনায়কত্ব ছাড়বেন না তিনি। বোর্ড থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেটি মেনে নেবেন। তিনি জানান, ‘আমাকে সরানো হবে কি না এই সিদ্ধান্তের ভার বোর্ডের ওপর। তারাই আমাকে এই সম্মান, দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার জন্য অনেক সম্মানের। আমি গর্বিত। আমি সততার সঙ্গে আমার সেরা চেষ্টা করেছি। তারা যদি সন্তুষ্ট না হয় তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমি মেনে নেব। ’
দক্ষিণ আফ্রিকায় চলতি সিরিজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের টেস্টের দ্বিতীয় ও শেষটিতে লজ্জার ইনিংস পরাজয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি এসব বলেন।
মূলত মুশফিকের নেতৃত্ব ছাড়ার প্রশ্নে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে চলতি সিরিজে ক্রমাগত ভুল সিদ্ধান্তে ম্যাচ শেষে নির্মম হার এবং সংবাদ সম্মেলনে এসে টিম ম্যানেজমেন্টের অবান্তর কর্মকাণ্ড ও সতীর্থদের ভুল ভ্রান্তির কথা তুলে ধরা। মুশফিক আরও যোগ করেন, ‘অবশ্যই অধিনায়ক হিসেবে সব ব্যর্থতায় দায় আমি নিচ্ছি। সরিয়ে দেওয়াটা হবে বোর্ডের সিদ্ধান্ত। কারণ, তারাই আমাকে এনেছে। নিজে থেকে আমি কেন সরে যাব? এটা তো ব্যক্তিগত কোনো খেলা না, দলীয় খেলা। ’
তবে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, সাদা পোশাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে মুশফিকুর রহিমের হাত ধরেই। টেস্টে টাইগারদের এযাবৎকালে পাওয়া ১০ জয়ের ৭টিই এসছে তার নেতৃত্বে। ব্লুমফন্টেইন টেস্টের আগে মোট ৩৩টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ৭ জয়ের পাশাপাশি ড্র করেছে ৯টিতে। আর হার ১৭টিতে।
টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে অবিস্মরণীয় জয়গুলোও এসেছে মুশফিকের অধীনেই। গেল বছর ঢাকায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়, মার্চে শ্রীলঙ্কায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে নিজেদের শততম টেস্ট জয় এবং আগস্টে ঢাকায় শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া বধের দলপতি কিন্তু তিনিই। কিন্তু চলতি সিরিজে দুর্ভাগা ছিলেন মুশফিক।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে সবই ছিল প্রতিকূলে। দুই টেস্টেই দলের ব্যাটিং ও বোলিংয়ের দুর্দশা দেখেছে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। মুশফিক নিজেও ছিলেন না ছন্দে। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ৪৪ ও ১৬ রান সংগ্রহ করা এই টেস্ট অধিনায়ক দ্বিতীয় ম্যাচের দুই ইনিংসে করেছেন ৭ ও ২৬ রান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, ৮ অক্টোবর ২০১৭
এইচএল/এমআরপি