জয়ের জন্য ঢাকা তখন মাত্র ৪ রান দূরে, হাতে বল আছে ২টি। ম্যাচের এমন উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় ১৯তম ওভারে কার্লোস ব্র্যাথওয়েইটের ৫ম ডেলিভারি রিভার্স স্কুপ করে থার্ডম্যানে ঠেলে দিয়েই শুরু করে দিলেন জয়ের উদযাপন।
প্রথমবারের মতো খেলা সেই শটের অভিজ্ঞার কথাই ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে সংবাদ মাধ্যমের সাথে শেয়ার করলেন এই ব্যাটসম্যান, ‘প্রথম দুটি বল আমি স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে (ব্র্যাথওয়েইট) নরম্যালি একটু দ্রুতগতির এবং ইয়র্কারগুলো প্রায় নিখুঁত। চার মারার চিন্তা আমার ভুল ছিল। যদি এক রানের চিন্তা করতাম, তাহলে ব্যাটে লাগত। পরে চিন্তা করেছি, যেহেতু দুটি বলে ইয়র্কার করে সফল হয়েছে, আবারও ইয়র্কার করবে। আমি তাই গ্যাম্বলিংয়ের মতো চিন্তা করলাম যে থার্ডম্যান যেহেতু ওপরে, সেদিক দিয়ে উল্টো স্কুপ করব। আগে এটা কোনোদিন খেলিনি ম্যাচে। অনুশীলনে চেষ্টা করি। ম্যাচে এটিই প্রথম। ’সন্দেহ নেই ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো খেলা শটটিতে দারুণ রোমাঞ্চিত জহুরুল। রোমাঞ্চের পাশাপাশি তার উচ্ছ্বাসেরও কমতি নেই। কেননা বিপিএলে বিদেশি প্লেয়ারদের ডামাডোলে যখন দেশি প্লেয়াররা নিজেদের প্রমাণের সুযোগেই পাচ্ছেন না, তখন ৩৯ বলে ব্যক্তিগত ৪৫ রানের এমন দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে ৩০ বছর বয়সী এই ওপেনিং ব্যটসম্যান প্রমাণ করলেন দেশিরা এখনও ফুরিয়ে যাননি। ওপেনিং ব্যাটসম্যান হয়েও ৬ নম্বরে নেমে নিজের খেলাটা ঠিকই খেলেছেন ডায়নামাইটসদের এই অলরাউন্ডার। তাইতো তার এমন উচ্ছ্বাস।
তিনি জানালেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। আমাদের যে ব্যাটিং লাইন আপ, এখানে সুযোগ পাওয়া খুবই কঠিন। স্থানীয়রা খুব একটা সুযোগই পায়নি আগে। কারণ বিদেশিদের শক্তির জায়গা বেশি, টি-টোয়েন্টিতে ওরা খুবই ভালো ব্যাটসম্যান। আজকে ১৫৭ রান তাড়ায় এতো মারার দরকার ছিল না। একটু ধীরগতির শুরু হলেও আমাদের ব্যাটসম্যানদের যে সামর্থ্য, রানটা পরে পুষিয়ে নেওয়া যেত। আজকে প্রথমবার বড় চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। ২৪ রানে ৪ উইকেট ছিল, আমি যখন নামলাম। আমাদের মতো ক্রিকেটারদের জন্য এটি একটি সুযোগ শেষ পর্যন্ত খেলা। ’আর সেই সুযোগটি যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে বিপিএলের তৃতীয় জয় এনে দিয়ে সিলেটকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে এনে দেন জহুরুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, ১৪ নভেম্বর ২০১৭
এইচএল/এমআরপি