ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ক্রিকেট

আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তোষ কমছে না

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তোষ কমছে না ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের দাবি শুধু বাংলাদেশেরই না বিশ্বের সকল ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর মধ্যে বিপিএল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসর। কিন্তু এই আসরের মান নিয়ে বারবারই প্রশ্ন উঠেছে। তার মধ্যে আম্পায়ারিং ছিলো অন্যতম। বিগত বছরগুলোতে আম্পায়ারিং নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যা গড়িয়েছে মারামারি পর্যন্ত।

বিপিএলের চলতি আসরের শুরুর দিকে মনে হয়েছিল বাজে আম্পায়ারিংয়ের দৃষ্টান্ত এবার আর থাকছে না। নির্ভেজাল কাটবে, কোনো প্লেয়ারকে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের বলি হয়ে ক্রিজ ছাড়া হতে হবে না।

কিন্তু হলো না। বিপিএল যতই শেষের দিকে এসেছে, যেন বাজে আম্পায়ারিংয়ের প্রবণতা ততই বেড়ে চলেছে। জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত বুধবার (৬ ডিসেম্বর) গ্রুপ পর্বে রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ডায়নামাইটসের মধ্যকার শেষ ম্যাচটি।

যেখানে একটি নয় আম্পায়ারের তিন তিনটি ভুল সিদ্ধান্তের বলি হতে হয়েছে রংপুর রাইডার্সের তিন ব্যাটসম্যানকে। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তেই এদিন ঢাকার ছুঁড়ে দেয়া ১৩৮ রানের মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯৪ রানে গুটিয়ে গেল রংপুরের ইনিংস। তা না হলে ম্যাচের গল্প হয়তো অন্যরকম হতে পারতো।

রংপুরের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাট চালাচ্ছিলেন জনসন চার্লস। দলীয় ৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে তার ব্যাটেই ভরসা করছিলো রংপুর।  উইকেটেও বেশ ভালই মানিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক তখনই নাদির শাহ যেভাবে এলবি বলে দিলেন   তাতে তার ক্রিকেটীয় জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কেননা বলটি লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে ফেলেছিলেন ঢাকা পেসার আবু হায়দার রনি। আর সেই বলকেই কিনা তিনি আউট দিয়ে দিলেন!

আম্পায়াররা এখানে থামলে হতো। কিন্তু থামেননি। রংপুরের আরেক নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফীসের আউটটি দিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন।

সপ্তম ওভারে আবু হায়দার রনির শেষ বলটি নাফিসের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক জহুরুলের ইসলামের গ্লাভসে গেলেও তা জমাতে পারেননি জহুরুল। তখন গ্লাভসের বাইরেও বলের একটি অংশ মাটি স্পর্শ করেছিলো। পরে তা তুলে আউটের আবেদন করেন জহুরুল। সফট সিগন্যাল আউট দিয়ে ফিল্ড আম্পায়ার টিভি আম্পায়ার মনিরুজ্জামানের কাছে পাঠান। টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখার পর আউট ঘোষণা করেন।

অথচ বেনিফিট অব দ্য ডাউট কিন্তু ব্যাটসম্যানের পক্ষেই যায়। নাফিসের পর রংপুরের আরেক ব্যাটসম্যান মো: মিঠুনের এলবি’র সিদ্ধান্তও ভুল দিয়েছেন আম্পায়াররা।

বিষয়টি ভাল চোখে দেখেননি রংপুর রাইডার্সের কিউই ওপেনার ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম, ‘আমার মনে হয়েছে আম্পায়ারিং আরও ভালো হওয়া উচিত। এ রকম উইকেটে সিদ্ধান্ত আপনার পক্ষে না গেলে বড় মূল্য দিতে হয়। জনসন চার্লস যেমন আজ খুব ভালো খেলছিল। বিশেষ করে কয়েক ম্যাচ বসে থাকার পর। সে (চার্লস) আজ শেষ পর্যন্ত খেলতে পারত। আমার মনে হয়েছে ব্যাটিংয়ে কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের পক্ষে যেতে পারত। ’

এক ম্যাচে আম্পায়ারদের তিনটি ভুল সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ রংপুর রাইডার্স টিম ম্যানেজমেন্টও। দলের সিইও ইশতিয়াক সাদিক তেমনটিই জানালেন, ‘আমরা একটি অভিযোগ পত্র বিসিবি’র গভর্নিং বডি বরাবর পাঠাচ্ছি। ’

শুধু এই ম্যাচেই কেন? বুধবার (৬ ডিসেম্বর) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও সিলেট সিক্সার্সের মধ্যকার ম্যাচে ভিক্টোরিয়ান্সদের দেয়া ১৭০ রান তাড়া করতে নেমে সেই আম্পায়ারের ভুলে পাক ওপেনার রিজওয়ানের উইকেট হারায় সিলেট।

ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে মেহেদির শেষ বলটি সুইপ করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত হানে তার প্যাডে। আম্পায়ার মনিরুজ্জামান প্রথম দিকে সাড়া না দিলেও পরে বোলারের আবেদনের মুখে এলবি’র সিদ্ধান্ত দেন।

এমন একটি টুর্নামেন্টে সবসময়ই দাবি থাকে আম্পায়ারিং সুষ্ঠ হবে। কিন্তু যখনই তা না হয় তখনই প্রতিপক্ষ এমনকি দর্শক মনেও ক্ষোভের তৈরি হয়। তারা ধরে নেয় কোন একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দিতেই আম্পায়াররা এমন সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।

এত করে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয় ভাঙ্গে। সমালোচনা তাদের মুখে মুখে ফেরে। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকলে একটি সময় মুখ থুবরে পড়তে পারে বিপিএলের জনপ্রিয়তা। যা আখেরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্যই হুমকি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭
এইচএল/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।