ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মাশরাফিকে ফলো করলেই হয়

মহিবুর রহমান, স্পেশাল করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৮
মাশরাফিকে ফলো করলেই হয় ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ ক্রিকেটের তরুণ পেস বোলারদের ইদানিং যেন কী একটা হয়েছে। বল ছুঁড়ছেন বেশ জোরেসোরেই কিন্তু ব্যাটসম্যানদের কঠিন সময় উপহার দিতে পারছেন না। উইকেট দূরে থাক, নুন্যতম সুযোগও তৈরি করতে পারছেন কই? ওয়ানডেতে ১০ ওভারে হাতে গোনা ১০টি কার্যকর ডেলিভারিও যদি পারতেন!

বাংলাদেশ ক্রিকেটের ওয়ানডে দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা প্রায়শই একটি কথা বলেন‘ ক্রিকেট একটি মাইন্ড গেম। ’  আমি নিশ্চিত একমাত্র মোস্তাফিজ ছাড়া চিরন্তন সত্য এই কথাটি এ দেশের তরুণ পেসাররা জানেনই না।

আর যদি জেনেও থাকেন, মানেন না। যদি মানতেন তাহলে প্রতিপক্ষের যে ব্যাটসম্যানটি শর্ট বলে শক্তিশালী, সেটা বোঝা সত্বেও তাকে ওই ডেলিভারিটি আর কখনোই দিতেন না। ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমগেল বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে শুরু করে সদ্য সমাপ্ত ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কা সিরিজে টাইগার পেসারদের দৈন্যতা ছিল চোখে পড়ার মতো। হতাশার বিষয় হলো কোর্টনি ওয়ালশের মতো বিশ্বমানের একজন কোচ থাকা সত্বেও তারা আজও সঠিক লাইন ও লেংথ খুঁজে পেয়েছে বলে মনে হয়নি। ফলে দিন শেষে তাদের নামের পাশে দু’একটি উইকেট ঘটনাক্রমে লেখা থাকলেও থাকেন ভীষণ ব্যয়বহুল।

পেস বলে কতো রকমের বৈচিত্র থাকে, সুইং, কাটার, ইয়র্কার, বাউন্সার, এর কোনটি তারা এই দুই সিরিজে দিতে পেরেছে তা বোধ করি কেউই মনে করতে পারবেন না। আর পেসারদের স্বভাবসুলভ যে আক্রমণাত্মক ভঙ্গি, সেটাতো একেবারেই নেই। যা দিন শেষে দেশকে হারের গ্লানি ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারে না। ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমঅথচ মাশরাফিকে দেখুন। বয়স ৩৪ পেরিয়ে ৩৫ এর দিকে হাঁটতে শুরু করেছে, হাঁটুতে ৮ বার অস্ত্রোপচার হয়েছে অথচ বল হাতে আজও তিনি ব্যাটসম্যানদের জন্য মূর্তমান ত্রাস। অতটা গতি তার বলে নেই। কিন্তু এখনও তার লাইন ও লেংথ কতটা নিখুঁত! তার প্রতিটি বলই ব্যাটসম্যানকে পপিং ক্রিজে অব্যাহতভাবে কঠিন সময় উপহার দিতে থাকে।

একজন বোলারের স্বার্থকতা শুধু উইকেটেই নয়। রানের হিসেবেও। ধরেন ওয়ানডেতে ১০ ওভার বল শেষে কারো নামের পাশে কোনো উইকেট নেই, কিন্তু দিয়েছেন ২৫ কিবা ৩০ রান। সেটাই বা কম কিসে?  মূল ব্যাপারটি হলো আপনি প্রতিপক্ষের রানের লাগাম শক্ত হাতে ধরতে পেরেছেন কী না। যেটা আজও মাশারাফি করে থাকেন। ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমত্রিদেশীয় সিরিজের পর ঘরোয়া ক্রিকেটের চলতি মৌসুমে আবাহনীর হয়ে তার আগুন ঝড়ানো বোলিংয়ে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে মুগ্ধতা দিন দিন বাড়ছে, বৈ কমছে না। তাই এদেশের তরুণ পেসারদের আকারে ইঙ্গিতে তাকেই অনুসরণ করার পরামর্শ দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধান মোহাম্মদ জালাল ইউনুস।

‘মাশরাফি সাংঘাতিক মাথা খাটিয়ে বল করে। তার কি আগের মতো পেস আছে? ১২৭ কিংবা ১২৮। বাট হি বিটিং এভরি ব্যাটসম্যান। সে সাফল্য পাচ্ছে কারণ ও হিটিং অন দ্য রাইট লাইন এন্ড রাইট লেন্থ। ও ব্যাটসম্যানকে রুমই দেয় না। যদি রুমই না দেন তাহলে খেলবে কিভাবে। ও কিন্তু ঠিকই ব্যাটসম্যানকে রিড করে বোলিং করে। জোরে করছে না কিন্তু জানে যে কোথায় ফেললে বল ভালো হবে। তরুণরা এই জায়গাটাতেই পিছিয়ে। আপনাকে ব্যাটসম্যানকে রিড করে বোলিং করতে হবে। ’ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম‘মাঠে কিভাবে কি ধরনের বোলিং করতে হবে সেটা আপনাকে জানতে হবে। আপনি বোলিং করলেন ১০ ওভার। ওখানে ৩০ রানে যদি কোনো উইকেট নাও পান তারপরও তো ভালো বোলিং। এতে তো ব্যাটসম্যানরা প্রেসারে থাকবে। ওই প্রেসারে অন্য কেউ উইকেট পাচ্ছে। ’-যোগ করেন জালাল ইউনুস।

জালাল ইউনুসের কথাগুলো দয়া করে তাসকিন, আবু হায়দার, আবু জায়েদরা আমলে নিলে আখেরে তা দেশের জন্যেই ভাল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, ৫ মার্চ, ২০১৮
এইচএল/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।