অথচ এ নিয়ে মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ফাইনালের মঞ্চে শেষ হাসি কে হাসবে তা নিয়েই ছিল নানা উৎকন্ঠা, নানা প্রশ্ন। উত্তরটার জন্য মাঠে লড়েছে দুই ফাইনালিস্ট ঢাকা ডায়নামাইটস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
২০০ রানের পাহাড়সম টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান সুনীল নারাইন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে উপুল থারাঙ্গার সাথে জুটি বাঁধেন রনি তালুকদার। দু’জনেই ব্যাট চালাতে থাকেন সাবলিল ভঙ্গিতে। কঠিন ম্যাচটিকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ৬ ওভারে তোলেন ৭১ রান। থারাঙ্গা-রনির জুটি থেকে আসে ৫২ বলে ১০২ রান। ২২ বলে ৩৯ রানে ইনিংস খেলে আউট হন উপুল থারাঙ্গা। তবে রনি তালুকদার ২৬ বলে তুলে নেন অর্ধ-শতক।
থারাঙ্গা-রনির সাথে তাল মেলাতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৫ রান করে দলীয় ১২০ রানে ওহাব রিয়াজের বলে সাজঘরে ফেরত যান সাকিব। দলীয় ১২১ রানে ৩৮ বলে ৬৬ রানে করে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন রনি তালুকদার। আন্দ্রে রাসেল ৪ রান করে বিদায় নিলে বিপদের আভাস পায় ঢাকা ডায়নামাইটস। সেই বিপদ নামক শব্দটি আরোও স্পষ্ট হয় কাইরন পোলার্ডের বিদায়ে। ১৫ রান করে ওহাব রিয়াজের বলে তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন পোলার্ড।
স্কোর বোর্ডে তখন ৬ উইকেটে ১৪১ রান। শুভাগত হোম শূন্য রানে আউট হলে শেষ হয়ে যায় ঢাকা ডায়নামাইটসের জয়ের আশা। শেষ দিকে নুরুল হাসান ও মাহমুদুল হাসান ব্যাট চালিয়ে রান পেলেও পরাজয়ের ব্যবধান কমানো ছাড়া সেই রান কোনো কাজে আসেনি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার প্রয়োজন ছিল ২২ রান। ৯ উইকেট ১৮২ রানে থেমে যায় ঢাকা ডায়নামাইটসের ইনিংস।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কুমিল্লার ইনিংসে আঘাত করেন রুবেল হোসেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার এভিন লুইসকে এলবি ডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন তিনি। তবে রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি লুইস। দ্বিতীয় উইকেটে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। ৮৯ রানে আসে তামিম-বিজয়ের ব্যাট থেকে। তামিম বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন। ৩১ বলে অর্ধশতক তুলে নেন তামিম। আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ব্যক্তিগত ২৪ রান করে দলীয় ৯৮ রানে আউট হন বিজয়। রান আউট হয়ে দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরত যান শামুসর রহমান। এরপরই মিরপুরে নেমে আসে তামিম ঝড়। ঢাকার বেলারদের ওপর ব্যাট হাতে শাসন করতে থাকেন তামিম। স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছোটাতে থাকেন তামিম। তুলে নেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরি। প্রথম পঞ্চাশ করতে যেখানে বল খেলেছেন ৩১টি সেখানে দ্বিতীয় পঞ্চাশ করতে বল খেলেছেন ১৯টি।
১০টি চার ও ১১টি ছক্কার সাহায্যে ৫০ বলে তুলে নেন এবারে বিপিএলের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। প্রথমবার ফাইনাল খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি পেলেন তামিম। স্ট্রাইক রেট ছিল ২৩১.১৪। থিসারা পেরেরা, শহীদ আফ্রিদির মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে নামার সুযোগই দেননি তামিম। তামিমের ৬১ বলে ১৪১ রানের ক্যারিয়ার সেরা টি-টোয়েন্টি টর্নেডো ইনিংসে ভর করে ২০ ওভারে ১৯৯ রানে বিশাল স্কোর দাড় করায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিধ্বংসী ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরা হন তামিম ইকবাল। তবে ২৩ উইকেট নিয়ে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়ে টুর্নামেন্ট সেরা হন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৮ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৯
আরএআর/এমএমএস