চতুর্থ টেস্টের আগে বড় বিপাকে পড়েছে ভারতীয় দল। এমনিতেই দলে ইনজুরির ছড়াছড়ি।
এত এত কঠোর নিয়মের বেড়াজালে হতাশায় ভুগছে সফরকারী দল। এমনটাই জানিয়েছে 'ইএসপিএনক্রিকইনফো'।
আগামী শুক্রবার ব্রিসবেনের গাব্বায় অজিদের মুখোমুখি হবে ভারত। এর আগে সেখানকার টিম হোটেলে পৌঁছেই বন্দি হয়ে গেছেন আজিঙ্কা রাহানেরা। করোনা মহামারির কারণে পুরো ব্রিসবেনে এখন কঠোর লকডাউন চলছে। এর মধ্যেই দুদিন পর শুরু হচ্ছে সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট। এরইমধ্যে ভারতীয় দলের মতোই টিম হোটেলে 'বন্দি' হয়ে আছে অজিরাও।
কঠোর করোনাবিধির কারণে ব্রিসবেন সফর নিয়ে আগেই আপত্তি তুলেছিল ভারতীয় দল। নভেম্বরে সিডনিতে পৌঁছানোর পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে কাটানোর ধাক্কাই এখনও সামলে ওঠতে পারেনি সফরকারী দল। এখন আবার ব্রিসবেনেও হোটেলে বন্দি থাকতে হচ্ছে।
তবে দীর্ঘ আলোচনা শেষে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড)-কে করোনাবিধিতে কিছুটা ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, ভারতীয় দল হোটেলের বাইরে যেতে না পারলেও টিম রুমে একসঙ্গে আলোচনা করতে পারবে। এজন্যই ব্রিসবেন সফরে যেতে রাজি হয়েছে ভারতীয় দল।
দুই বোর্ড একমত হওয়ার পর ব্রিসবেনে পৌঁছেই চক্ষু চড়কগাছ ভারতীয়দের। কারণ টিম হোটেলে পৌঁছে তারা আবিষ্কার করে সেখানে কোনো হাউসকিপিং নেই। ভারতীয় দলের একাধিক সদস্য অভিযোগ করেছেন, হোটেলে তাদের কীভাবে থাকতে হবে তা নিয়ে কোনো নির্দেশনা আগে থেকে দেওয়া হয়নি। সিডনিতে যদিও খেলোয়াড়রা একজন আরেকজনের রুমে যেতে পারতেন না, কিন্তু সেখানে অন্তত সেখানে তাদের জন্য রুম সার্ভিস ও হাউসকিপিং সুবিধা ছিল। এখানে সেটাও নেই।
ভারতীয় দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য জানিয়েছেন, ব্রিসবেনের টিম হোটেলে একটা জিম আছে, কিন্তু একেবারেই সাধারণ মানের। এখানে কোনো পুল নেই, রুম সার্ভিস নেই, হাউসকিপিংও নেই। ' হোটেলে কোনো রান্নাবান্নার ব্যবস্থা কিংবা বেভারেজও নেই। জানা গেছে, খাবারদাবার এক চুক্তিভিত্তিক ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু ইচ্ছেমতো খাবার বাছাইয়ের সুযোগ নেই। তবে অ্যাপসের মাধ্যমে খাবার অর্ডার করার সুযোগ অবশ্য রাখা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, হাউসকিপিং সুবিধা না রাখার কারণ হতে পারে বিসিসিআই'র পক্ষ থেকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ব্রিসবেন টেস্ট শেষেই ভারতীয় দলকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। দলের সবার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে থেকে কাউকে হোটেলে প্রবেশ না করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ব্যবস্থায় ভারতীয় দল খুশি হতে পারছে না। বিশেষ করে পরিবারসহ যারা সফর করছেন তারা কিছুতেই এত কঠোর নিয়ম মানতে পারছেন না।
ভারতীয় দলের জন্য আরও একটি বিরক্তিকর ব্যাপার হচ্ছে হোটেলের পুল ব্যবহার না করতে পারা। দলের কয়েকজন খেলোয়াড় যেমন-জসপ্রীত বুমরাহ এবং রবীচন্দ্রন অশ্বিন ইনজুরি কাটিয়ে উঠার অংশ হিসেবে সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে চান। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। অবশ্য করোনার সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থেই পুল বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এই একঘেয়ে বন্দিদশা মানতে পারছেন না রোহিতরা।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'টাইমস অব ইন্ডিয়া' জানিয়েছে, রোহিতদের এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিতে নাকি হস্তক্ষেপ করছে বিসিসিআই। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এক সিনিয়র কর্মকর্তার বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, দুই বোর্ডের মধ্যে নতুন করে আলোচনা হয়েছে। এর ফলে খেলোয়াড়রা চাইলে হোটেলের সব লিফট ব্যবহার করতে পারবেন। জিম ব্যবহার করা যাবে। সেই সঙ্গে রুম সার্ভিস ও হাউসকিপিংয়ের সুবিধাও যুক্ত হচ্ছে। তবে সুইমিং ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
এমএইচএম