ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সাড়ে ১২ কোটি, মোবাইল গ্রাহক সোয়া ১৮ কোটি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সাড়ে ১২ কোটি, মোবাইল গ্রাহক সোয়া ১৮ কোটি বক্তব্য দেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার। 

চট্টগ্রাম: ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বিটিআরসি কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার।  

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ বিষয়ে গণশুনানিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ হোটেলে এবং অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে অনুষ্ঠিত শুনানিতে গ্রাহকরা টেলিযোগাযোগ সেবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন এবং কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এসব সমস্যার বিষয়ে জবাব দেন। গণশুনানিতে অংশ নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন ৮৪৮ জন, এর মধ্যে সশরীরে ১৮২ জন, অনলাইনে ৯৪ জন এবং অন্যান্য মাধ্যমে ১৭ জন অংশ নেন।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, গণশুনানিতে যেসব অভিযোগ পাওয়া যায়, সেগুলো আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণে সহায়ক হয়। গণশুনানিতে অনেক অজানা প্রশ্ন উঠে আসে যা গ্রাহক জানতে পারে। সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়িত হয়ে গেছে।  

গণশুনানি কমিটির সভাপতি ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শ্যাম সুন্দর শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।  

তিনি বলেন, প্রতিটি গণশুনানি প্রতিষ্ঠানের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়ায় এবং গ্রাহকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে টেলিযোগাযোগ খাতে আর কতটুকু উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে কাজ করবে বিটিআরসি।  

তিনি আরো জানান, অক্টোবর ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ১২ কোটি ৬২ লাখ, মোবাইল সিম গ্রাহক সংখ্যা ১৮ কোটি ১৬ লাখ এবং ইন্টারনেট ডেনসিটি ১০৪ দশমিক ১৭ ভাগ এবং নভেম্বর ২০২২ সাল ব্যান্ডউইথ তথা ডাটার ব্যবহার হয়েছে ৮,৮৫৯ জিবিবিএস।  

গণশুনানি সংক্রান্ত উপস্থাপনা করেন সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহপরিচালক ব্রি. জে. মো. নাসিম পারভেজ।  

তিনি জানান, গ্রাহকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারনেট গতি বাড়ানোর জন্য গত ১ বছরে বিটিআরসি বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে এবং ইন্টারনেট গতি যাচাই করতে ডিভাইস কেনা হয়েছে। কল ড্রপ নিরসনে কলড্রপ ফেরতের জন্য এ বছর নতুন নির্দেশনা চালু এবং প্রতিটা কলড্রপে যা খরচ হয় তার তিনগুণ ফেরত দেওয়ার বিধান চালু করা হয়েছে।  

গ্রাহক নিজেই *১২১*১২# ডায়াল করে কলড্রপ যাচাই করতে পাবে বলেও জানান তিনি।  

এছাড়া গ্রাহকদের জন্য আনলিমিটেড ডাটা প্যাক চালু এবং ডাটা ক্যারি ফরওয়ার্ড তথা অব্যবহৃত ডাটা পরবর্তী একই প্যাকেজে ব্যবহারের জন্য ডাটা প্যাকেজ নির্দেশিকা চালু করা হয়েছে।

মোবাইল অপারেটরদের দুর্বল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট স্পিড নিয়ে অপর এক গ্রাহকের অভিযোগের জবাবে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক মো. এহসানুল কবীর বলেন, ইতোমধ্যে সব অপারেটরের বেশকিছু টাওয়ারের নেটওয়ার্ক দুর্বলতা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং অপারেটরদের সেসব টাওয়ারে নেটওয়ার্ক গতি বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

মোহাম্মদ সায়েম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রিচার্জ করলে অটোমেটিক ডাটা বান্ডেল ক্রয় হয়ে যায়।  

জবাবে সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক মো. নাসিম পারভেজ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।  

আশিক চৌধুরী নামে এক শিক্ষার্থী টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন নতুন সেবা চালুর মাধ্যমে চাকরির ক্ষেত্র বাড়ানোর উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চান। জবাবে লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেইন বলেন, বিশ্বে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সেবা চালু হচ্ছে এবং টেলিযোগাযোগ খাতের স্টেকহোল্ডার বাড়ার ফলে এ খাতে চাকরির সুযোগও বাড়ছে।  

আইটি বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল আলম চৌধুরী অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স চালুর বিষয়ে জানতে চাইলে জবাবে স্পেকট্রাম বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল আউয়াল উদ্দীন আহমেদ নতুন করে অ্যামেচার রেডিও চালুর কথা জানান।  

গণশুনানির শেষভাগে বিটিআরসির চেয়ারম্যান গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সিস্টেম সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক কর্নেল এসএম রেজাউর রহমানের সঞ্চালনায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা, বিনিয়োগসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সশরীরে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইনে টেলিযোগাযোগ সেবাগ্রহীতার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান যথা রূপে ও বিভিন্ন প্যাকেজ ভয়েস, ডাটার মূল্য এবং ইন্টারনেট সেবা সংক্রান্ত অভিযোগ, প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য টেলিকম সেবাপ্রদানকারীর সেবা সম্পর্কিত বিষয় ছিল।  

অনুষ্ঠানে কমিশনের লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসানুল কবীর, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু, স্পেকট্রাম বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল আউয়াল উদ্দীন আহমেদ এবং বিটিআরসির  কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।