ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণিল আয়োজন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩
পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণিল আয়োজন বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

চট্টগ্রাম: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দৈনিক পূর্বকোণ ৩৭ বছর ধরে পাঠকপ্রিয়তা ধরে রেখে জনপ্রিয়তার সঙ্গে প্রকাশিত হচ্ছে। প্রকাশনায় কখনো ছেদ পড়েনি।

এভাবে একটি পত্রিকা সফলভাবে পরিচালনা করা চাট্টিখানি কথা নয়। পূর্বকোণকে শুধু আঞ্চলিকভাবে নয় জাতীয়ভাবে দেখতে চাই।

শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী  বলেন, একটি পত্রিকায় শুধু সংবাদ পরিবেশন নয়, পাশাপাশি যদি বিশ্লেষণধর্মী লেখা প্রকাশিত হয় এবং নানা বিষয়ের ওপর ফিচার প্রকাশিত হয় তাহলে সেই পত্রিকা দেশ ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। পূর্বকোণ সেটি ৩৭ বছর ধরে চেষ্টা করছে। আশা করবো- ভবিষ্যতের পথ চলাতে পূর্বকোণ সেই প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করবে।

ছোটবেলার স্মৃতি স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলায় কোনো পত্রিকার ছোটদের পাতায় যখন আমার লেখা ছাপা হতো কিংবা একটা কবিতা ছাপা হতো সেটি আমাকে কী রকম উদ্বেলিত করত এবং আমার কনফিডেন্স লেভেল কতটুকু বাড়িয়ে দিত সেটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমি মনে করি, ছোটদের পাতায় লেখার সুযোগ আমার জীবনগড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সেজন্য পাতাটা প্রতি সপ্তাহে না পারলেও পাক্ষিক হলেও বের হওয়া প্রয়োজন।

 এ সময় তিনি দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ চৌধুরী, তাঁর ছেলে স্থপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী এবং প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কেজি মোস্তফাকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

১৯৮৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিল দৈনিক পূর্বকোণ, যিনি ২০০৭ সালে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। সময়ের আবর্তে পূর্বকোণের হাল ধরেছিলেন তাঁর সন্তান স্থপতি তসলিমউদ্দিন চৌধুরী।

শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় পূর্বকোণ কর্তৃপক্ষ শ্রদ্ধার সঙ্গে মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী ও তসলিমউদ্দিন চৌধুরীকে স্মরণ করে ৩৮ বছরে প্রবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান চট্টগ্রামের রাজনীতিক, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সংস্কৃতিকর্মী, পাঠক-শুভানুধ্যায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলন অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।

শুরুতে দি পূর্বকোণ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ডা. ম. রমিজ উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, সুষ্ঠু সাংবাদিকতা আমার সবসময় পছন্দ। সুষ্ঠু সাংবাদিকতার প্রতীক হিসেবে পূর্বকোণের সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে পূর্বকোণও এগিয়ে যাবে।

তরুণ উদ্যোক্তা এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেডের চেয়ারম্যান সৈয়দ নাসির উদ্দিন বলেন, দৈনিক পূর্বকোণ করোনা মহামারির সময় এমন কিছু সংবাদ ছাপিয়েছে, যা জাতীয় পত্রিকাও করতে পারেনি।

এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর,  নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ আচার্য্য, সরকারি হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক মাইমুন উদ্দিন মামুন প্রমুখ পূর্বকোণকে শুভেচ্ছা জানান।

 এ সময় উপস্থিত ছিলেন পূর্বকোণের সিটি এডিটর বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী খান, চিফ রিপোর্টার সাইফুল আলম, সিনিয়র সাব এডিটর মোরশেদ আলম, হাসনাত মোর্শেদ, সিনিয়র রিপোর্টার মোহাম্মদ আলী, পূর্বকোণ লিমিটেডের জিএম মোজাম্মেল জিলানী, হিসাব বিভাগের প্রধান মো. মারুফ, মানবসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন শীল, সার্কুলেশন ম্যানেজার তাপস কুমার নন্দীসহ সংবাদিক-কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন দৈনিক পূর্বকোণের ইউনিট প্রধান মিরাজ উদ্দিন রায়হান।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পূর্বকোণ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামবাসীর ভালোবাসায় দৈনিক পূর্বকোণ এতদূর এগিয়ে এসেছে। আগামীতে পূর্বকোণ আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এ সাফল্য কারও একার হাত ধরে আসেনি, দৈনিক পূর্বকোণের সঙ্গে জড়িত সবার আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতায় এটি সম্ভব হয়েছে।

দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ডা. ম. রমিজউদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও বিশেষ থিম নিয়ে সাজানো হয়েছে পূর্বকোণের বর্ষপূর্তির বিশেষ সংখ্যা। চার মাস ধরে সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ থেকে বের হচ্ছে বিশেষ সংখ্যাগুলো।  

পূর্বকোণ সম্পাদক আরও বলেন, সরকারের চলমান উন্নয়নের ছোঁয়া শহর-নগর ছাড়াও গ্রাম-গঞ্জেও যাতে সমান্তরালে ছড়িয়ে পড়ে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে পূর্বকোণ। চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ঘুরে তুলে আনা হয়েছে এই জনপদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমস্যা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ। উন্নয়ন সমতায় যাতে সরকার ও প্রশাসন সঠিকভাবে নজর দিতে পারে, সেই চ্যালেঞ্জিং কাজটি করেছে পূর্বকোণ।

তিনি বলেন, পূর্বকোণ চট্টগ্রামের কথা বলে। দেশ ও মানুষের কথা বলে। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই এবার ‘দৃষ্টিজুড়ে চট্টগ্রাম’ শীর্ষক থিম বেইজড বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত করছে। এতে গ্রাম-বাংলার পথে-প্রান্তরের উন্নয়ন-উন্নয়নবঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে। আশা করছি, এই বিশেষ সংখ্যা পাঠক, লেখক-গবেষকদের নিরাশ করবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।