ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কুরআনের পাখিদের কলরব চট্টগ্রামে

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
কুরআনের পাখিদের কলরব চট্টগ্রামে

চট্টগ্রাম: ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো বসুন্ধরা গ্রুপের আয়োজনে হাফেজদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ এর চট্টগ্রাম জেলা অডিশন। অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে প্রথমে সেরা ৩০ জনকে দেওয়া হয় ইয়েস কার্ড।

এরপর নির্বাচন করা হয় সেরা ১০। সবশেষে বাছাই করা হয় সেরা ৩।
যারা অংশ নেবে জাতীয় প্রতিযোগিতায়।  

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে নগরের মুরাদপুরের এলজিইডি ভবনের নিচতলায় শুরু হয় রেজিস্ট্রেশন পর্ব। ছয়টি বুথে রেজিস্ট্রেশন করা হয় কুরআনের পাখিদের। নাম, পিতার নাম, মাদ্রাসার নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন হাফেজরা। এরপর ১০টা ৫ মিনিটে কামরুল ইসলাম সিদ্দিক মিলনায়তনে শুরু হয় অডিশন পর্ব। একসঙ্গে ছয়জন প্রতিযোগী এ পর্বে বিচারকদের সুললিত কণ্ঠে কুরআন শোনান।  

এ পর্বে বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন হাফেজ মাওলানা কারি আবুল কালাম, মো. কামাল উদ্দিন, আব্দুর রহিম, জহিরুল হক, সুলাইমান কাশিমী, মো. ইছহাক, সাজ্জাদুল ইসলাম, মো. আহমাদুল হক, এরশাদুল্লাহ তালুকদার, মছুদুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, মুসলেহ উদ্দিন ও জামাল উদ্দিন তাওহিদ।  

সেরা ৩০ পর্বে উত্তীর্ণদের নাম ঘোষণা করেন প্রতিযোগিতার বিচারক বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিউদ্দিন কাসেম।

বিকেলে চট্টগ্রাম অডিশনের চূড়ান্ত পর্বে বিচারক ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিববুল্লাহ বাকী আল নদভী ও শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিউদ্দিন কাসেম এবং গুলশান মসজিদের খতিব মরতুজা হাসান ফয়েজি। উপস্থাপনায় ছিলেন মাওলানা ইলিয়াস হাসান।

প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন দশ বছর বয়সী হাফেজ যুবাইরুল মোস্তফা মাহতাব। নগরের আগ্রাবাদের শান্তিবাগের আততাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার এ ছাত্র বাংলানিউজকে জানায়, বিচারকরা ১৯ পারার ৬ নম্বর পৃষ্ঠা এবং ২৩ পারার ১৩ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে তেলাওয়াত করতে বলেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, সহিহভাবে বলতে পেরেছে।

যুবাইরুলের গ্রামের বাড়ি চকরিয়ার কৈয়ারবিলে।  

রাকিবুল হাসানের বয়সও দশ বছর। হাটহাজারীর কাছারি রোডের শাহজালাল পাড়ার আল ইকরা তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার এ ছাত্র জানায়, দুই বছরে ৩০ পারা হেফজ করেছে। বিচারকেরা ৮ নম্বর পারার ১৭ নম্বর পৃষ্ঠা ও ২৯ নম্বর পারার ৫ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে তেলাওয়াত করতে বলেছেন। অডিশন ভালো হয়েছে।  

রাকিবুলের গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ির সমিতির হাট।  

  মো. সিফাত দারুল পাঁচলাইশের হিদায়া তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসার ছাত্র। ২ ভাই এক বোনের মধ্যে সে বড়। বাবা প্রাইভেট কারের চালক। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন।  

দশ বছর বয়সী সিফাত জানায়, ১৪ নম্বর পারার প্রথম পৃষ্ঠা ও ২৮ নম্বর পারার প্রথম পৃষ্ঠা থেকে বিচারকদের তেলাওয়াত শুনিয়েছে।  

প্রতিযোগিতার বিচারক বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিউদ্দিন কাসেম বাংলানিউজকে জানান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির আয়োজনে এ প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রাম থেকে প্রথমে ৩০ জন নির্বাচিত করা হয়। এরপর ১০ জনকে বাছাই করা হয়। ফাইনালি ৩ জন পেয়েছেন জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের কার্ড।  

তিনি জানান, ইতিমধ্যে সিলেট ও কুমিল্লার অডিশনে আমি গেছি। মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এ প্রতিযোগিতা। হাফেজদের জন্য দেশে এত বেশি পুরস্কার আর কখনো ছিল না। প্রথম পুরস্কার বিজয়ীর পরিবার, শিক্ষকসহ চারজন উমরার সুযোগ পাবেন। তাই প্রকৃত পুরস্কার ২০ লাখ টাকার বেশি। সম্প্রতি বসুন্ধরা গ্রুপ ১০৪ জন হাজিকে হজের সুযোগ করে দিয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিযোগিতার কারণে কুরআনের পাখিদের সহিহভাবে শেখার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে।

চট্টগ্রামের আগে সিলেট, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লায় অডিশন হয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী, রংপুর, ১৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা ও ফরিদপুর, ২০ ফেব্রুয়ারি বরিশাল, ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা (উত্তর) ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা (দক্ষিণ) এর অডিশন হবে।

প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার ১০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার ৭ লাখ, তৃতীয় পুরস্কার ৫ লাখ এবং চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার ২ লাখ টাকা করে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
এআর/এমআর/এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।