চট্টগ্রাম: আভিজাত্যের পাশাপাশি নিজেকে কিছুটা দৃষ্টিনন্দনভাবে উপস্থাপন করার জন্য অনেকেরই পছন্দের শীর্ষে থাকে জারদৌসি ও কারচুপি নকশার পোশাক। কাপড়ের ওপর কারচুপি ও জারদৌসি দুটো সম্পূর্ণই হাতের কাজ।
ঝাউতলা বিহারী পল্লী ঘুরে দেখা যায়, চতুর্ভূজ আককৃতির একটি কাঠের ফ্রেম। তাতে টানটান করে আটকানো রয়েছে কাপড়। এ কাপড়ের ওপর সুঁই-সুতা, স্প্রিং, চুমকি, পুঁথি, কুন্দন ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে ফুল, পাখি, লতাপাতা সহ বিভিন্ন ধরনের নকশা। তুলে আনছেন ঐতিহ্য। আর কাজে আছে বৈচিত্র্যের ছাপ। এখানকার বাহারি নকশার পোশাক চলে যায় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শপিংমল ও শোরুমে।
জারদৌসি কারচুপির কারিগর ওয়াহিদ জানান, ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে মজুরি নেওয়া হয়। কম দামি কাজগুলো তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। বেশি দামি কাজগুলো জটিল বলে ডেলিভারি দিতে সময় লাগে।
প্রতিটি থ্রিপিসের জন্য মজুরি নেন তিন হাজার টাকা করে। এছাড়া শাড়ি ১০ হাজার টাকা, লেহেঙ্গা ২০ হাজার টাকা। সবচেয়ে কম মজুরিতে পাঞ্জাবির কাজ করেন ৫০০ টাকায়। ডিজাইন ভেদে এসব কাজ করতে ১-৭ দিন সময় লাগে।
তিনি আরও জানান, ঈদের আগেই এ পল্লীতে বেড়ে যায় ব্যস্ততা। অর্ডার এসব কাজ গ্রাহকদের বুঝিয়ে দিতে হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ভোর পর্যন্ত কাজ করেন কারিগররা। ঈদে মেয়েদের সেলোয়ার কামিজ আর লেহেঙ্গার অর্ডারই বেশি।
তবে কারিগর জানান, বিহারিপল্লীতে হাতের কাজের মান ভালো হলেও এখন বিদেশি মেশিনে তৈরি পোশাকেই দিকে ঝুঁকছেন। তাই দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে এখানকার বাজার। ভারত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন আরব দেশগুলোতে এ কাজের প্রচুর চাহিদা। বিশেষ করে বোরকা ও আবায়ার চাহিদা ব্যাপক। কিন্তু সবকিছুর দাম বাড়চ্ছে, যার কারণে লাভের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই অনেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন এ কাজে। আগে এখানে প্রায় দু’শ কারখানা থাকলেও এখন ঠিকে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি। সরকার এ শিল্লের প্রতি নজর দিলে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও সম্ভব বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০
পিডি/টিসি