ঢাকা, সোমবার, ১৭ চৈত্র ১৪৩১, ৩১ মার্চ ২০২৫, ০০ শাওয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আগে দেশ সংস্কার হোক, তারপর নির্বাচন: শহীদ উমরের মা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
আগে দেশ সংস্কার হোক, তারপর নির্বাচন: শহীদ উমরের মা

চট্টগ্রাম: জুলাই বিপ্লবে শহীদ উমরের মা রুবি আকতার বলেছেন, গত ৫ আগস্ট আমার ছেলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টিকে অনুরোধ জানাবো, আমি সবসময় সততার মধ্যে চলতে চাই, বাঁচতে চাই।

আপনারাও ছাত্র। আপনারা সততা বজায় রেখে দেশ চালানোর জন্য এগিয়ে যাবেন এটি আমার অনুরোধ।
ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই, আগে দেশ সংস্কার হোক তারপর নির্বাচন। আমাদের ছেলেদের হত্যার এখনো বিচার হয়নি। আমি সব খুনির বিচার দাবি জানাচ্ছি। স্বৈরাচার আমাদের হীরের টুকরোদের শেষ করে দিয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, আল্লাহ নারাজ হলে কেউ কোনো দিন ক্ষমতা রাখতে পারে না। আল্লাহ ওই স্বৈরাচারের ওপর নারাজ ছিল। আমরাও নারাজ। আর কোনো স্বৈরাচার যেন এদেশে আসতে না পারে। কোনো বৈষম্য যেন এদেশে আর না হয়। বৈষম্য দূর করতেই আমার ছেলেরা রাজপথে নেমেছিল, শহীদ হয়েছিল। সবার কাছে অনুরোধ, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, অ্যাকটিভিটি নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মতো দেশে যোগ্য নেতৃত্ব আসতে হবে। যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) জিইসি মোড়ের একটি রেস্টুরেন্টে জুলাইয়ের শহীদ পরিবার, লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গুণীজনদের সম্মানে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য নীলা আফরোজের সঞ্চালনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, এনসিপি নতুন পলিটিক্যাল কালচারকে ধারণ করতে পারবে। এনসিপি নারীদের সামনে নিয়ে এসেছে যেটা নয়া রাজনীতির বন্দোবস্তেরই অংশ। এনসিপি নারীদের ইনক্লুসিভিটি নিয়ে কাজ করছে।

তিনি বলেন, চার্জশিট থেকে অনেক অপরাধীর নাম বাদ পড়ছে। এসব নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে।

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমদুর রহমানের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে তার বিচারের দাবি জানিয়ে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার আবাসিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি বলেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব স্বৈরাচারের দোসর মুক্ত করতে ছাত্রদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণ অঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জোবাইরুল হাসান আরিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কার কাঠামোর যে পরিবর্তন তার বিরোধিতা করার অর্থই ফ্যাসিবাদ কাঠামোকে টিকিয়ে রাখা। দেশের মানুষ বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভুলভাবে বোঝাপড়া করার চেষ্টা করলে তা কখনো মেনে নেবে না। রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য আবার যদি প্রাণ দিতে হয় তাহলে আমরা আবার রাস্তায় নেমে আসব। তবুও সংস্কার এনেই ছাড়ব।

এনসিপি দক্ষিণ অঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ বলেন, গণহত্যার সাথে জড়িতদের ঠিকঠাক ভাবে বিচার না করলে রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার কায়েম হবে না। একাত্তর পরবর্তী সময়ে আমরা যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নটাকে ঠিকঠাকভাবে মোকাবেলা করতে না পারায় ১৪তে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হয়।  

তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, যদি ২৪ এর আওয়ামী লীগের বিচার আমরা করতে না পারি, নিকট ভবিষ্যতে আরও একটা গণজাগরণ মঞ্চ হবে না তার নিশ্চয়তা কি? আওয়ামী বিচার না করা মানে রাষ্ট্রে নৈরাজ্য পরিস্থিতি জিইয়ে রাখা। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্যে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে।

বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠক মোহাম্মদ এরফানুল হক, রাফসান জামী, সমাজসেবক ইফাত ইবরাহিম, শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সদস্য আমির হোসেন আতিক।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
এআর/ টিসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।