ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় একজনের জবানবন্দি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৫
চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় একজনের জবানবন্দি গ্রেপ্তার সজিব

চট্টগ্রাম: নগরের চকবাজার থানার বাকলিয়া এক্সেস রোড চন্দনপুরা অংশে প্রাইভেটকারে গুলি করে জোড়া খুনের মামলায় মো. সজিব (২৯) নামে একজন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।  

সোমবার (৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফার আদালতে এই জবানবন্দি দেন।

এর আগে রোববার (৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নগরের সদরঘাট এলাকা থেকে মো. সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মো. সজিব (২৯), ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউপির মধ্য কাঞ্চননগর এলাকার মো. সেলিম উদ্দীনের ছেলে।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে বিশ্লেষণ করে গুলি চালানো কয়েকজনকে শনাক্ত করেছি। ঘটনায় সরাসরি জড়িত মো. সজিবকে রোববার দিবাগত রাতে সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সজিবের শনাক্ত মতে জোড়া খুনে ব্যবহৃত লাল-কালো রংয়ের একটি মোটরসাইকেল ফটিকছড়ি থানার কাঞ্চন নগর রাজা রাস্তার মাথা এলাকা থেকে জব্দ করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, সজিব জোড়া খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সোমবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।

এর আগে গত ৩ এপ্রিল ভোরে নগরের বহদ্দারহাট এলাকা থেকে বেলাল এবং  ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৬ এপ্রিল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার এর আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোট ১৩ জন সন্ত্রাসী ৬টি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এই পরিকল্পিত হামলা চালায়। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বোয়াজিদ বোস্তামি এলাকার তালিকাভুক্ত অপরাধী সরওয়ার হোসেন বাবলা, যিনি শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে যান। এ হামলার পেছনে দুটি উদ্দেশ্য ছিল- বায়েজিদ বোস্তামি ও আশপাশের এলাকার অপরাধীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ নেওয়া।  

নগরের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খান প্রকাশ শিবির সাজ্জাদ বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। হামলাকারীরা তিন কিলোমিটার জুড়ে ধাওয়া করে এই ঘটনা ঘটায়।

গত ১ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাকলিয়া থানায় খুনের স্বীকার বখতেয়ার উদ্দিন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে কারাবন্দী শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে  মামলা করেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না (৩৭), মোহাম্মদ হাছান (৩৬), মোবারক হোসেন ইমন (২২), খোরশেদ (৪৫), রায়হান (৩৫) ও বোরহান (২৭)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর পরিকল্পনা অনুসারে আসামিরা গুলি করে মানিকসহ দুইজনকে হত্যা করেছে। ছোট সাজ্জাদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা থেকে সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, রোববার (৩০ মার্চ) গভীর রাতে বাকলিয়া থানার রাজাখালী এলাকা থেকে একাধিক মোটরসাইকেলে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রাইভেটকারকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। প্রাইভেটকারটি বাকলিয়া এক্সেস রোড দিয়ে প্রবেশ করে চকবাজারের চন্দনপুরায় পৌঁছানোর পর থেমে যায়। তখন বেপরোয়াভাবে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। এতে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হন। নিহতরা হলেন- বখতেয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ। আহতরা হলেন- রবিন ও হৃদয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৫
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।