ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শ্রীমাই খালে বসছে হাইড্রোলিক ড্যাম

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৫
শ্রীমাই খালে বসছে হাইড্রোলিক ড্যাম ...

চট্টগ্রাম: পটিয়ার শ্রীমাই খালে নির্মাণ করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির হাইড্রোলিক অ্যালিভেটর ড্যাম। পাশাপাশি খালের দুই তীরের ভাঙন রোধে ৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার এলাকায় ব্লক দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁধ।

 

সব মিলিয়ে এ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা। এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ১ হাজার ১০৮ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাবেন কৃষকরা।

জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন প্রকল্পটি দুটি ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে খালের দুই তীরের ভাঙন রোধে ব্লক দিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ এবং দ্বিতীয় ধাপে হাইদগাঁও ইউনিয়নে খালের মুখে হাইড্রোলিক অ্যালিভেটর ড্যাম নির্মাণ হবে। এরই মধ্যে প্রায় ৪.৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দুই তীরের ভাঙন রোধে ব্লক বাঁধ নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, চলছে ৮৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ড্যাম নির্মাণকাজ। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের জুনে এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

হাইড্রোলিক ড্যাম নির্মাণ হলে পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও, কেলিশহর, কচুয়াই ইউনিয়ন এবং পটিয়া পৌরসভার ১ হাজার ১০৮ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যাবে। ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৩৭ কোটি লিটার পানি ধারণ করতে পারবে, যা দিয়ে সেচ সুবিধা পাবে এসব অঞ্চলের কৃষক।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) এর সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেচ সুবিধা বৃদ্ধির ফলে প্রতি বছর প্রায় ১৬ হাজার ৬৭৫ টন খাদ্যশস্যের ফলন বৃদ্ধি পাবে প্রকল্প এলাকার আশপাশে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩৮ কোটি টাকা। এছাড়া ড্যামের আপস্ট্রিমে পন্ডিং অ্যাফেক্ট এর ফলে প্রতি বছর মাছ উৎপাদন হবে প্রায় ২২ মেট্রিক টন।

চীনের উদ্ভাবিত হাইড্রোলিক অ্যালিভেটর ড্যাম (এইচইডি) প্রযুক্তিটি পানিসম্পদ উন্নয়নে একটি স্মার্ট প্রকল্প- বলছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা। যাতে প্রোগ্রামেবল লগিং কন্ট্রোলার (পিএলসি) প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ সম্ভব হবে। সরকারের এ পাইলট প্রকল্পটিতে রয়েছে ইনোভেটিভ টেকনোলজি ট্রান্সফারের সুযোগ। হাইড্রোলিক অ্যালিভেটেড ড্যামের গেইটসমূহ ডিজিটালি অপারেট করার পাশাপাশি ম্যানুয়ালি অপারেট করার সুযোগ থাকবে।  

প্রচলিত রাবার ড্যাম, ওয়ের এবং রেগুলেটরের বিকল্প হিসেবে হাইড্রোলিক অ্যালিভেটেড ড্যাম একটি আধুনিক এবং অর্থ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি। হাইড্রোলিক অ্যালিভেটেড ড্যাম অপারেশন আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি সম্বলিত অটোমেটিক অপারেটেবল হওয়ায় এটির অপারেশন কার্যক্রমে জনবলও লাগবে খুবই কম।

প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আনিস হায়দার খান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের ডিপিপি অনুযায়ী ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। সময় ধরা হয়েছে ২০২৬ সালের জুন মাসে। এরই মধ্যে পুরো প্রকল্পের ৩০ শতাংশ ভৌত অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ হবে। তবে ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও শতকোটি টাকার মধ্যে এ প্রকল্প শেষ করা সম্ভব হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে শুধু আশপাশের এলাকার কৃষি খাতের উন্নয়ন হবে তা নয়, প্রকল্প এলাকায় হাইড্রোলিক ড্যাম কেন্দ্রিক ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৫
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।