ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়: মেয়র শাহাদাত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৫
আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়: মেয়র শাহাদাত কথা বলছেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। 

চট্টগ্রাম: আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়—এই অঙ্গীকারে সবাই মিলে একটি নিরাপদ ও সবুজ শহর গড়তে একযোগে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।  

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেবা সংস্থার সঙ্গে সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ অঙ্গীকার জানান।

 

মেয়র বলেন, নগরের নালা ও খালগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও ম্যানহোলের ঢাকনা নেই, কোথাও স্ল্যাব মিসিং—এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে।

চসিকের ছয়টি জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী ও আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ওয়ার্ডে কোথায় কোথায় সমস্যাগুলো রয়েছে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড, বন্দর কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। যদিও কিছু জায়গা সরাসরি কোনো সংস্থার আওতায় পড়ে না, তবুও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেগুলোতে কাজ করতে হবে। যেমন আগ্রাবাদের বক্স কালভার্টে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করেছি কাজ করার জন্য।

মেয়র ফায়ার সার্ভিস ও সিএমপির প্রশংসা করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সিএমপি যেভাবে অবৈধ অটোরিকশা জব্দ করেছে, তা প্রশংসনীয়। এই অটোরিকশাগুলোই অনেক দুর্ঘটনার কারণ। ফায়ার সার্ভিসও সম্প্রতি দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হয়ে উদ্ধার তৎপরতায় ভূমিকা রেখেছে। দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চসিক সচিবকে, সদস্য করা হয়েছে প্রধান আইন কর্মকর্তা, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে এবং সদস্যসচিব প্রধান প্রকৌশলী। সাত দিনের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবেন।

মেয়র বলেন, নগরবাসীর অভিযোগ ও পরামর্শ সহজেই গ্রহণের জন্য ‘আমাদের চট্টগ্রাম’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ অ্যাপে যে কেউ নালা-নর্দমা, ম্যানহোল ঢাকনা, ডাস্টবিন বা খালের সমস্যাসংক্রান্ত ছবি আপলোড করে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে আমরা নাগরিক সেবাকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করে তুলতে চাই।

পাহাড় কাটা ও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। ইতোমধ্যে পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্ষার আগে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী পরিবারগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করতে হবে।

তিনি জানান, নগরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে পাওয়ার চায়নার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্ভাব্য অংশীদারত্ব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান ২১টি খাল পুনঃখনন ও সংস্কারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে যে, সিটি করপোরেশন অনুমোদন দিলে এবং অর্থায়ন নিশ্চিত করা হলে তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে সরাসরি খাল সংস্কারের কাজ শুরু করতে প্রস্তুত। বর্ষাকাল আসন্ন হওয়ায় বর্তমানে খাল সংস্কারের মতো সময়সাপেক্ষ কাজ নয়, বরং জরুরিভিত্তিতে খাল ও ড্রেন পরিষ্কারের কাজে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এটি একটি মাধ্যমিক স্তরের প্রকল্প হিসেবে বর্ষাকালের পরে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাখা হয়েছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে চসিকের কর্মকর্তারা, মেয়রের জলাবদ্ধতাবিষয়ক উপদেষ্টা শাহরিয়ার খালেদসহ সিডিএ, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড, মেট্রোপলিটন পুলিশ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, বন্দর, পরিবেশ অধিদপ্তর, পানির উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধি।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৫ 
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।