ঢাকা, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিলবোর্ড উচ্ছেদ নিয়ে অসহায় সিএমপি কমিশনার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৪
বিলবোর্ড উচ্ছেদ নিয়ে অসহায় সিএমপি কমিশনার ছবি: সোহেল সরওয়ার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: নগরীতে অবৈধভাবে বিলবোর্ড স্থাপনকারীদের ‘বিলবোর্ড সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তা উচ্ছেদে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন নগর পুলিশ কমিশনার মো.আব্দুল জলিল মন্ডল।

সোমবার বাকলিয়া থানার ওপেন হাউজ ডে কর্মসূচীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ্যে জানান।



নগর পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা বিলবোর্ড সন্ত্রাসীদের সেভাবে সরাতে পারছিনা। প্রতিদিন বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানের জন্য খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
এত টাকা আমি কোথায় পাব ? এজন্য আমরা পারছিনা।

তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনও আমাকে বলেছে একেকটি বিলবোর্ড উচ্ছেদে কি পরিমাণ খরচ হয়। আম‍ার পক্ষে যদি বিলবোর্ডগুলো ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়া সম্ভব হত আমি তা-ই করতাম। সুতরাং যার কাজ তাকেই করতে হবে।

চট্টগ্রাম নগরীতে বিলবোর্ড স্থাপন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা আছে। বড় বড় বিলবোর্ড স্তাপন করে পাহাড়ঘেরা বন্দরনগরীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঢেকে ফেলার অভিযোগ আছে।

মাসখানেক আগে চট্টগ্রাম সফরে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যত্রতত্র বিলবোর্ড নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মন্ত্রী এজন্য সিটি কর্পোরেশনকেও দায়ি করেন।

নগরীতে বিলবোর্ড ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। নগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং যুবদলের অনেক নেতাও এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মূলত তাদের রাজনৈতিক দাপটের কাছে অসহায় সিটি কর্পোরেশন অতীতে বারবার উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েও পরে পিছিয়ে গেছে।

এ অবস্থায় কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর বিলবোর্ড উচ্ছেদে এগিয়ে আসেন আব্দুল জলিল মন্ডল। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ৪২২টি অবৈধ বিলবোর্ডের একটি তালিকা নগর পুলিশকে দেয়া হয়।

ওই তালিকা ধরে গত ১৬ নভেম্বর থেকে বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে নামে নগর পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশন। শুরুতেই নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিলবোর্ড বাধার মুখেও উপড়ে ফেলে নগর পুলিশ যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছে, আবার এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আরশাদুল আলম বাচ্চুর বিলবোর্ড উচ্ছেদ করতে না পেরে সমালোচনাও কুড়িয়েছে।

তবে টানা অভিযানে প্রায় শ’খানেক বিলবোর্ড উচ্ছেদের পর ধীরে ধীরে অভিযান কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়ছে। আর অভিযান নিয়ে অসহায়ত্বের কথাও শোনা গেল পুলিশ কমিশনারের মুখে।

ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে সিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা পারি আর না-ই পারি, যারা অবৈধভাবে বিলবোর্ড স্থাপন করছেন, যারা চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ঢেকে দিচ্ছেন তাদের কথা কিন্তু জনগণ জেনে গেছে।

তিনি বলেন, বিলবোর্ড উচ্ছেদে হয়ত টাকা লাগছে। কিন্তু ঝাড়ু দিতে তো আমার টাকা লাগছেনা। আমি ঝাড়ু হাতে নিয়েই রাস্তায় থাকব।

নগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) কামরুল আমিনের সভাপতিত্বে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন, অর্থ ও ট্রাফিক) একেএম শহীদুর রহমান, বাকলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক শোয়াইব রিয়াদ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইয়াছিন চৌধুরী আছু ও মোহাম্মদ তৈয়ব, সাবেক কাউন্সিলর শহীদুল আলম।

অনুষ্ঠানে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মনজুর মোর্শেদ এবং সহকারি কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো.আব্দুর রউফও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮,২০১৪

** চট্টগ্রামে অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ শুরু
** বিলবোর্ড জাপটে ধরেছে মসজিদের মিনার
** বাচ্চুর বিলবোর্ড বলে কথা!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।