চট্টগ্রাম: শৃঙ্খল মুক্তির দিন মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢল নেমেছে সর্বস্তরের মানুষের। স্বাধীনতার জন্য জীবনদানকারী বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে মানুষে ছুটেছে শহীদ মিনারের পানে।
কারও হাতে ব্যানার, কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কেউ নিয়েছেন পুষ্পস্তবক, কেউ বুকের কাছে ধরে রাখা একটি মাত্র গোলাপ। আবার কেউ নিয়েছেন স্বাধীন বাংলার লাল সবুজ পতাকা।
বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে সোমবার রাত ১২টা ০১ মিনিটে শুরু হয় শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। নগর পুলিশের একটি চৌকস দল এএসআই ফরিদের নেতৃত্বে সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর মূল আয়োজন সঞ্চালনা করেন।
শুরুতে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম মনজুর আলমের নেতৃত্বে কাউন্সিলররা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
মেয়রের পর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো.আবদুল্লাহ, সিএমপি কমিশনার মোহা.আব্দুল জলিল মন্ডল এবং অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার ও একেএম শহীদুর রহমান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো.শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ফুল দিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান।
![](files/December_2014/December_16/ctg_1_banglanews24_673131446.jpg)
এরপর সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে ফুল দেন। অন্যদিকে সভাপতি আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্বে নগর বিএনপি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, সিডিএ চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালাম এবং জেলা পুলিশ, রেল পুলিশ ও আনসারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার জানানো হয়।
জেলা ইউনিটের কমাণ্ডার মো.সাহাবউদ্দিন ও গেরিলা কমাণ্ডার শাহআলমের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড, বন বিভাগ, বিআইডব্লিউটিসিসহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পুস্পস্তবক দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এরপর শহীদ মিনার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলে মানুষের বাঁধভাঙ্গা জোয়ার নামে।
সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের নেতৃত্বে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ, আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদের নেতৃত্বে নগর যুবলীগ, চবি শিক্ষক ওমর ফারুক রাসেলের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড, মহানগর শাখা, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী এটলির নেতৃত্বে নগর শ্রমিক লীগ, নগর ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, ওয়ার্কার্স পার্টি, জেলা আইনজীবী সমিতি, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়সহ শতাধিক রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
পুস্পস্তবক অর্পণের পুরোটা সময়ই শহীদ মিনারে আসা বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী, সাধারণ মানুষ শ্লোগানে শ্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে রাখে। অধিকাংশ মানুষ এসময় যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চেয়ে শ্লোগান দেন।
এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে নগর পুলিশ। বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, শহীদ মিনার ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফোর্স মোতায়েন আছে। সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময়ও একই নিরাপত্তা বলয় থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৪