ঢাকা, সোমবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শহীদ মিনারে রঙিন শৈশব

এস.বি. টুপসি, স্টাফ করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৪
শহীদ মিনারে রঙিন শৈশব ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: কেউ হাতে বেঁধেছেন লাল সবুজের জাতীয় পতাকা, কেউ কপালে। কারও হাতে ব্যানার বা মানচিত্র আঁকা পুষ্পার্ঘ।

বাবার হাত ধরে এসেছে ছোট্ট শিশু, ভাইয়ের হাত ধরে বোন। শিশু- কিশোর, তরুণ-যুবা থেকে শুরু করে ষাট বছরের বৃদ্ধরা এসেছেন এখানে।


তারা শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন যাদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছে লাল সবুজের পতাকা আর বাংলাদেশিরা পেয়েছেন মুক্তির স্বাদ। সব বয়সের লোকজন তাই শহীদ বেদীতে পরম শ্রদ্ধায় দিচ্ছেন একমুঠো গোলাপ।

এই চিত্র চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিজয়ের সকালে হাজারো জনতার ভিড় নামে এইখানে।

‘এটাই হল শহীদ মিনার, বলেছিলাম না? এখানেই স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের মহানায়কদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। ’ ৪ বছরের শিশু শিহামকে শহীদ মিনার চেনাচ্ছিল তার মা।

মুক্তিযুদ্ধের গভীরতা হয়তো বুঝবেনা শিহাম, কিন্তু তার স্মৃতিতে রইবে হাজারো মানুষের সাথে শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়ার আনন্দ। একদিন তারা জানবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহান মুক্তিযুদ্ধ বিজয় দিবসে হাজারো জনতার কাতারে ছোট্ট হাতে ফুল নিয়ে শিহামের মতো অসংখ্য শিশুকে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন।

কেউ এসেছে মা বাবার হাত ধরে, কেউ এসেছে স্কুলের শিক্ষক অথবা কোন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে। ছোট্ট হাতে জাতীয় পতাকা আর একগুচ্ছ গোলাপ কিংবা গ্ল্যাডিওলাস। লাল-সবুজ জামা পরে শিশুরা এগিয়ে যায় শহীদ মিনারের দিকে।

ডিসেম্বরের কনকনে শীতের সকালে শহীদ মিনারে আসা শিশুদের মুখে এতটুকু বিরক্তি দেখা যায়নি।

খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী শহীদ মিনারে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাতে আসে। এ সংগঠনের সাথে ছিল হাসান, নীল, ছোটন নামের দ্বিতীয় শ্রেনী পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থী। তারা প্রতিবছর খেলাঘরের সাথে শহীদ মিনারে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ জানায়।

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে কি হয়েছিল জানতে চাইলে হাসানের উত্তর, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। যুদ্ধে অনেক মুক্তিযোদ্ধা মারা গিয়েছিলেন, তাদের শ্রদ্ধা জানাতে আমরা শহীদ মিনারে এসেছি।

আইনান, জারিফা, জায়ান তিন সহোদর শহীদ মিনার আসে তাদের মামার হাত ধরে। সাথে তাদের নাম লেখা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে সুন্দর একটি পুষ্পাঞ্জলি।

তারা জানান, মামার কাছে সবসময় মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেন। মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে তারা শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসেছে।

স্কুলে পড়ুয়া শিশু থেকে হাঁটতে শেখা এমনকি কোলের শিশু নিয়েও শহীদ মিনারে আসতে দেখা গেছে অনেককে। শিশুদের কপোলে আঁকিয়েছে জাতীয় পতাকা কিংবা একটুকরো বাংলাদেশের মানচিত্র।

বাংলাদেশ সময়:১৭০৭ ঘন্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।