ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ জুন ২০২৪, ১৭ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তেলবাহী ট্যাঙ্কারডুবি

সুন্দরবনে ৫০ বছর পর্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব থাকবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৪
সুন্দরবনে ৫০ বছর পর্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব থাকবে ছবি: রাশেদ/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সুন্দরবনে ট্যাংকার ডুবে জীববৈচিত্র্য যেভাবে ধ্বংস হয়েছে, এর ক্ষতিকর প্রভাব আগামী ৫০ বছর পর্যন্ত থাকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে (ডিসেম্বর ১৮) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত তেল দুর্যোগগ্রস্ত সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থার সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ‘শ্যালা নদীতে তেল ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনা: বিপর্যস্ত সুন্দরবনের পরিবেশ, বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদীরা এ তথ্য তুলে ধরেন।



এ ধরনের ঘটনার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে জাপানের একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন জানান, এ ধরনের ঘটনার পর ১৫ দিনের মধ্যে ওই এলাকার পাখি, কচ্ছপ ও কাঁকড়া মারা যাবে। এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে মাঝারি ধরনের গাছপালা মরতে শুরু করবে।
১০ বছর পর নতুন করে গাছ জন্মাবে। তবে এসব গাছের উৎপাদন ক্ষমতা কম থাকবে। আর আগামী ৫০ বছর পর্যন্ত এর ক্ষতিকর প্রভাব থাকবে।

তিনি অভিযোগ করেন, ট্যাঙ্কার ডুবে যাওয়ার দুইদিন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে বিস্তীর্ণ এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়লেও তা উত্তোলনে বিজ্ঞানসম্মত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার।

তিনি বলেন, এখনো সুন্দরবনের গাছে তেল লেগে আছে। আর যে সব স্থানের গাছে তেল লেগে আছে, সে সব স্থানের গাছ কেটে ফেলে মাটির ভেতরে পুঁতে ফেলছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
bapa_banglanews24_1
আব্দুল মতিন বলেন, এ ধরনের দুর্যোগে সরকার নিজস্ব বাহিনীকে কাজে না লাগিয়ে স্থানীয়দের দিয়ে তেল তোলায়। এতে করে স্থানীয়রা ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন।

বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, সুন্দরবন নিয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্য অবান্তর।

তিনি বলেন, ঘটনার পর ক্ষতিপূরণ চেয়ে জাহাজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা জাহাজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে না করে নৌপরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে করা উচিত।

সুন্দরবন রক্ষায় বিদেশি বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতা করতে চাইলেও সরকার কোনো গুরুত্ব দেয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সুন্দরবন রক্ষায় বাপার সুপারিশ:
সুন্দরবন রক্ষায় অবিলম্বে সুন্দরবন ও ট্যাঙ্কার ডুবির আশেপাশের এলাকাকে ‘জরুরি দুর্যোগপূর্ণ এলাকা’ ঘোষণা করতে হবে; স্বাস্থ্য-ঝুঁকিপূর্ণ তেল অপসারণ কাজে সংগঠিত রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করতে হবে; বন ও পরিবেশবান্ধব দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ পরিবেশবাদী সংগঠন ও স্থানীয়দের নিয়ে সঠিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তেল ছড়ানো বন্ধ  এবং তা অপসারণে পদক্ষেপ নিতে হবে; শ্যালা নদীর নৌপথ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে; একই ধরনের দুর্ঘটনা সম্ভবনাপূর্ণ সব প্রকল্প বাতিল করতে হবে; বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীদের সমন্বয়ে ‘সুন্দরবন ব্যবহার বিধি’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।